যমজ সন্তান

জানেন কাদের যমজ সন্তান হয়?  কী কী কারণে যমজ সন্তান জন্মাতে পারে? পুষে রাখবেন না ভুল ধারণা! কি বলছে বিজ্ঞান? জেনে নিন যমজ সন্তানের মা’কে চেনার লক্ষণ গুলি কি কি? যমজ সন্তান কয় ধরনের হয়? জানুন সত্যিটা?

এখনকার দিনে একটা সন্তান মানুষ করতেই হিমশিম খেয়ে যান অনেকে! আবার কেউ কারও কারও  শখ থাকে যমজ সন্তানের মা হওয়ার। বিশেষ করে যাদের দুটি বাচ্চার নেওয়ার ইচ্ছা থাকে তারা দুবার গর্ভধারণের ঝক্কি  এড়াতেই  যমজ সন্তানের মা হতে চান। তবে এখনকার দিনে বেশিরভাগ কর্মরত মহিলাই মা হয়ে থাকেন বছর ৩০-এর পর। কিন্তু বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে তা বাড়িয়ে দেয় যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা।

তাছাড়া এখনকার দিনে বাড়ছে আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার প্রবণতা। কিন্তু অনেকের মনেই কিছু ভুল ধারণা রয়েছে এই আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা নিয়ে। আসলে বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে এই যমজ সন্তান হওয়া, যার পিছনে রয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণও। তাই জানা প্রয়োজন আইভিএফ পদ্ধতি  মানেই কিন্তু যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় না। আসুন দেখে নেওয়া যাক, কী কী কারণে যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

১) মায়ের পরিবারে দিকে যমজ সন্তান থাকলে,  যমজ সন্তান জন্মের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তবে বাবার দিকে থাকলে কিন্তু সেই সম্ভাবনা থাকে না। এর একটি বিজ্ঞানসম্মত কারণ-ও আছে। আসলে অনেক মহিলার শরীরে দুই বা তার থেকে বেশি সংখ্যায় ডিম্বাণু উৎপাদন হয়। যা হাইপার ওভিউলেশন নাম পরিচিত। মেয়েদের মধ্যে এই প্রবণতা মায়ের ডিএনএ থেকেও আসতে পারে। এক্ষেত্রে যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

২) মায়ের বয়স বাড়লে  যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে। তাছাড়া বেশি বয়সে গর্ভবতী হলেও যমজ সন্তানের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই হবু মায়ের বয়স ৩৫ বা ৪০ বছরের বেশি হলে এমনটা হয়ে থাকে। কারণ এই সময় মায়ের শরীরে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে  যায়। এরফলে  প্রতি সাইকলে একটির বদলে একাধিক ডিম্বাণু বেরোতে পারে। তাই যত বেশি ডিম্বাণু বের হয় তত বেশি সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে। তাই দুটো তো বটেই, কখনও তিনটে সন্তানও জন্ম নিতে পারে।

৩) এছাড়া যেসব মহিলাদের পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার দিকে তাদের যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আসলে ওই সময় শরীরের কিছু হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে শুরু করে, তাই যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৪) বিভিন্ন সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে স্থৃলতার সমস্যা থাকলেও যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে যাদের বডি মাস ইনডেস্ক (বিএমআই) ৩০-এর ওপর, তাঁদের যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।এছাড়াও যে যত লম্বা হবেন, কিংবা যার  যত ওজন বেশি হবে তার   যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা বেশি।

৫) যাদের আগেই একটি বা দুটি সন্তান থাকে তারা গর্ভবতী হলে  যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৬) এছাড়া  বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় যে সমস্ত ওষুধ ব্যবহার করা হয় তা প্রতি সাইকল এ ডিম্বাণুর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই কে কোন ধরনের চিকিৎসা করাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে যমজ সন্তান তো বটেই কখনও  তিনটে সন্তানও জন্ম নিতে পারে।

যমজ সন্তান দু’ধরনের হয়। একদল আছে যারা  আইডেন্টিকাল টুইন বা মনোজাইগটিক টুইন। এই যমজ বাচ্চারা দেখতেও হুবহু এক রকম হয়। আচার ব্যাবহারেও মিল থাকে অনেক।  যখন একটি ডিম্বাণু একটি শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত হওয়ার পর ভেঙে গিয়ে দুটি ভ্রূণে পরিণত হয় তখন এই ধরনের যমজ বাচ্চা জন্মায়।

আবার কখনও কখনও চেহারা ও স্বভাবে সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী যমজ সন্তানও জন্মায়। এঁদের জন্ম হয়  জন্মায় দুটি আলাদা ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনে। এরা  ফ্র্যাটেরনাল টুইন বা ডাইজাইগোটিভ টুইন।

 


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *