মাত্র ২৯ বছরে অবসর

মাত্র ২৯ বছরে অবসর নিয়েও কাটাচ্ছেন আরামের জীবন! এত কম বয়সে অবসর নিয়েও কিভাবে কোটিপতি হলেন এই ভারতীয় যুবক? তাঁর সাফল্যের কাহিনী হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও! এবার আপনিও ৬০ বছরে অবসর নেওয়ার চিন্তা ছাড়ুন! কম বয়সে অবসর নিয়েও উপভোগ করুন আরামের  জীবন!

মোটা মাইনের চাকরি তো করেন অনেকেই! কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে টাকা জমাতে পারেন কত জন? আসলে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই ৩০ বছর পর থেকেই ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে শুরু করেন। আর তখনই মাথায় আসে টাকা জমানোর কথা।  ধারণার বশবর্তী হয়েই অনেকে ভাবেন ৬০ বছর বয়সের পর মোটা টাকা সঞ্চয় করা থাকলে আরামের জীবন কাটানো যাবে। কিন্তু  ভুললে চলবে না বয়স বাড়ার সাথে সাথেই  শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক রোগ।

তাই একটা বয়সের পর হয়তো অনেকের জীবনেই  টাকা পয়সার অভাব থাকে না। কিন্তু সে সময় জীবন উপভোগ করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় শারীরিক অক্ষমতা। তাই যদি যৌবনেই  নিজের জীবনটাকে উপভোগ করতে চাইলে রোজগারের পিছনে ছোটা বন্ধ করতে হবে। সেইসাথে খুব অল্প বয়স থেকেই সঞ্চয় করতে হবে পরিকল্পনা মাফিক।

আর এইভাবেই এক  অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন মাত্র ২৯ বছরের যুবক ড্যানিয়েল জর্জ। জানলে অবাক হবেন মাত্র ২৯ বছরেই অবসর নিয়ে আরামের জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। একসময় তিনি এত পরিমাণ টাকা সঞ্চয় করেছেন যে এখন থেকেই  বাকি জীবনটা  তিনি হেসে খেলে আরামে কাটাতে পারবেন।

আসলে ড্যানিয়েল জর্জ এর জীবনের কাহিনী হার মানায় সিনেমা চিত্রনাট্যকেও। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই যখন ৬০ বছর বয়সের  পর অবসর গ্রহণের কথা ভাবেন তখন ড্যানিয়েল জর্জ নামের এই যুবক খুব অল্প বয়স থেকেই টাকা জমানো শুরু করে অবসর নিয়ে নিয়েছেন মাত্র ২৯ বছর বয়সেই। কিন্তু কিভাবে?  আসুন জানা যাক এই বিস্ময় যুবকের এই অজানা কাহিনী। যা এখন অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখা হাজার হাজার যুবক-যুবতীদের।

ড্যানিয়েল জর্জ আইআইটি বোম্বে থেকে, ২০১৫ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সে ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্সে স্নাতক পাশ করেন। পড়াশোনা করার সময় থেকেই অবসরের পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন ড্যানিয়েল। আইআইটি বোম্বে থেকে পাস করার পর মাত্র মাত্র ২৫ বছর বয়সেই কর্মজীবন  শুরু করেছিলেন ড্যানিয়েল। আর চাকরি পেয়েই তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন বেশিদিন চাকরি করবেন না। এরপর  ২০১৮ সালে Google থেকে চাকরির অফার পান ড্যানিয়েল। সেখানে AI ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দিয়েই ২,৬৫,০০০ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ২.২ কোটি টাকা বেতন পেতে শুরু করেন তিনি। সেই থেকেই  টাকা খরচের বদলে টাকা জমানোর দিকেই বেশি জোর দেন এই যুবক।

 

ড্যানিয়েল জানিয়েছেন ‘Google-এর সঙ্গে কাজ করা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। আমি বেশ ভাল টাকা রোজগার করছিলাম, কিন্তু প্রায় ৫০ শতাংশ অর্থই খরচ হচ্ছিল আয়কর দিতে।’ তখনই অবসর তহবিলে টাকা জমানো শুরু করেন তিনি। ড্যানিয়েলের কথায় , ‘আমার উপার্জনের ১০ শতাংশেরও কম খরচ করতাম। বাইকে বা পায়ে হেঁটে কাজে যেতাম। কখনো গাড়ি কিনিনি। দিনে তিনবেলা খাবার খেতাম শুধুমাত্র Google-এ। বন্ধুদের সঙ্গে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম কম ভাড়ায়। বাইরে খাওয়া ছাড়া আর কোনও খরচ ছিল না। কখনও মনে হয়নি খারাপ আছি।’

 

এইভাবেই ড্যানিয়েল প্রতি বছর ট্যাক্স সেভিংস অ্যাকাউন্টে প্রায় ৬২,০০,০০০ টাকা জমা করেন। এরপর কিন্তু তিনি চাইলেই ২০২০ সালে অবসর নিয়ে ভারতে ফিরে আসতে পারতেন। কিন্তুতিনি তা করেননি। আসলে তাঁর স্ত্রীও একজন  AI বিজ্ঞানী। তিনিও Google-এ কর্মরত। বর্তমানে ড্যানিয়েল বিবাহিত এবং তাঁদের  সন্তান-ও রয়েছে।

২০২০ সালে তিনি আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক JP Morgan-এ AI প্রকল্পের বড় দায়িত্ব পান। সেসময় বেতন বাড়লেও তিনি  কিন্তু জীবনযাপনের মান বদলাননি। তাঁর সম্পত্তি বলতে ছিল জামাকাপড়, বিছানা এবং একটি ৫৬ ইঞ্চি টিভি।মাত্র ২৭ বছর বয়সেই ড্যানিয়েল মিলিয়ন ডলারের মালিক হয়ে যান। তাই একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই ২০২৩ সালের অগাস্টে  ড্যানিয়েল চাকরি ছেড়ে শুরু করেন নিজের ব্যবসা। বন্ধুদের সঙ্গে মিলে শুরু করেন স্টার্টআপ ThirdEar AI। এপ্রসঙ্গে ড্যানিয়েল বলেছেন , ‘আমার স্ত্রী, সন্তান রয়েছে তবু এই ঝুঁকিটা নিতে পেরেছি। কারণ আমি নিশ্চিন্ত, আমারই করা বিনিয়োগ আমাকে রক্ষা করবে।’


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *