“সায়নী লাগাও”, শিবলিঙ্গ নিয়ে নোংরামো! এত কিছুর পরেও কিভাবে টিকিট পেলেন সায়নী?

“সায়নী লাগাও”, শিবলিঙ্গ নিয়ে নোংরামো! এত কিছুর পরেও কিভাবে টিকিট পেলেন সায়নী?

“সায়নী লাগাও”,
শিবলিঙ্গ নিয়ে নোংরামো!

এত কিছুর পরেও
কিভাবে টিকিট পেলেন সায়নী?

কোন জাদুবলে নাম তুললেন
লোকসভার প্রার্থী তালিকায়?

সায়নী ঘোষ, বঙ্গ রাজনীতিতে অত্যন্ত চর্চিত এবং আলোচিত একটি নাম। যার নাম এলেই, সবার প্রথমেই আসে, “সায়নী লাগাও” – এই শব্দ দুটি! কারণ এই শব্দ দুটি সায়নী ঘোষের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বিতর্কিত দুটি শব্দ! মানস ভূঁইয়া, একেবারে ভরা মঞ্চে, সায়নীর দিকে এই শব্দ দুটি ছুঁড়ে দেন। আর তারপর থেকেই এই শব্দ দুটি নিয়েই বঙ্গ রাজনীতিতে শুরু হয়ে যায় ডাবল মিনিং এর খেলা! এখানেই শেষ নয়, সায়নী ঘোষের আরো অনেক বিতর্কিত কান্ড রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১৫ সালে শিবলিঙ্গ বিতর্ক। সেই বছর সায়নীর টুইটার হ্যান্ডেল বর্তমানে যা এক্স নামে পরিচিত, সেখানে একটি ছবি পোস্ট করেন অভিনেত্রী। ছবিটিতে দেখা যায়, বুলাদি নামক একটি কার্টুন চরিত্র শিবলিঙ্গের মাথার উপর জন্মনিরোধক আবরণ পড়াচ্ছেন। যা প্রকাশ্যে আসতেই অভিনেত্রী তথা টিএমসি যুবনেত্রীকে রীতিমতো তুলোধুনো করেন আমজনতা! কিন্তু অবাক করা বিষয়, এত বিতর্কের পরেও কিন্তু টিকিট হাতছাড়া হয়নি সায়নীর!

সম্প্রতি ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে, সায়নী ঘোষের হাতে যাদবপুরের দায়িত্ব তুলে দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। একই সঙ্গে সায়নীর হাতে ধরিয়ে দিলেন লোকসভার টিকিট! সায়নী টিকিট পাওয়ার আগে থেকেই ,,, রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলের কানাঘুষোয়,,,, বারে বারে —- সায়নী টিকিট পেতে পারে এমন জল্পনা ভেসে আসছিল! অবশ্য রবিবাসরীয় ব্রিগেডে সেই জল্পনায় শিলমোহর দিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ আসানসোল থেকে জোড়া ফুলের প্রার্থী হয়েছিলেন সায়নী ঘোষ। সে বার অবশ্য জিততে পারেননি। বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের কাছে লজ্জাজনকভাবে হারতে হয়েছে সায়নীকে!! হেরে গেলেও নিজের দায়িত্ব সমানে পালনে করে গিয়েছেন তিনি। তবে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছিল, ২৪ এর লোকসভায় সায়নীর টিকিট পাওয়া নিয়ে! কিন্তু তৃণমূল সুপ্রিমোর আশীর্বাদে এই যাত্রায় বেঁচে গিয়েছেন তিনি। সায়নের আগে যাদবপুরের দায়িত্বে ছিলেন মিমি চক্রবর্তী। তবে মিমির উপর আস্থা হারিয়েছে দল। যে কারণে এবার দলেরই আরেক তরুণ তুর্কি সায়নী ঘোষের উপরে আস্থা রেখেছেন তৃণমূলের শিষ্য নেতৃত্বরা।

তবে সায়নী ঘোষের টিকিট পাওয়ার নিয়ে বিস্তর কাটা ছেঁড়া চলছে। অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন,,, একসময় এই সায়নী ঘোষ মমতা ব্যানার্জিকে কটাক্ষ করেছিলেন, এরপরেও কি করে নেত্রী সায়নী ঘোষকে এত বড় সুযোগ দিলেন?

এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের একাংশরা মনে করছেন,,,, সায়নী ঘোষকে যাদবপুরের প্রার্থী করার পেছনে,,,,, তৃণমূলের বেশ কয়েকটি শক্তিশালী এবং দূরদর্শী সম্পন্ন যুক্তি রয়েছে —–

প্রথম যুক্তিটি হল সায়নী ঘোষ যতই বিতর্কিত মন্তব্য করুক না কেন যুবনেত্রী হিসেবে তার যথেষ্ট নাম ডাক এবং সুখ্যাতি রয়েছে। সেই দিক থেকে সায়নী ঘোষকে প্রার্থী করা হলে ভোট ব্যাঙ্কে একটা ভালো অংকের ভোট আসার সম্ভাবনা থাকবে।

দ্বিতীয় যুক্তিটি হলো সায়নীর তুলকালাম করা ভাষণ। আপনার ইতিমধ্যেই জানেন সায়নী ঘোষ মঞ্চে ওঠা মানেই বিতর্ক তৈরি হবেই হবে। কখনও, সায়নী লাগাও, কখনও শিবলিঙ্গে কনডম, কখনো আবার গোমূত্র দিয়ে কুলকুচি – সায়নী ঘোষের এধরনের বিতর্কিত ক্রিয়া-কলাপ রাজনীতিকে রীতিমতো উত্তাল করে রেখেছে! এই দিক থেকে বারে বারে জনমানসে ভেসে বেড়ানোর ক্ষেত্রেও সায়নীর একটা দক্ষতা রয়েছে। আর একজন রাজনীতিবিদকে সর্বদা শিরোনামে থাকাটাও একদিকে বাধ্যতামূলক। এই দিকটি বিবেচনা করলে সায়নী রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকার ক্ষেত্রে এক্কেবারে আদর্শ বলে মনে করছেন অনেকে।

তৃতীয় যুক্তিটি হল, সায়নী যাদবপুরের ভূমি কন্যা! সায়নীকে যাদবপুরের টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যেহেতু সায়নী যাদবপুরের মেয়ে সেক্ষেত্রে সায়নীর জন্য যাদবপুরকে সামলানো একটা সহজ ব্যাপার হতে পারে। যাদবপুরের মানুষের মন মানসিকতা পর্যবেক্ষণ করার বিষয়টাও সায়নির কাছে সহজ হবে। যদি যাদবপুরের বাইরে সায়নীকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে যুবনেত্রী হিসেবে সংগঠনের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

এই সমস্ত বিষয়গুলো বিচার বিবেচনা করেই সায়নীকে যাদবপুরের টিকিট ধরানো হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশারদেরা।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *