রাতে কেন কাঁদে কুকুর? রাতে কুকুরের কান্না কেন অশুভ জানেন? তবে আদৌ কি ওটা তাঁদের কান্না? প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে রাতে কুকুরের কান্না আসলে কিসের সংকেত জানেন? কুকুরের কান্না নিয়ে এই ধারণা কতখানি সত্যি? কি বলছে বিজ্ঞান? উত্তর জানলে ভয়ে কাঁপবে হাঁটু!
চারপেয়ে প্রাণী হলেও কুকুরের মতো বিশ্বস্ত বন্ধু আর দুটো নেই! একথা একবাক্যে স্বীকার করবেন যে কেউ! অনেক পশুপ্রেমীরা বাড়িতেও কুকুর পোষেন। কেউ কেউ আবার রাস্তার কুকুর দেরও আদর যত্নের ত্রুটি রাখেন না। কিন্তু তবুও এই প্রিয় পোষ্যদের নিয়ে আজও মানুষের মনে প্রচলিত রয়েছে বেশ কিছু ধারণা। বিশেষ করে যখনই রাতের বেলায় কুকুরের কান্না ভেসে আসে, তখনই মনের মধ্যে এক অজানা ভয় কাজ করে কমবেশি সকলেরই।
আসলে সংস্কারের বশেই আমাদের দুর্বল মন অনেক কিছুই ভেবে ফেলে। আসলে যুগ যুগ ধরেই এই বিষয়গুলিকে আমাদের সমাজে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। তাই এখনও গভীর রাতের অন্ধকারে কুকুরের কান্না কানে আসতেই বাড়ির গুরুজনেরা বলেন কুকুরের কান্না মানেই অশুভ কিছু ঘটতে চলেছে।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী যে বাড়ির সামনে বসে রাতে কুকুর কাঁদে শিগগিরই সেই বাড়িতে নাকি কারও মৃত্যু হতে পারে। তাই রাতে কারও বাড়ির সামনে কুকুর কাঁদলেই তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
কি বলছেন জ্যোতিষীরা?
তবে এই বিষয়ে জ্যোতিষীরা বলছেন অন্য কথা। এমনিতে আমরা সকলেই জানি কুকুরের ঘ্রাণশক্তি এবং দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত প্রখর। তাই এরা এমন কিছু দেখতে এবং বুঝতে পারে যা সাধারণ মানুষের পক্ষে দেখা বা বোঝা অসম্ভব। তাঁদের মতে কুকুর তখনই কাঁদে যখন তাদের আশেপাশে কোনো অশরীরী আত্মা ঘুরে বেড়ায়। যা সাধারণ মানুষের চোখে না পড়লেও দেখতে পায় কুকুর। এই কারণেই ধারে কাছে কোনো আত্মা ঘুরে বেড়ালেই কুকুর কাঁদতে শুরু করে।
খারাপ কোনো কিছু ঘটার আগেই তা আঁচ করতে পারে কুকুর। তাই বিপদ বুঝতে পেরেই রাতের অন্ধকারে একনাগাড়ে ডাকতে শুরু করে কুকুর। এমনটাই দাবি করা হয় জ্যোতিষী শাস্ত্রে। আবার অনেক সময় দেখা যায় কোনো বাড়ি থেকে ডাকতে ডাকতে বেরিয়ে আসছে কুকুর। তাহলে তা নাকি আগে থেকে ইঙ্গিত দেয় যে ওই বাড়ির সদস্যরা কোনো কাজে বাধার সম্মুখীন হতে পারেন।
আর যদি বাড়ির পোষা কুকুর হঠাৎ করে কাঁদতে শুরু করে কিংবা খাওয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার বাড়িতেই কোনো বিপদ আসতে চলেছে। তাই কুকুরের কান্নাকে অশুভ সংকেত বলে উল্লেখ করা হয়েছে জ্যোতিষ শাস্ত্রে।
তবে প্রচলিত ধারণা কিংবা জ্যোতিষ শাস্ত্র শুধু নয় এ বিষয়ে রয়েছে বিশেষ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও।
তবে আগের দুটি ধারণা সম্পর্কে কিন্তু একেবারেই সহমত পোষণ করে না বিজ্ঞান। আসলে একেবারে আলাদা কথা বলছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞনীদের মতে কুকুর মোটেই কাঁদে না। আসলে ওরা ওভাবেই চিৎকার করে অর্থাৎ ডাকে। রাতে এইভাবে ডেকেই তারা দূরের সঙ্গীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়। এইভাবে জোরে জোরে চিৎকার করেই তারা নিজেদের অবস্থানটাও বুঝিয়ে দেয় দূরের কুকুর সঙ্গীদের।
বিজ্ঞানীদের মতে কুকুরের এই ডাকের পিছনে রয়েছে আরও একটি কারণ! তাই বিজ্ঞানীদের দাবি অন্যান্য প্রাণীদের মতোই কুকুরদের চোট কিংবা আঘাত পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই তখন ওইভাবে চিৎকার করে নিজেদের ব্যাথা যন্ত্রণার কথা সঙ্গীদের জানায় কুকুররা।
এছাড়াও তৃতীয় কারণ হিসাবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন কুকুররা কখনই একা থাকতে পছন্দ করে না। তাই একাকিত্ব বোধ করলেই কুকুররা ওই ভাবে চিৎকার করে নিজেদের সঙ্গীদের ডাকে।
Leave a Reply