জানেন? কে এই বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী? যার দাপটে থরথরিয়ে কাঁপছে বাংলার এজলাস, এনার ভয়েই ঘুম উড়েছে পিসি – ভাইপোর!
( সুন্দর করে টানটান করে ফোকাস ও শুরুর লাইনগুলো বলবে, ভয়েস মডিউলেশনটা যেন পরিষ্কার আসে)
জানেন?
কে এই বিচারপতি
অভিজিৎ গাঙ্গুলী?
যার দাপটে থরথরিয়ে কাঁপছে
বাংলার এজলাস!
ইনিই নাকি গরীবের ন্যায়দাতা!
জনগণের ভগবান!
এনার ভয়েই ঘুম উড়েছে
পিসি – ভাইপোর!
মমতা হোক বা অভিষেক
কাউকেই রেয়াত করছেন না!
পার্থ হোক বা কেষ্ট,, কেউ’ই রক্ষা পাচ্ছে না
বিচারপতি গাঙ্গুলীর হাত থেকে!
দুর্নীতি দেখলেই ঝাড় দিচ্ছেন!
অন্যায়ের সঙ্গে কোনও আপোস নয়!
কিন্তু কিভাবে এত ক্ষমতাশালী হলেন
জাস্টিস গাঙ্গুলী?
এই প্রশ্নের উত্তরগুলো জানা
আছে তো?
নেই?! তাই না
তাহলে দেরী কিসের? আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন! আজ বাংলা হান্টের পর্দায়, একেবারে সোজা বাংলায় আপনাদের শোনাব বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী সম্পর্কে এই সমস্ত অজানা তথ্য!
বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী, বর্তমানে যার ভয়ে তটস্থ রাজ্যের শাসকদল! বিগত বছর দুয়েকের মধ্যেই এই মানুষটি একাই,,, শাসক দলের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন! ইনিই রাজ্যের পরতে পরতে ঘটে চলা দুর্নীতিকে টেনে হিঁচড়ে বার করে আনছেন! চাকরি চুরির মামলা থেকে ডিএ মামলা সর্বত্র বাঘের মতন বুক ফুলিয়ে ন্যায় বিচারের কাজ চালাচ্ছেন এই মানুষটি! এনাকে ভগাবনের আসনে বসিয়েছেন সমাজের অসহায় শিক্ষিত, যোগ্য বেকার চাকুরী প্রার্থীরা! জনগণের বিশ্বাস বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী কলিযুগের ত্রাতা! তার হাত ধরেই বাংলার দুর্নীতির কালো ছায়া খন্ডন হবে, এমনটাই আশা করছেন বাংলার মানুষ! বাংলার অলিতে গলিতে, রাস্তাঘাটে, ঘরে, বাইরে সর্বত্র অভিজিৎ গাঙ্গুলীর নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে বিচারপতি জাস্টিস গাঙ্গুলী এত সহজে বাংলার লাইম লাইটে আসেননি! চর্চা ও আলোচনায় থাকার মতনই কাজ করেছেন তিনি!
রবিনহুডরুপী জাস্টিস গাঙ্গুলী দেখে অনেকেই মনে করেন, আইনের ময়দানে তিনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও দক্ষ! কিন্তু বিশ্বাস করুন এই দুঁদে আইনজীবী ওকালতি শুরু করেছেন মাত্র পাঁচ বছর হয়েছে! ২০১৮ সালের মে মাসের ২ তারিখ, অভিজিৎ বাবু ,কলকাতা হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। তার আগে তিনি ছিলেন পুরোদস্তুর ডব্লিউ বিসিএস অফিসার! ভাবা যায়! সরকারি ছেড়ে , এই মানুষটি কিনা বেছে নিলেন আইনের পথ! কি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ তাই না! ব্যক্তিগত জীবন থেকে কর্মস্থল, জীবনের প্রতিটি শাখায় তিনি এমনই দুঃসাহস দেখিয়ে আসছেন!
বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী আদ্যোপান্ত একজন বাঙালি মানুষ। এই বাংলাতেই তার জন্ম আর এই বাংলাতেই তার বেড়ে ওঠা। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছেন কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের মূল শাখা থেকে। ছোট থেকেই তিনি প্রবল স্পষ্টবাদী, সাহসী ও তুখোড় ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন প্রকৃতির। সোজা কথায় না’কে না, আর হ্যাঁ’কে হ্যাঁ বলতে জানেন! তরুণ বয়স থেকেই অন্যায় অবিচারের বিরোধী! ছাত্র জীবন থেকেই ন্যায়ের জন্য লড়ে আসছেন। পড়ুয়া অবস্থা থেকেই মনে মনে সংকল্প করেন সমাজের পিছিয়ে পড়া, প্রান্তিক মানুষদের ন্যায় বিচার পাইয়ে দেবেন। তাই কর্মজীবনের প্রথম দিকে হতে চেয়েছিলেন ডব্লিউ বিসিএস অফিসার। সেই লক্ষ্যকেই স্থির রেখে হয়েছিলেন সরকারি অফিসার। অনেক বছর সরকারি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু জাস্টিস গাঙ্গুলীর কপালে তো অন্য কিছু লেখা ছিল! তিনি আচমকা সরকারি চাকরি ছেড়ে চলে আসেন মামলা, মোকদ্দমা, ওকালতির পথে! বেশভুষণ পরিবর্তন করে গায়ে জড়ান সাদা শার্ট আর কালো কোট! আদালত চত্বরে পা রাখতে না রাখতেই জাস্টিস গাঙ্গুলীর শিখেও ছিঁড়ে যায়। ওকালতির মাত্র ৩ বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০২০ সালের জুলাই মাসের ৩০ তারিখ, তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। আর এরপরেই শুরু হয় জাস্টিস গাঙ্গুলীর ন্যায় বিচারের খেলা! জাস্টিস গাঙ্গুলীই,,, প্রথমবার বাংলার শিক্ষা দুর্নীতির মৌচাকে ঢিল ছোড়েন। ২০২১ সালে বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী”ই পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির যাবতীয় অভিযোগের মামলায় একের পর এক নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি এমন এমন নির্দেশনা দিয়েছেন যা শাসকদলের পিন্ডি চটকে দেওয়ার মতন! শিক্ষা দুর্নীতিতে বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটি হল, প্রাক্তন দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর অবৈধ শিক্ষকতার চাকরি খারিজ করা এবং ৪১ মাসের বেতন ফেরত দেওয়ার কঠোর নির্দেশ! সেই সঙ্গে ধৃত পরেশ অধিকারী ও তার একমাত্র আদরের কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি চুরির কর্মকাণ্ডটি যাতে সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়া হয় সেই নির্দেশনাও তিনিই দিয়েছিলেন। এখানেই থেমে থাকেননি! রাজ্যের ভাইপো ওরফে অভিষেক ব্যানার্জির সম্পত্তি তালিকার বৈধতা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন! সোজা কথায় শাসক হোক বা বিরোধী অন্যায় করলে কাউকেই ছাড় দিচ্ছেন না বিচারপতি মশাই! মূলত তারপর থেকেই এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের কাছে বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী হয়ে উঠেছেন স্বয়ং ভগবান। তিনি এখন সর্বহারাদের একমাত্র ভরসা! যোগ্য বেকার শিক্ষকদের হকের চাকরির ফিরিয়ে দিতে মরিয়া জাস্টিস গাঙ্গুলী! বঞ্চিত আম আদমিদের পরিত্রাতা স্বরূপ এই মানুষটি, শিরদাঁড়া সোজা রেখে কথা বলছেন বলে চরম হেনস্থারও সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে তিনি রাজ্যের শাসকদলের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন। শুধুই কি শাসক মহল??
সম্প্রতি আইনজীবী মহলের অনেকের কাছেও তিনি চোখের বিষ হয়ে উঠেছেন! এজলাসে কান পাতলেই তার নামে নানা রকম কুকথা ও নেতিবাচক মন্তব্য শোনা যায়! তবে এসবের কিছুই জাস্টিস গাঙ্গুলিকে দমিয়ে রাখতে পারছে না! ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করার যে লড়াই তিনি তরুণ বয়স থেকে শুরু করেছিলেন,,, সেই লড়াই আগামীতেও তিনি জারি রাখবেন বলে জানিয়েছেন!
সত্যি বাংলায় দুর্নীতির যে অরাজকতার শুরু হয়েছে, এই অরাজকতাকে ধ্বংস করে,,, ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য,,, প্রতিটি বিচারপতির মধ্যে জাস্টিস গাঙ্গুলীর মতন মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি জন্ম নেয়া উচিত বলে মনে করছেন সমাজ বিশেষজ্ঞরা!
সুপ্রিয় দর্শক আপনাদের কি মনে হয়, বাংলাকে দুর্নীতির অভিশাপ থেকে বাঁচাতে, জাস্টিস গাঙ্গুলী কি সত্যিই একজন আদর্শ বিচারপতি? আপনার মূল্যবান মতামতটি কমেন্ট করে জানান
Leave a Reply