সরস্বতীর মূর্তি কেনার আগে, এই ৫টি লক্ষণ আছে কি না অবশ্যই মিলিয়ে নিন!
মূর্তিতে এই পাঁচটি লক্ষণ দেখলেই
বুঝে নেবেন, সরস্বতী মূর্তিটি জাগ্রত!!
এমন মূর্তিতে পুজো দিলেই
বছরভর পাবেন, বাগ দেবীর আশীর্বাদ!
হুড়মুড়িয়ে বাড়বে, লেখাপড়ার
প্রতি আকর্ষণ!
সারাজীবন ভাসবেন
বিদ্যার সাগরে!
ঝটপট দেখে নিন
এই ৫টি লক্ষণ কি কি
প্রথম লক্ষণটি হল, সরস্বতী দেবীর হাতে বেদ গ্রন্থ আছে কি না দেখতে হবে –
আমরা সচরাচর যেসব সরস্বতী মূর্তি দেখে থাকি বা কিনে থাকি সেই সব মূর্তির হাতে বেদ গ্রন্থটি দেখা যায় না । কিন্তু আপনারা কি জানেন সরস্বতী দেবীর অন্যতম প্রিয় একটি গ্রন্থ হলো বেদ । পৌরাণিক শাস্ত্র মতে , সরস্বতী দেবীর হাতে বেদ গ্রন্থ থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ইদানিং বাজারে যে সমস্ত সরস্বতী মুর্তি ওঠে সেগুলোর হাতে বেদ গ্রন্থটি দেখা যায় না । কালের নিয়মে , সরস্বতী মূর্তির বেশভূষণেও বেশ পরিবর্তন এসেছে । কিন্তু এইটা ঠিক নয় । যেহেতু বেদগ্রন্থটি বিদ্যা দেবীর অত্যন্ত প্রিয় , তাই মুর্তি নির্মাণের সময় সরস্বতী মূর্তিতে বেদ থাকা আবশ্যক। শুধু তাই নয় প্রাচীন শাস্ত্র মতে , রামায়ণ – মহাভারতের থেকেও এই ধর্ম গ্রন্থের প্রাধান্য অধিক দেখা যায় । এমনকি বেদ হলো জ্ঞানের প্রতীক। তাই বিধান অনুযায়ী , সরস্বতী মায়ের হাত বেদ থাকলে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও জ্ঞানের বৃদ্ধি লাভ পায়। তাই যারাই সরস্বতী মুর্তি কিনবেন অবশ্যই বেদ হাতে আছে এমন মূর্তি কেনার চেষ্টা করুন ।
দ্বিতীয় লক্ষণটি হল সরস্বতী মায়ের মূর্তি ভাঙ্গা কিনা যাচাই করা –
সরস্বতী পূজো উপলক্ষে বাজারে নানা রকমের মূর্তি দেখা যায়। অনেকেই মূর্তি কিনতে গিয়ে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই না করে মূর্তি কিনে নিয়ে চলে আসেন। এক্ষেত্রে অনেক সময় বাড়িতে এসে চোখে পড়ে, মূর্তির কোথাও ফাটল রয়েছে কিংবা মূর্তির কোনও অংশে ভাঙ্গা রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র মতে,,, ভাঙ্গা মূর্তিতে পুজো করা অত্যন্ত অশুভ বলে বিবেচিত। ফলে বুঝতেই পারছেন, ভাঙ্গা কিংবা ফাটল ধরা সরস্বতী মূর্তিতে পুজো করা কিন্তু একেবারেই শোভনীয় বলে বিবেচিত হবে না। ভাঙ্গা কিংবা ফাটল ধরা মূর্তিতে পুজো করলে বাকদেবী ক্ষুব্ধ পর্যন্ত হতে পারেন। তাই যখনই মুর্তি কিনবেন এই বিষয়টির ওপর লক্ষ্য রাখবেন ।
তৃতীয় লক্ষণটি হল সরস্বতী মূর্তিতে কোনো খুঁত আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা
