মদের নেশা

ক্ষতি হবে জেনেও ছাড়তে পারছেন না মদের নেশা? জানেন ২৮ দিন মদ্য পান না করলে কি কি হতে পারে? মদ খাওয়া ছাড়লে শরীরের ওপর কেমন প্রভাব পড়ে জানেন? ৯৯% মানুষই জানেন না মদ্য পান সম্পর্কিত এই তথ্য!

মধ্যবিত্ত বাঙালিদের মধ্যেও এখন অ্যালকোহল পান করা নিয়ে দূর হচ্ছে ট্যাবু। তাই শীতের পিকনিক কিংবা ঘরোয়া পার্টিতেও একটু-আধটু মদ্য পান করে থাকেন সকলেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে পুরুষদের জন্য সারা দিনে ২টো ড্রিঙ্ক  আর মেয়েদের জন্য একটি ড্রিঙ্ক নেওয়া স্বাভাবিক। তবে এর বেশি নয়। তাছাড়া অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। নিয়মিত মদ্য পানও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

নিয়মিত মদ্যপান করলে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে শরীরের। অতিরিক্ত মদ্যপান করলে শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক রোগ।মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে বিস্মৃতি, মানসিক অবসাদ, মেজাজ হারানো, হাইপারটেনশন, গর্ভপাত, ক্যানসারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ক্ষতি হয় লিভারের, মস্তিষ্কের টিস্যু ক্ষয় হয়, হার্টের পেশি দুর্বল হয়ে অ্যারিথমিয়া ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তৈরী হয় হজমের সমস্যা। এছাড়াও লিভার, সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম, হজমক্ষমতা, অগ্নাশয়, হাড় ও মাংসপেশি, ইমিউনিটি, প্রজনন ক্ষমতা সবেতেই পড়ে নেতিবাচক প্রভাব।

ব্যথা বাড়ে :

২০০৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট ১৫০০ জনের উপর করা একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যাঁদের দেহে ব্যথার সমস্যা রয়েছে, তাঁরা অধিকাংশই নিয়মিত মদ্য পান করেন। এমনকি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মদ্য পান করা কমিয়ে দেওয়ার পর ব্যথা কমেছে অনেকেরই।

লিভারের ক্ষতি :

অতিরিক্ত মদ্য পান করলে লিভারে  চাপ পড়ে। যার ফলে ফ্যাটি লিভার কিংবা  সিরোসিস অব লিভারের মতো সমস্যাও হতে পারে। তাই  মদ্য পান করার অভ্যাস কমালেই উন্নতি হয় লিভারের।

স্মৃতি শক্তি কমে :

অ্যালকোহল পান করলে রক্তচাপ বাড়ে আর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহের রক্তনালীও  ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার ফলে স্মৃতি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়।

 

ওজন বৃদ্ধি:

নিয়মিত মদ্য পান করার অভ্যাস ডেকে আনে  ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যাও। তাই ওজন কমানোর জন্য  মদ্যপান নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে।

ঘুমে ব্যাঘাত:

অতিরিক্ত মদ্য পানের অভ্যাস  ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। আর ভালো ঘুম না হলে সকাল থেকেই ক্লান্তি গ্রাস করতে থাকে। তাই মদ্য পান কমালে ঘুম ভালো হয়।

 

কিন্তু কথায় আছে স্বাস্থ্যই সম্পদ। তাই মদ থেকে দূরে থাকলে আখেরে ভালো হবে আপনারই। এক্ষেত্রে ২৮ দিনের একটি চ্যালেঞ্জ নিলেই পার্থক্যটা হাতে নাতে টের পাবেন আপনি নিজেই।

প্রথম সপ্তাহ: রাতে মদ্যপানের সময় মদের সঙ্গে স্ন্যাক্স খাওয়ার পরেও অনেকেই পেট ভরে খাবার খান। তবে মদ না খেলে খিদে কমলেও হয়তো বাড়তে পারে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা। তবে একটু ধৈর্য্য ধরলে এই অভ্যাসও এক মাসের মধ্যে কমানো যাবে।

দ্বিতীয় সপ্তাহ: তবে মদের অভ্যাস ছাড়ার এক সপ্তাহ পর পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো হবে। ঘুম ভালো হওয়ায় তার  ছাপ পড়বে  চোখে-মুখে। চোখের নীচের কালি দূর হওয়ার সাথে সাথেই বাড়বে গন্ধ ও স্বাদগ্রহণের ক্ষমতাও। বদল হবে দাঁতের রং, পরিষ্কার হবে মূত্র।

তৃতীয় সপ্তাহ: তিন সপ্তাহের মধ্যেই  রিকভার করতে শুরু করবে লিভার। নিজে থেকেই পাল্টে যাবে চামড়ার রং। এছাড়া হজম ক্ষমতা বাড়ায় বন্ধ হয় চামড়া কুঁচকে যাওয়াও।

চতুর্থ সপ্তাহ: এই চ্যালেঞ্জের শেষ সপ্তাহেই কমবে ওজন। কার্ডিওভাস্কুলার রোগের পাশাপাশি কমতে শুরু করবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও। মাথা আরও বেশি পরিষ্কার ভাবে কাজ করার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসও ফিরে আসে। সর্বোপরি টাকা বাঁচবে আপনারই।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *