কলকাতাতেই রয়েছে জীবন্ত কালী মন্দির !

কলকাতার এক মাত্র জীবন্ত মা কালীর মন্দির! যেখানে এখনও সন্ধ্যে হলেই, হেঁটে বেড়ান স্বয়ং মা কালী, নিশি রাতে শোনা যায়, নূপুরের শব্দ

কলকাতার এক মাত্র
জীবন্ত মা কালীর মন্দির!

যেখানে এখনও সন্ধ্যে হলেই,
হেঁটে বেড়ান স্বয়ং মা কালী!

নিশি রাতে শোনা যায়,
নুপুরের শব্দ!

অমবস্যায় মূর্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন,
জ্যান্ত কালী ঠাকুর!

এই মন্দিরে আর যা যা ঘটে,
জানলে থ হয়ে যাবেন

 

কলকাতার অলিগলিতে স্বয়ং মা কালী হেঁটে বেড়াচ্ছেন । শুনতে অবিশ্বাস্য লাগছে তাই না! তবে এটাই সত্যি! আমাদের তিলোত্তমা নগরীতেই আছে এমনই এক জীবন্ত মা কালী মন্দির। তিনি কোন মূর্তি প্রতিমা নন ! এই মূর্তির মধ্যেই মা কালীর প্রাণ রয়েছে। এখানকার মা কালী যে জীবন্ত সেই প্রমাণ বার বার পাওয়া গিয়েছে। নুপুরের ঝঙ্কার তুলে কলকাতার আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ান এই জীবন্ত কালী ঠাকুর। রাতের অন্ধকার হলে লাল পাড় সাদা শাড়ি পড়ে হেঁটে বেড়ান মন্দির চত্বরে । শুধু তাই নয় মন্দির থেকে ভেসে আসে মায়ের নিঃশ্বাসের শব্দ। এই মন্দিরে মা কালীর বিগ্রহ দেখলে আপনার মনে জাগবে অপার ভক্তি। মায়ের ভুবন ভোলানো হাসি দেখে আপনার সমস্ত দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যাবে।

উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটেই অবস্থিত এই জাগ্রত কালীর মন্দির । আপনাদের যে জীবন্ত কালীর কথা বলছি সেই  জীবন্ত কালীর নাম শ্যামাসুন্দরী। দূর- দুরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই জীবন্ত  কালী ঠাকুর দেখার জন্য। তবে শ্যামাসুন্দরী মায়ের পুজোয় বিশেষ কিছু লাগে না। তিনি  অল্পতেই সন্তুষ্ট ! ভক্তদের পবিত্র মনবাসনা, ভক্তের কাতর আর্তি পুজোর জন্য যথেষ্ট। কথিত আছে শ্যামাসুন্দরী মাকে আতপ চাল কলা দিয়ে পুজো করলে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন। এই মন্দিরে এসে যে মানতই করবেন, সেই মানতই পূরণ হবে। এই জীবন্ত মা কালীর পুজো  নিয়ে রয়েছে এক বিশেষ লোককাহিনী । যা শুনলে আপনার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে! সে অনেক আগের কথা। শোনা যায়, অমাবস্যার দিন শ্যামাসুন্দরী মন্দিরের পুরোহিত পুজোর জন্য বাজার করতে যান। আর সেই সময় বছর পাঁচেকের শ্যামবর্ণের একটি মেয়ে তার কাছে আসেন। মেয়েটি পূজারীকে জানায় সে অভুক্ত। পুরোহিতের কাছ থেকে কাতর অনুরোধ করে,  তাকে যেন দুটো খাবার দেয় । কিন্তু সেদিন অমাবস্যায় থাকায় পুরোহিত মশাই কাজে ব্যস্ত ছিলেন । তাই তিনি বিব্রত হয়ে মেয়েটিকে ধমক দিয়ে বসেন। আর বলেন তাকে কাজ করে খেতে। মেয়েটিও তাই শুনে চলে যায়। আর সেদিনই পুজারির সাথে নানারকমের মহাজাগতিক অলৌকিক ঘটনা ঘটে। এই মন্দিরে বিশেষ এক রীতি আছে যখনই মায়ের আরতি করা হয় তখনই গোটা মন্দির অন্ধকার করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র কালী পুজোর দিন অন্ধকার রাখা হয় না। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও একই ভাবে আরতি শুরু করেন। অন্ধকারের মধ্যেই আরতি করছিলেন তিনি। তবে হঠাৎ পুরোহিত মশাই দেখতে পান শিব ঠাকুর  থাকলেও মা নেই । প্রথমে তিনি নিজের মনের ভ্রম বলে মনে করেন । তাই ঘিয়ের প্রদীপ নিয়ে ভালো করে মায়ের মূর্তি দেখার চেষ্টা করেন। কিন্তু দেখেন শুধু শিব শায়িত আছেন……… এখানে মা কালীর কোন অস্তিত্বই নেই । এই অলৌকিক ঘটনা দেখে তাঁর গা ছমছম করে ওঠে। সকাল থেকে তিনি দেখে আসছেন মা এখানে আছেন , কিন্তু হঠাৎ দেখতে না পেয়ে তিনি ভয় পেয়ে যান। আর ঠিক সেই সময় হঠাৎ তিনি উপলব্ধি করেন পিছন থেকে কেউ যেন নুপুর পড়ে আসছে। আর দেখেন সকালের সেই শ্যামবর্ণা মেয়েটি তার সামনে আবারও ধরা দিয়েছে।  শোনা যায়  , সেদিন নাকি পুরোহিতের কাছে ফের চলা,কলা খেতে এসেছিলেন মা শ্যামসুন্দরী। আর পূজারীকে মা নিজের মুখে বলেছিলেন, তিনি চাল কলা খাবেন। সেই থেকেই আজও সকলে মাকে তুষ্ট করার জন্য আতপ চাল এবং কলা ভোগ হিসেবে অর্পণ করেন।

এত গেল শুধু পৌরাণিক কাহিনী , আপনাদের জানাই আরও অলৌকিক কাহিনীর কথা । শোনা যায় প্রতি অমাবস্যায় এই মন্দিরে নুপুরের আওয়াজ পাওয়া যায়। এমনকি মা নিজেই এই মন্দিরের রক্ষনাবেক্ষন করেন । রাতের অন্ধকারে তিনি নাকি নিজের চোখ দিয়ে এই মন্দিরের পর্যবেক্ষণ করেন । এমনকি মা নিজের পুজোয় খামতি দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই তা বুঝিয়ে দেন। আর মায়ের উপর বিশ্বাস করে নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্তরা ছুটে আসে এখানে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *