এ যেন উলটপুরাণ! খাঁচাবন্দি ‘বিপজ্জনক মানুষ’ আর বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘ-সিংহ! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি! জানেন কোথায় রয়েছে পৃথিবীর এমন আজব চিড়িয়াখানা? এখানে জীবজন্তু নয়, খাঁচায় বন্দি থাকে মানুষ!
চিড়িয়াখানা মানেই খাঁচায় বন্দী বন্য জীবজন্তু। যাদের দেখতে ভিড় করেন ছোট বড় বিভিন্ন বয়সী মানুষ। আট থেকে আশি সকলেই চিড়িয়াখানা বা জাদুঘরে যেতে পছন্দ করেন। আর চিড়িয়াখানা গিয়ে সবাই সাধারণত খাঁচায় বন্দি প্রাণীদের দেখতেই অভ্যস্ত। কিন্তু বন্য প্রাণীদের কি খাঁচায় বন্দী করে রাখা উচিত? তাঁদের বন্দিজীবনে ঠেলে দেওয়ার নৈতিকতা প্রশ্ন তুলেছেন বহু পশুপ্রেমী সংগঠনও। তবে জানলে অবাক হবেন পৃথিবীতে এমনও একটি চিড়িয়াখানা রয়েছে, যেখানে খাঁচায় বন্যপ্রাণীরা নয় বন্দি থাকে মানুষ। আর সেখানে অবাধে বিচরণ করে বাঘ সিংহের মতো হিংস্র বন্য প্রাণীরা। পর্যটকদের একেবারে ভিন্ন স্বাদের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষের তরফে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এই চিড়িয়াখানায় নিরাপত্তার ব্যাপারে জারি রয়েছে কঠোর নির্দেশ।
আসুন জানা যাক কোথায় রয়েছে পৃথিবীর এই অদ্ভুত চিড়িয়াখানা? আসলে বিখ্যাত এই চিড়িয়াখানাটি রয়েছে ভারতেরই প্রতিবেশী দেশ চীনে। চীনের লেহে লেদু ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি এমনই একটি চিড়িয়াখানা যেখানে অবাধে বিচরণ করে বন্যপ্রাণী। আর খাঁচায় বন্দি থাকে মানুষ। আসলে এখানকার হিংস্র বন্যপ্রাণীদের দেখতে গেলে খাঁচায় বন্দী হয়ে আসতে হয় মানুষদের।চলুন জানা যাক পৃথিবী বিখ্যাত এই চিড়িয়াখানার বেশ কিছু মজার তথ্য।
এই চিড়িয়াখানা কখন খোলা হয়েছিল ?
চিনের চংকিং শহরে অবস্থিত এই চিড়িয়াখানাটি প্রায় এক দশক আগে ২০১৫ সালে খোলা হয়েছিল। এই চিড়িয়াখানায় মানুষ বন্য প্রাণীদের খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পায়। পর্যটকরাও খাঁচার ভেতর থেকে নিজ হাতে পশুদের খাওয়াতে পারেন। এই চিড়িয়াখানায় মানুষ ভর্তি খাঁচা বন্য পশুর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এই চিড়িয়াখানার বন্য পশুরা কী করে ?
দর্শনার্থীদের খাঁচার গায়ে কাঁচা মাংসের বড় বড় টুকরো বেঁধে দিয়ে বন্যপ্রাণীদের আকৃষ্ট করা হয়। এইভাবেই খাবারের লোভ দেখিয়ে মানুষ পূর্ণ এই খাঁচার সামনে নিয়ে যাওয়া হয় বন্যপ্রাণীদের। খাবারের লোভেই পশুরা কখনও কখনও খাঁচার ওপরেও উঠে পড়ে। সিংহকে এত কাছ থেকে দেখা এবং তার গর্জন শোনাও নিঃসন্দেহে এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা। প্রত্যেক খাঁচায় থাকে ছোট্ট জানালা, সেই জানালা দিয়েই মানুষ বন্য পশুদের মাংস দেয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন?
এই চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য রয়েছে জোরদার নিরাপত্তার ব্যবস্থা। চিড়িয়াখানার খাঁচা এবং প্রাণীগুলিকে ২৪ ঘণ্টা ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে সেখানে সাহায্যের পৌঁছানো যেতে পারে। এই চিড়িয়াখানায় মানুষরাই খাঁচার ভিতর থেকে বেঙ্গল টাইগার, সাদা বাঘ, সিংহ, কিংবা ভালুকের মতো বন্য প্রাণীদের দেখে থাকেন।
Leave a Reply