সঠিক নিয়ম কানুন মেনে ভক্তি ভরে দেব – দেবীর আরাধনা করলে দেব – দেবী তুষ্ট হন । কিন্তু যদি নামমাত্র পূজো করা হয় তাহলে ভগবান তো রুষ্ট হন সেই সাথে আপনি ভগবানের কুনজরে পড়ে যান। আর যদি কথা হয় সরস্বতী পুজোর তাহলে তো খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কেউ কেউ মুর্তি কিনতে গিয়ে সাধারণ ছোটো ছোটো খুঁতগুলিকে তেমন পাত্তা না দিয়েই মুর্তি কিনে নিয়ে চলে আসেন । কিন্তু মূর্তিতে খুঁত থাকা মোটেই পুজোর জন্য শুভ লক্ষন নয় । তাই মূর্তির কেনার সময় দেবীর গা থেকে রং উঠে যাচ্ছে , সাজ-সজ্জা নষ্ট হয়ে গেছে , এমনকি দেবীর বাহন ঠিক ভাবে বসে নেই এই রকম খুঁত চোখে পড়লে কখনোই সেই মুর্তি কিনবেন না । যতই বিক্রেতা কম দামে বিক্রি করুক আপনি কখনোই কিনবেন না । ভুল করে যদি সেই মুর্তি বাড়িতে এনে পূজো করেন তাহলে বাড়িতে অনাচার সৃষ্টি হবে, আর বাড়িতে থাকা পড়ুয়ার ওপর সেই অনাচারের ভয়ংকর প্রভাব পড়বে।
অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন সরস্বতী দেবী যেনো শ্বেত – শুভ্র বর্ণের হয় :
বাজারে নানা রকমের সরস্বতী দেবীর মূর্তি ওঠে বিক্রির জন্য । লক্ষ্য করে দেখবেন, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য বিক্রেতারা বাগদেবীর মুর্তি গুলিকে নানারকমের আকর্ষণীয় রঙে রাঙিয়ে থাকেন । তবে শাস্ত্রীয় বিধান মতে, বাগদেবীর গায়ের রং শ্বেত- শুভ্র বর্ণের হয়,, এমনকি দেবীর পরিধেয় বস্ত্রও হয় সাদা রঙের । তাই বাগদেবীর আরাধনায় শ্বেত শুভ্র বর্ণের মূর্তির প্রাধান্য অনেক বেশি । কিন্তু আজকাল কেউই এই বিষয়টিকে প্রাধান্য না দিয়েই রঙিন মূর্তির পিছনে ছোটে। তবে মূর্তি বিক্রির জন্য বিদ্যার দেবীকে যেভাবে রাঙানো হয় তা একেবারেই শাস্ত্র বিরোধী । তাই শাস্ত্র বিরোধী না হয়ে,,,,, ধর্মীয় অনুশাসনকে মেনে শ্বেত শুভ্র বর্ণের সরস্বতী মূর্তির পূজা করুন এবং সঠিক নিয়ম মেনে দেবীর আরাধনা করুন , দেখবেন বাগদেবী তুষ্ট হয়ে দুহাত ভরে আশীর্বাদ দিচ্ছেন।
এছাড়াও মুর্তি কেনার সময় দিনক্ষনের ওপরও বিশেষ নজর রাখবেন :
হিন্দুধর্ম মতে যেকোনো শুভ কাজ দিনক্ষণ বিচার করেই করা হয় । শুভ কাজ শুভ দিনে সম্পন্ন হলে ঘরে সুখ শান্তি বিরাজ করে । পূজো – অর্চনাতে এই বিষয়টির ওপর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কিন্তু পুজোর সময় তিথি নক্ষত্র দেখে ঠিক করা হলেও,,,,, মূর্তি কেনার সময় এত কিছু নির্ধারণ করা হয় না । কিন্তু জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে , মুর্তি কেনার সময়ও দিনের ওপর বিশেষ নজর দিতে হয় । শনিবার এবং মঙ্গলবার এই দুটি বিশেষ দিনে মুর্তি না কেনাই মঙ্গল বলে মনে করা হয়। কারণ শাস্ত্রীয় বিধানে , এই দুদিন শুভ বলে গণ্য করা হয়। তাই এই দু দিন বাদে যেকোনো দিন আপনারা মুর্তি কিনতে পারেন , তাতে কোনো সমস্যা হয় না ।
Leave a Reply