রাম মন্দিরের টানে, পা হারানো, এক ক্যান্সারজয়ী যুবক, সাইকেল চালিয়ে অযোধ্যা যাচ্ছেন! যুবকের ভক্তি দেখে শিহরিত গোটা দুনিয়া!

রাম মন্দিরের টানে, পা হারানো, এক ক্যান্সারজয়ী যুবক, সাইকেল চালিয়ে অযোধ্যা যাচ্ছেন! যুবকের ভক্তি দেখে
শিহরিত গোটা দুনিয়া!

রাম মন্দিরের টানে, পা হারানো,
এক ক্যান্সারজয়ী যুবক, সাইকেল চালিয়ে
অযোধ্যা যাচ্ছেন!

বিনা খাবারে, বিনা পয়সায়
ছুটছেন রাম নগরীর দিকে!

জোরে জোরে দিচ্ছেন
জয় শ্রী রাম ধ্বনি!

ভগবান রামের প্রতি যুবকের ভক্তি দেখে
শিহরিত গোটা দুনিয়া!

যুবকের গল্প শুনলে,
গায়ে কাঁটা দেবে আপনারও

হাতে গুনে গুনে মাত্র আর কটা দিন । তারপরই রাজকীয় আয়োজনে উদ্বোধন হবে রাম মন্দির । গোটা বিশ্ববাসীর জন্য খুলে যাবে রাম মন্দিরের দোয়ার। আর এই নিয়ে গোটা দেশে হইহই রইরই ব্যাপার । আর হৈচৈ মাত্রা আরো দ্বিগুণ করে দিল এক পা হারানো যুবক । এই যুবক রামচন্দ্রের জন্য যা করলেন তা শুনে আপনার চোখের জল আটকে রাখতে পারবেন না । এমন রাম ভক্ত লাখে একটি হয়। এই রাম ভক্তের রাম প্রীতি দেখলে আপনারা সবাই হয়ত এটাই বলবেন, ইচ্ছে থাকলে উপায় আসে বাহানা তো ছুতো মাত্র! একদমই তাই। উত্তর ২৪ পরগনাবাসী এই তরুণ রাম ভক্ত এই নীতিবাক্য বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন।

এই যুবক আর পাঁচটা সাধারণ যুবকের থেকে একেবারে আলাদা। কারণ সে সত্য ক্যান্সারকে হারিয়ে, ক্যান্সার জয়ী হয়ে উঠেছে। তবে ক্যান্সার কে হারাতে গিয়ে তার একটি পা বাদ গিয়েছে। কিন্তু তাতে কি! সঙ্গে থাকা একটি পা নিয়েই ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের দর্শনে বেরিয়ে পড়ে এই যুবক।

যুবকের মতে, একটি পা দিয়েই সাইকেল চালিয়ে মাইলের মাইল পথ পার করবেন। আসলে।একেই বলে আসল লড়াই । এই লড়াকু যোদ্ধার নাম সৌমিক গোলদার। পা নেই তো কি হয়েছে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কি ভাবে দৌড়াতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছে এই যোদ্ধা। বছর বাইশের এই তরুণ গোবরডাঙ্গা কলেজের ছাত্র । মাত্র ২২ বছর বয়সেই তিনি তার ডান পা হারিয়েছেন। যেখানে এই বয়সের ছেলেরা ফুটবল খেলে বেড়ায় , ক্রিকেট খেলে বেড়ায় সেইখানে এই তরুণ তার আসল সম্পদ পাটাই হারিয়ে ফেলেছেন । ২০২০ সালের আগে অবধি আর সাধারণ পাঁচটি ছেলের মতোই সে জীবন যাপন করত। কিন্তু ২০২০ সালটি তার জীবনে প্রথম ঝড় তোলে । সেই বছরই প্রথম ডান পায়ে তার টিউমার ধরা পড়ে । ভেলোরে চিকিৎসা করানো হলে তিনি সুস্থ হয়ে যান । তারপর থেকে এই তরুণ স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করলেও মাঝেমধ্যে একটু অসুবিধা হতো। কিন্তু গত বছর ঘটে একটি ভয়ানক দুর্ঘটনা, এই দুর্ঘটনায় পুরো জীবন তছনছ হয়ে যায় সৌমিকের। স্কুটার নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পায়ে স্টিলের পাত বসাতে হয়। আর ধীরে ধীরে এই স্টিলের পাত থেকে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে পুরো পায়ে এবং সেই সংক্রমণই ক্যান্সারে পরিণত হয়। ভেলোরে আবার চিকিৎসা করাতে নিয়ে গেলে , ডাক্তাররা হাত তুলে দেয়। সব জানিয়ে দেন পা বাদ দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। অগত্যা , শেষপর্যন্ত হাঁটুর নিচ থেকে পা বাদ দিতে হয় । এদিকে এত কিছুর পরেও থেমে থাকেনি সৌমিক। রাম ভক্ত সৌমিকের দীর্ঘকালের ইচ্ছা রাম মন্দির দর্শন করবে নিজে চোখে। ছোট থেকেই ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের প্রতি তার একটা আলাদাই টান। তাই একটি পা না থাকা স্বত্বেও, নিজের স্বপ্নকে মরে যেতে দেননি। বরং এক পায়ের উপর নিজের ছোটবেলার স্বপ্নকে চাপিয়ে দিয়ে অযোধ্যার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছেন। সঙ্গী কেবল একটি সাইকেল। আর সৌমিত্রর এই স্বপ্নপূরণে সঙ্গ দিচ্ছেন তার বাবা মা এবং বন্ধু রাকেশ । প্রতিনিয়ত তাকে একটু একটু করে এগিয়ে দিয়েছে তার ইচ্ছাপূরণের দিকে। এই ইচ্ছে পূরনের জন্য কয়েকদিন আগে ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিয়ে বন্ধু রাকেশকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দিয়েছে অযোধ্যার উদ্দেশ্যে । পথে পথে ধেয়ে আসছে অনেক বিপদ , সাইকেল চালাতে পা ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে , পায়ের রগ ফুলে যাচ্ছে , কিন্তু তা সত্বেও সাইকেলের প্যাডেল থামেনি তার,,,এই প্যাডেল থামবে ২২ শে জানুয়ারী । যেদিন রাম মন্দির দর্শন সম্পন্ন হবে, সেদিন : জয় শ্রী রাম ‘ ধ্বনি দিয়ে সৌমিত্রর প্যাডেল থামবে।

সত্যিই আজকালকের যুগে এমন প্রকৃতভক্তের সন্ধান সত্যি পাওয়া দুষ্কর। সৌমিকের মত ভক্তদের দেখা পাওয়া বড়ই ভাগ্যের । এই সাহসী সৌমিকের প্রতি বাংলা হান্টের পক্ষ থেকে রইলো শুভেচ্ছা। সৌমিত্র যেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে সুস্বাস্থ্যে বাড়ি ফিরতে পারে সেই কামনাই রইল।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *