নলেন গুড়

গুড় তো খাচ্ছেন! কোনটা খাঁটি গুড় চেনেন তো? কি দেখে চিনবেন আসল গুড়?  এই ট্রিকস জানলে আপনিও  বুঝে যাবেন ভেজাল গুড় কোনটা? ৯৯% মানুষই জানেন না খাঁটি গুড় চেনার এই সিক্রেট কায়দা! এই উপায় জানলে গুড় কিনতে গিয়ে আর ঠকতে হবে না আপনাকে!

শীতকাল মানেই পিঠে-পুলির সময়। তাই বছরভর এই সময়টার অপেক্ষাতেই  থাকে বাঙালি। সেই যুগ যুগ ধরে বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে পিঠে-পুলির সাথে একাত্ম হয়ে রয়েছে খেজুর গুড় বা নলেন গুড়। এর অনন্য স্বাদ ও গন্ধেই মন ভরে যায় সকলের। এই গুড় দুই রকমের হয়, একটি  ঝোলা গুড়, আরেকটি পাটালি। তবে এখনকার দিনের নলেন গুড় আর আগের মত নেই। ভেজাল মিশিয়েই স্বাদটাই নষ্ট করে দিয়েছে বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় এই ক্লাসিক গুড়ের।

তাছাড়া বেশি শীত না পড়া পর্যন্ত নলেন গুড় পাওয়া যায় না। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েই  অনেক ব্যবসায়ী ভেজাল মিশিয়ে গুড় বেচে। কম খরচে বেশি লাভ করতে এবং গ্রাহকদের আকর্ষণ করতেই  নলেন গুড়ের সাথে এখন দেদার মেশানো হচ্ছে চিনি। নদীয়ার মাজদিয়ার নলের গুড় এখন পৃথিবী বিখ্যাত। তার অন্যতম কারণ মাজদিয়ার এই নলেন গুড় টিউবজাত করে প্রক্রিয়াকরণ করে রপ্তানি করা হয় দেশ-বিদেশের একাধিক জায়গায়।

তবে ইতিমধ্যেই বহু জায়গায় অভিযোগ উঠে এসেছে মাজদিয়ার নলেন গুড়ে নাকি মেশানো হচ্ছে চিনি। শিউলিরা খেজুরের রস গাছ থেকে সংগ্রহ করে এনে তা জাল দিয়ে ফুটিয়ে তৈরি করেন গুড়।কিন্তু এখন অনেকেই খেজুরের রস জাল দেওয়ার সময় তাতে মিশিয়ে দিচ্ছেন চিনি। যদিও এ বিষয়ে অনেকেরই বক্তব্য কলকাতার ব্যবসায়ীরাই নাকি তাদের বলেছেন খেজুরের রসের সাথে চিনি মেশাতে।

খেজুর রসে চিনি মেশালে কি হয়?

একদিকে যেমন এর রং সঠিক থাকে, তেমনি লাভের অংকটাও  অনেক বেশি হয় ব্যবসায়ীদের। তবে চিকিৎসকরা একেবারেই নিষেধ করছেন চিনি মেশানো নলেন গুড় খেতে। কারণ চিনি মেশানো নলেন গুড় খাওয়া নাকি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক যার ফলে সমস্যায় ভোজন রসিক বাঙালি।

কিন্তু আসল নলেনগুড় চেনারও কয়েকটি সহজ উপায় আছে। কিন্তু সেটা কি? জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাই। কিভাবে পার্থক্য করবেন এই  আসল এবং নকল নলেন গুড়ের মধ্যে।

বিশেষজ্ঞদের মতে আসল এবং ভেজাল নলেন গুড়ের প্রথম এবং প্রধান পার্থক্য হবে তার রঙে। আসল নলেন গুড়ের হয় রঙ গাঢ় বাদামি । তাই গুড়ের রঙ হালকা হলে বুঝতে হবে তাতে নিশ্চিত চিনি মেশানো আছে। অনেক সময় রাসায়নিক মিশিয়ে লাল রঙও করা হয়।

দ্বিতীয় পার্থক্য হবে গুড়ের ঘনত্বে। আসল নলেন গুড় অত্যন্ত পাতলা। কিন্তু তার মধ্যে চিনি মেশানো  থাকলে সেই গুড়ের ঘনত্ব বেশি হয়ে যায়।

ভুল করেও গুড়ের গন্ধ শুঁকে মজে যাবেন না কেউ! আজকাল গন্ধের জন্যও ভেজাল হিসেবে গুড়ে   মেশানো হয় রাসায়নিক।

এছাড়াও আসল গুড় সংরক্ষিত করে রাখলে সেই গুড় বহুদিন পর্যন্ত থাকে, কিন্তু চিনি মেশানো ভেজাল গুড় বেশি দিন সংরক্ষিত করা যায় না।

এছাড়াও আসল এবং ভেজাল নলেন গুড় মুখে দিলেই বুঝতে পারেন অনেকে। গুড়ের স্বাদ নোনতা হলে বুঝতে হবে ফটকিরি মেশানো আছে।

এছাড়াও খেজুর গুড়ের পাটালি গুড় কিনতে গেলেও খেয়াল রাখবেন এই গুড় যদি  খাঁটি হয় তাহলে  হালকা চাপ দিলেই ভেঙে যাবে। কিন্তু গুড় যদি শক্ত ডেলা হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে সেই পাটালি খাঁটি নয় ভেজাল মিশ্রিত।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *