মা কালীর বুকে পা দিয়ে পুজো হয় বাংলার এই মন্দিরে! মধ্যরাতে চোখ খোলেন এই মন্দিরের কালী ঠাকুর

মা কালীর বুকে পা দিয়ে
পুজো হয় বাংলার এই মন্দিরে!

নেচে নেচে কেঁদে কেঁদে পুরোহিতের
পুজো পান এই মন্দিরের মা!

অত্যন্ত জাগ্রত ও শক্তিশালী
এখানকার মা কালী!

মধ্যরাতে চোখ খোলেন
এই মন্দিরের কালী ঠাকুর!

বাংলার কোথায় আছে এমন
ভয়ংকর জাগ্রত কালীমন্দির?

দেখুন

 

এ জগতে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের মত কালী সাধক একটিও নেই। এমনটাই শুনে আসা হচ্ছে, যুগ যুগান্তর ধরে। তবে রামকৃষ্ণ ছাড়াও এ পৃথিবীতে এমনই এক কালীসাধক আছেন যার ভক্তি দেখলে চোখে জল চলে আসবে। তার পুজো করার রীতি দেখলে সকলে অবাক হয়ে যাবেন। এই ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি স্বয়ং মা কালীর বুকে পা তুলে দিয়ে দেবীর আরাধনা করেন। এটা শোনার পর অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগবে আরে এ কেমন পূজো? মায়ের বুকে পা দিয়ে পুজো করা তো ঘোরতর পাপ! এমনকি এই বিজ্ঞানের যুগে দাঁড়িয়ে অনেকে ভণ্ডামি বলেও মন্তব্য করবেন। কিন্তু বছর পর বছর ধরে এই রীতি মেনেই মা কালীর পুজো করে আসছেন এই পুরোহিত । শুধু তাই নয় মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য পুজোর সময় পাগলের মতো কাঁদতে থাকেন তিনি। আজ আপনাদের এমনই এক পাগল কালী সাধকের কাহিনী শোনাবো যা শুনে আপনার লোম খাঁড়া হয়ে যাবে। এমনকি এই মন্দির ঘিরে রয়েছে অলৌকিক সব কাহিনী। যা শুনলে আপনারাও এই মন্দিরে পূজো দিতে চাইবেন।

এই মন্দিরটি আর কোথাও নয় আমাদের বাংলার বুকেই অবস্থিত। পশ্চিমবঙ্গে হুগলির আরামবাগে রয়েছে এ মন্দির। এই মন্দিরে রয়েছেন আমাদের বড় মা। আরামবাগের রতনপুর গ্রামে এই মন্দিরটি অবস্থিত। বাংলার অনেকেই এই মন্দিরের নাম শুনেছেন। তবে রহস্য ঘেরা এই মন্দিরের কথা অনেকেই জানেন না । এই মন্দিরেরই পুরোহিত কালীশঙ্কর সাঁতরা । জন্মসূত্রে তিনি একজন অব্রাহ্মণ বাঙালি । তা সত্বেও তিনি নিষ্ঠাভরে বড় মায়ের পূজা করেন। পুজোতে তার বিন্দুমাত্র খামতি থাকে না । তবে তার পুজোয় রয়েছে এক আলাদাই বিশেষত্ব। আর পাঁচটা সাধারণ ব্রাহ্মণের মত তিনি মন্ত্র উচ্চারণ করে পূজো দেন না। নিজের তৈরি করা গান উচ্চারণ করে তিনি মায়ের আরাধনা করে থাকেন। তিনি মনে করেন ভগবানকে পূজো করার জন্য কোন মন্ত্রের প্রয়োজন পড়ে না। মহামায়াকে স্মরণ করে যে কথা তার মনে আসে সেটাই যথেষ্ট। এই বর্গক্ষত্রিয় পুরোহিতের ওপরই এই মন্দিরের পুজোর সমস্ত দায়িত্ব ন্যাস্ত। শুধু এখানেই শেষ নয় রয়েছে আরো সব অদ্ভুত রীতি। আরামবাগের এই পুরোহিত বড়মাকে পূজো করার সময় এক পা মায়ের বুকের উপর তুলে দিয়ে পুজো করেন। পুজোর ঠিক আগের মুহূর্তে কাসর ঘন্টা শাখের আওয়াজ গোটা মন্দির প্রাঙ্গণে গমগম করে বেজে ওঠে । আর ঠিক এইসময় তিনি মায়ের বক্ষে নিজের একটি পা তুলে দেন। এবং নিজের তৈরি গান জোরে জোরে উচ্চারণ করতে থাকেন। আর সেই সাথে মন্দিরে থাকা সকল ভক্তরা জোরে জোরে “জয় বড়মা” বলে আহ্বান করতে থাকেন। এমনকি আরতি করার সময় তিনি ভয়ংকর সাংঘাতিক জিনিসের উপর নাচতে নাচতে আরতি করেন। তবে এই সাংঘাতিক জিনিস তার শরীরে বিন্দুমাত্র আঁচড় কাটতে পারে lনা। এ যেন সাক্ষাৎ মহামায়ার লীলাখেলা। যদিও মায়ের বুকে পা রেখে পুজো করার নেপথ্যে রয়েছে এক বিশেষ কাহিনী। কালী শঙ্কর ছোটবেলায় মূর্তি তৈরি করতেন। বিশেষ করে কালীমূর্তি তৈরি করার প্রতি এক আলাদাই ঝোঁক ছিল তার। কিন্তু এই মুর্তি তার তুলনায় অনেক বড় হয়ে যেত। উচ্চতা একটু ছোট হওয়ার জন্য তিনি মূর্তির নাগাল পেতেন না। এর জন্য তিনি ভীষণ অসন্তুষ্ট হন। হঠাৎই একদিন স্বয়ং মা কালী তাকে স্বপ্নাদেশ দেন। এবং বলেন, আরে তুই তো আমার সন্তানের মত। আর মায়ের সাথে খেলার সময় সন্তানদের কতবারই না পা লেগে যায় । তাই প্রয়োজনে তুই আমার বুকের উপর পা রেখেই নাই পুজো করিস! এতে কোনো পাপ নেই। আর এ কথাই মেনে তিনি বছরে পর বছর ধরে এমন ভাবেই পুজো করে আসছেন। আর একথাও সত্যিই তার এহেন রীতি একটি বারের জন্য পূজোতে ব্যাঘাত ঘটায়নি। আর এই পুজো দেখার জন্যই দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে ভিড় জমায়। এ তো গেল শুধু পুরোহিতের অদ্ভুত রীতি, এখন আপনাদের শোনাবো এই মন্দিরকে অলৌকিক কাহিনী। এই মন্দিরের কালী অত্যন্ত জাগ্রত এবং শক্তিশালী। কথিত আছে, এই মন্দিরের বড় মা নাকি মধ্যরাতে নিজের চোখ খোলেন। একদম নিশিভাগ রাতে মা নিজের চোখ খুলে মন্দির নজর নজরে রাখেন । বলা যায় নিজের হাতে আগলে রাখেন তার মন্দির। এমনকি এই মন্দিরে গেলে কোন ভক্তরাই খালি হাতে ফেরত আসেন না। মনের যত কষ্টই থাকুক না কেন সমস্ত কষ্টই দূর হয়ে যায় এই মন্দিরে আসলে। বড়মা যে কতটা জাগ্রত তা বলতে আর কোন দ্বিধা নেই । কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, পরমকালী সাধক তথা পুরোহিত কালীশঙ্কর সাঁতরা আজ আর আমাদের মাঝে নেই। পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন অনেক দিনই হয়েছে। তবে শোনা যায় তিনি মা কালীর পুজোর জন্য যে রীতি তৈরি করে দিয়ে গেছেন,,,,,,,,,,, সেই একই রীতি বহমান থাকবে। পরবর্তী যে পুরোহিতই আসুক না কেন এই রীতি মেনেই পূজা করবেন।

 

 


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *