অযোধ্যা

রামমন্দির ছাড়াও আর কি কি দর্শনীয় স্থান রয়েছে অযোধ্যায়? জানেন আর কি কি দর্শনীয় স্থান রয়েছে অযোধ্যায়? জানেন অযোধ্যা ছাড়াও ভারতের আর কোথায় কোথায় রয়েছে রামমমন্দির ?

আগামী ২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধন! সেই অপেক্ষাতেই এখন প্রহর গুনছে গোটা দেশ। রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে গোটা দেশ জুড়ে এখন সাজো সাজো রব। সেজে উঠেছে রাম জন্মভূমিও। তবে শুধু কিন্ত রামমন্দির নয় পবিত্র অযোধ্যা ভূমিতে রয়েছে আরও একাধিক দর্শনীয় স্থান। আসুন দেখে নেওয়া যাক অযোধ্যার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলি কি কি?

সীতা রাসোই:

অযোধ্যার রাম মন্দির ছাড়াও এই মন্দিরের  পরিসরেই দর্শনীয় স্থান হিসাবে রয়েছে  সীতা রাসোই। কথিত আছে এখানেই রান্না করতেন দেবী সীতা।

তুলসী স্মৃতিসৌধ:

পবিত্র রাম জন্মভূমিতেই রয়েছে তুলসী স্মৃতিসৌধ। রামচরিত মানসের রচয়িতা স্বয়ং তুলসী দাসের স্মরণে নির্মিত এই ভবনে একটি বিশাল গ্রন্থাগার রয়েছে।

মতি মহল:

অযোধ্যার বিখ্যাত স্থান গুলির মধ্যে অন্যতম মতি মহল। মুঘল আমলে তৈরি স্থাপত্যের সুন্দর নিদর্শন রয়েছে এখানে।

ছোট ছাউনি:

অযোধ্যায় আসা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু হল এই ছোট ছাউনির গুহা।

রাজা মন্দির:

সরযূ নদীর তীরে অবস্থিত রাজা মন্দিরের রাজকীয় সৌন্দর্য  এবং  শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অযোধ্যার আকর্ষণের অন্যতম মূল কেন্দ্রবিন্দু।

বহু বেগম

অযোধ্যার বিখ্যাত স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম  হল বহু বেগমের সমাধি।

সরযূ নদী

সরযূ নদীতে নৌকাবিহার ছাড়া অযোধ্যা ভ্রমণ অসম্পূর্ন থেকে যায়। তাই অযোধ্যায় ঘুরতে গেলে কিন্তু সরযূ নদীতে নৌকাবিহার করতে ভুলবেন না। এখানকার  ঘাটের মনোরম দৃশ্য মুগ্ধ করে পর্যটকদের।

তবে গোটা দেশবাসীর নজর এখন অযোধ্যার রাম মন্দিরের দিকে থাকলেও জানলে অবাক হবেন  সারা দেশে আরও অনেক  রাম মন্দির রয়েছে, যা অনেকের কাছেই অজানা। জেনে নিন ভারতের এই ঐতিহ্যবাহী রাম মন্দিগুলি ভারতের কোথায় অবস্থিত?

কোদানদারামা মন্দির, অন্ধ্রপ্রদেশ

অন্ধ্রপ্রদেশের কাডাপা জেলার ভন্টিমিট্টা শহরে অবস্থিত কোদানদারামা মন্দির নিয়েও রয়েছে এক অজানা গল্প। কথিত আছে ভনটুডু এবং মিটুডু নামে দুই ডাকাত এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিল। পরবর্তীতে তাঁরা ডাকাতি ছেড়ে ভগবান শ্রীরামের ভক্ত হয়ে যান। এই মন্দির এখনও আছে।

এরি কথা রাম মন্দির – মাদুরান্টাকাম, তামিলনাড়ু

রামায়ণের বর্ণনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তামিলনাড়ুর মাদুরান্টাকামে অবস্থিত এরি কথা রাম মন্দিরের। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী  রাবণকে পরাজিত করার পর শ্রীরাম, সীতা ও লক্ষ্মণের সঙ্গে, অযোধ্যায় ফেরার পথে এই জায়গাতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা। পরে এখানেই এই মন্দিরটি স্থাপন করা হয়।

 

রামতীর্থ মন্দির – অমৃতসর, পাঞ্জাব

পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবস্থিত রামতীর্থ মন্দিরের সাথে জড়িয়ে রয়েছে ভগবান রাম ও সীতার পুত্র লব ও কুশ-এর জন্ম স্মৃতি। এই  মন্দিরটিতে এমন একটি প্রাচীন কূপ আছে যে  কূপের জলের নাকি রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা আছে। বলা হয়,  শ্রীলঙ্কা বিজয়ের পর ঋষি বাল্মীকি মাতা সীতাকে এই মন্দিরে আশ্রয় দিয়েছিলেন।

 

ত্রিপ্রয়ার শ্রীরাম মন্দির – কেরালা

প্রচলিত জনশ্রুতি অনুযায়ী কেরালার ত্রিশূর জেলার এই ত্রিপ্রয়ার শ্রী রামস্বামী মন্দিরেই শ্রীরামের মূর্তি প্রথম পুজো করতেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। একসময়  মূর্তিটি সমুদ্রে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। পরে কেরালার সমুদ্র থেকে বেশ কিছুজন জেলে সেই  প্রতিমা উদ্ধার করেছিলেন। এরপর স্থানীয় শাসক ভাক্কাইল কাইমল ত্রিপ্রয়ারে একটি মন্দির নির্মাণ করে এই মূর্তিটি স্থাপন করেছিলেন।

 

রাম রাজা মন্দির- মধ্যপ্রদেশ

মধ্যপ্রদেশের অরখায় অবস্থিত এই রাম রাজা মন্দিরটি আসলে এটি রাজপ্রাসাদ ছিল। যা সপ্তদশ শতাব্দীতে মন্দিরে রূপান্তরিত হয়।  এই মন্দিরটিতে বিস্ময়কর রাজপুত স্থাপত্য এবং রামায়ণের দৃশ্য চিত্রিত রয়েছে। এই মন্দিরে ভগবান রামের মূর্তি  পদ্মসনে বসে হাতে তলোয়ার ও ঢাল নিয়ে বিরাজমান রয়েছেন। ভগবান রামকে এই রাজ প্রাসাদের রাজা বলে পুজো করা হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন এখানে রাজকীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন হয়।

শ্রী বিজয়রাঘব পেরুমাল মন্দির – তামিলনাড়ু

কথিত আছে তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরম জেলার তিরুপুকুঝিতে অবস্থিত এই মন্দিরের গর্ভগৃহে, ভগবান জটায়ু ভগবান বিজয়রাঘব পেরুমালের কোলে রয়েছেন। শ্রীরামচন্দ্র নাকি এখানেই  জটায়ুর শেষ কৃত্যানুষ্ঠান পালন করেছিলেন ।

কোদান্ডা রাম মন্দির- চিকমাগালুর, কর্ণাটক

পুরাণমতে, দেবী সীতার সঙ্গে বিয়ের বেশেই ভগবান রাম পরশুরামকে দর্শন দিয়েছিলেন। সেখানেই পরবর্তীকালে তৈরী করা হয়  কর্ণাটকের চিকমাগালুরের পাহাড়ের এই কোদান্ডা রামস্বামী মন্দির।

রঘুনাথ মন্দির – জম্মু

মহারাজা গুলাব সিং নির্মিত ১৯ শতকের এই মন্দিরটি অযোধ্যার মন্দিরের প্রতিরূপ। এই মন্দিরের বেলে পাথরের ভাস্কর্য এবং সোনার প্রলেপযুক্ত গম্বুজের আকর্ষণেই প্রতি বছর এই মন্দিরে হাজার হাজার ভক্ত  সমাগম হয়।

 


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *