মুরগির মেটে

মুরগির মেটে খেতে ভালোবাসেন? অজান্তেই  খাওয়াচ্ছেন বাড়ির বাচ্চা এবং বয়স্ক মানুষদেরও? মুরগির লিভার আদৌ শরীরের উপকারী কি না জানেন? মুরগির মেটে খেয়ে শরীরের কোনো ক্ষতি করছেন না তো? জানেন মুরগির মেটের উপকারী এবং উপকারী গুণ সম্পর্কে কি বলছেন চিকিৎসকরা? ৯৯% মানুষই জানেন না সঠিক তথ্য।

মাছ,মাংস কিংবা ডিম ছাড়াও ভোজনরসিকদের রসনা তৃপ্তির অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবার হল মুরগির লিভার অর্থ্যাৎ মেটে। কেউ কেউ আবার আলাদা করে মেটে কিনে এনে মেটে চচ্চড়ি বানিয়ে খান। রুটি কিংবা ভাত উভয়ের সাথেই পরিবেশন করলে খেতেও লাগে দুর্দান্ত। কিন্তু প্রশ্ন হল মুরগির  মেটে খাওয়া কি স্বাস্থ্যের পক্ষে  ক্ষতিকারক? কি বলছেন চিকিৎসকরা? এবিষয়ে দ্বন্দ থাকলেও পুষ্টিবিদরা দাবি শুনলে চমকে যাবেন যে কেউ।

১) ভিটামিন এবং প্রোটিনের উৎস

তাই অনেকসময় রোগীদেরও মুরগির এই গিলে মেটে কিনে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। আসলে মুরগির লিভারে থাকে  নানান রকম ভিটামিন,আয়রন,ক্যালসিয়াম, ফাইবার ছাড়াও আরও অনেক উপকারী উপাদান। মুরগির লিভারে থাকা ভিটামিন এ আর ভিটামিন বি দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়।

২) হার্টের জন্য ভালো:

মুরগির লিভারে যে আয়রন আর ফাইবার রয়েছে তা হার্টের জন্যও দারুন উপকারী। এই উপাদান গুলি থাকায় হার্টের ব্লকেজ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং রক্ত চলাচল ভালো হয়।

৩) অ্যানিমিয়া

মুরগির মেটে অ্যানিমিয়া রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যে সমস্ত রোগীদের অ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তাল্পতা রোগ রয়েছে তাদের শরীরেও রক্তের ঘাটতি পূরণের জন্যও মেটে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরী করে, ফলে শরীরে রক্তের ঘাটতি পূরণ হয়।

৪) গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারী

অনেক চিকিৎসকরাই গর্ভবতী মহিলাদের মুরগির গিলে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে আয়রন ছাড়াও এতে থাকে ফলেডি। তাই এই সময় হবু মায়েদের অতিরিক্ত মাত্রায় মেটে খাওয়া উচিত নয়।

৫) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

শরীরের ওজন ঠিক রাখতে পুষ্টিকর খাবার হিসাবে মুরগির মেটে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরাও। তাছাড়া এটি  মস্তিষ্কের কোষকে সতেজ রাখতেও সাহায্য করে। তাই পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন মস্তিস্ক সতেজ রাখতেও মুরগির মেটে খাওয়া উপকারী।

 

৬) চুল ও হাড়ের সমস্যা

মুরগির লিভারে থাকে জিংক ও আয়রন। এটি চুলে পুষ্টি যোগায় এবং চুলকে মজবুত ও ঘন করে। তাছাড়াও মুরগির মেটে ফসফরাস সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হাড়ের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।

৭) ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং অন্যান্য সমস্যায়

মুরগির মেটেতে যে সেলেনিয়াম থাকে তা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়াও সেলেনিয়াম হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট,বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ,গাঁটের ব্যাথা কিংবা কৃমির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।

মুরগির মেটে কাদের খাওয়া উচিত নয়?

আসলে একাধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে এই গিলে মেটে না খাওয়ারই পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। আসলে মুরগির লিভারে থাকে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এই দুই উপাদান রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল বাড়িয়ে তোলে। এই এলডিএল আবার  রক্তনালীর ভিতর জমা হয়। যার ফলে  হার্ট অ্যাটাক,স্ট্রোক,এবং পেরিফেরাল অর্টারি ডিজিজের মতো অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরলের রোগীদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য মেটে খাওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *