গোয়া যেন মিনি বিদেশ! জানেন বিদেশিদের কাছেও কেন এত জনপ্রিয় গোয়ার সমুদ্র সৈকত গুলি? গোয়ার এই সৈকত গুলিতে পরিবার নিয়ে গেলেই বিপদ! কারণ জানলে অবাক হবেন আপনিও!
সারা বছরই ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে! পাহাড় হোক সমুদ্র কর্ম জীবন থেকে অবসর মিলতেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে সকলেই বেরিয়ে পড়েন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য। তবে ভ্রমণ পিপাসুদের বাকেট লিস্টে বরাবরই থাকে আমাদের দেশের ছোট্টো রাজ্য গোয়া। আরবসাগরের গা ঘেঁষে প্রায় ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ তটরেখা জুড়ে অবস্থিত এই রাজ্য।
এই সমুদ্র সৈকতের সমান্তরালে থরে থরে সাজানো রয়েছে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা। মহারাষ্ট্রের দিকে উত্তরে রয়েছে গোয়ার প্রথম জনপ্রিয় সৈকত আরামবোল এবং কর্নাটকের দিকে দক্ষিণে রয়েছে শেষ সুপরিচিত সৈকত পালোলেম। এছাড়া মাঝখানে রয়েছে ৪০টিরও বেশি ছোটো বড় সৈকত।এই সমুদ্র সৈকতগুলির এক একটির সৌন্দর্য এক একরকম। গোয়ার এই সমুদ্র সৈকতগুলি শুধু ভারতীয়দের কাছেই নয় ব্যপক জনপ্রিয় বিদেশী পর্যটকদের কাছেও। আসুন জানা যাক গোয়ার কয়েকটি বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে।
ক্যান্ডোলিম সমুদ্র সৈকত
গোয়ার সবচেয়ে পুরোনো সমুদ্র সৈকত হল ক্যান্ডোলিম। বিলাসবহুল হোটেল এবং রেস্টুরেন্টে ঘেরা এই সমুদ্র সৈকতটি শপিং-এর জন্য সেরা। রংচঙে পোশাক, কিংবা গয়না সবই এখানে দরদাম করে কিনতে পাওয়া যায়। এখানকার কয়েকটি আকর্ষণীয় স্থান হল চ্যাপেল সেন্ট লরেন্স, আগুয়াদা ফোর্ট এবং ক্যান্ডোলিম চার্চ। তবে এই সৈকতে পরিবারের সঙ্গে গেলে যে কোনো সময় অস্বস্তিতে পড়তে পারেন। কারণ এই স্থানে, বহু বিদেশি পর্যটকরা শার্টলেস বা বিকিনি পরে সূর্য স্নান উপভোগ করেন।
নাইটলাইফ: এই এলাকার সেরা কিছু নাইটলাইফ স্পট হল বার ল্যাটিনো, ফারোহস ডেন, বন অ্যাপেটাইট রেস্তোরাঁ ও বার এবং বুয়েনা মেসা।
কীভাবে পৌঁছাবেন: এই সমুদ্র সৈকতে পৌঁছানোর নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল থিভিমে। সেখানে থেকেই সড়কপথে পৌঁছানো যায় এই সমুদ্র সৈকতে। ডাবোলিম বিমানবন্দর থেকে এই ক্যান্ডোলিনের দূরত্ব প্রায় ৪৬ কিলোমিটার।
পালোলেম সৈকত
ছবির মত সুন্দর দক্ষিণ গোয়ার কানাকোনাতে অবস্থিত পালোলেম সমুদ্র সৈকত। এই সৈকতের যেদিকেই তাকানো যায় সেদিকেই শুধু সাদা বালি। এই বিচটি রাজ্যের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে অন্যতম। শান্ত নিরিবিলি এই সমুদ্র সৈকতটি নারকেল গাছে ঘেরা এবং এখানে আছে প্রচুর রঙিন কাঠের ছোটো ছোটো খুপরি ঘর। পর্যটকরা এখানে চেয়ারে বসে পানাহার সারেন। এই সৈকতে বিদেশি পর্যটকরা অবাধে বিচরণ করে। এই সৈকতে গেলে যে কারও এটিকে বিদেশ বলে ভুল হতে পারে। এখানে বিদেশিরাদের সারিবদ্ধ সান বাথ নিতে দেখা যায়। তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে গেলে গোয়ার এই সৈকতটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
নাইট লাইফ: এই সৈকতের প্রধান আকর্ষণ নেপচুন পয়েন্টে সাইলেন্ট নাইট পার্টি।
কীভাবে যাবেন?
ডাবোলিম বিমানবন্দর থেকে পালোলেম সৈকতের দূরত্ব প্রায় ৬৭ কিলোমিটার। গোয়ার মারগাঁও থেকে ৩০ মিনিটেই পালোলেমে পৌঁছোনো যায়।
অশ্বেম সমুদ্র সৈকত
উত্তর গোয়ার অশ্বেম সমুদ্র সৈকত শুধু বিদেশি পর্যটকদের কাছেই নয় হানিমুন কাপলদের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই সৈকতকে ঘিরে রেখেছে নারকেল গাছ এবং বাঁশ গাছের সারি। এখানে গেলেই পাওয়া যাবে বিভিন্ন বাজেটের হোটেল এবং রিসর্ট। বন্ধুবান্ধব কিংবা সঙ্গীর সঙ্গেও এই সৈকত ঘুরতে যাওয়া যাবে। তবে হ্যাঁ, বাড়ির বড় এবং ছোটো সদস্যদের নিয়ে এই বিচে না যাওয়াই ভালো। শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক যুবক যুবতিরাই এই পরিবেশে যাওয়ার উপযোগী।
নাইটলাইফ: এই সৈকতে লা প্লেজ রেস্তোরাঁ, বারদো, ব্লু সানসেট বিচ পার্টি এবং শান্তি লাউঞ্জের মতো অনেকগুলি নাইটলাইফ বিকল্প রয়েছে।
কীভাবে পৌঁছাবেন: ক্যাব, বাইক বা গাড়ি ভাড়া করেই পৌঁছানো যায় গোয়ার এই জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতে।
মোরজিম বিচ
বিদেশি পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় শান্তশিষ্ট একটি সমুদ্র সৈকত হল গোয়ার মোরজিম সমুদ্র সৈকত। এই সৈকতে সবচেয়ে বেশি ভিড় জমান রাশিয়ান পর্যটকরা। এই বিচে সবাই বন্ধুবান্ধব নিয়ে যেতেই পছন্দ করেন। তবে পরিবার নিয়ে এই জায়গাগুলিতে ঘুরতে না যাওয়াই ভালো, বিদেশিদের অদ্ভুত পোশাকে দেখলে অস্বস্তিতে পড়বেন পরিবারের সদস্যরাই। বিশ্রাম নেওয়া ছাড়াও এই বিচগুলিতে অনেক রেস্তোরাঁ, স্পোর্টস্ বার এবং চমৎকার সব পরিষেবা পাওয়া যায়।
নাইটলাইফ: রাতের জন্য গোয়ার সেরা জায়গাগুলি হল বোরা বোরা লাইফ, ক্লাব ফ্রেশ এবং বুম শ্যাক লাউঞ্জ।
কীভাবে পৌঁছাবেন: উত্তর গোয়ায় অবস্থিত এই সৈকতে বিমান, রেলপথ এবং সড়কপথে যাওয়া যায় সহজেই। তাছাড়া গোয়ার গাড়ি বা বাইক-ও ব্যাপক জনপ্রিয়।
Leave a Reply