টুনির মা গানের গায়ককে মনে আছে? আচমকাই মিডিয়া থেকে ভ্যানিশ এই গায়ক! এখন কোথায় আছেন এই গায়ক? কিভাবে চালাচ্ছেন সংসার?
টুনির মা গানের গায়ককে
মনে আছে?
আচমকাই মিডিয়া থেকে
ভ্যানিশ এই গায়ক!
টুনির মা গাওয়ার পর
আর দেখাই যায়নি তাকে!
সুপারহিট গান গেয়েও
কাজ জোটেনি কপালে!
এখন কোথায় আছেন এই গায়ক?
কিভাবে চালাচ্ছেন সংসার?
“ও টুনির মা” এই গানটি শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর! আপনি ৮ থেকে ৮০, যে কাউকে শুধু,, এই গানটি শুনেছেন কিনা একবার জিজ্ঞাসা করে দেখুন, সবাই মাথা নেড়ে এক বাক্যে হ্যাঁ বলবে। রিলিজের পর থেকেই এই গানটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, কচি থেকে বুড়ো সবার ফোনে ফোনে এই গানটি বাজত। ২০০৯ সালে এই গানটি রিলিজ হয়। গানটি গেয়েছিলেন ওপার বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশের গায়ক প্রমিতকুমার। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সালেও গানটি তুমুল ভাবে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। গানটির জনপ্রিয়তা একটুও কমেনি। এই গানটি গাওয়ার পর,, গায়ক প্রমিতকুমারের গোটা জীবন বদলে গিয়েছিল। রাতারাতি সুপারস্টার হয়ে গিয়েছিলেন “টুনির মার” গায়ক।
তথ্য সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গানটি গাওয়ার সাথে সাথে প্রমিত কুমার নিজেই এই গানটি লিখেছিলেন। প্রথম দিকে তিনি গানটি লিখেছিলেন কেবল মাত্র জনপ্রিয়তা ও অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে। হাতে টাকা পয়সা না থাকায়, গান লেখাটাকে অর্থ উপার্জনের রাস্তা হিসেবে বেছে নেয় প্রমিত। আর এভাবেই একদিন টুনির মা গানটি লিখে ফেলেন। গানটির লেখার পর বাঁধে বড়সড় বিপত্তি! তিনি যখন গানটি রেকর্ডিং এর জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্টুডিওতে যান, সেখানে তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাকে বলা হয় টুনির মা গানটি একেবারেই চলবে না।।এই ধরনের গান, সঙ্গীত জগতের অপমান। অনেকেই তাকে এই গানটির জন্য নানা রকম কুকথাও শোনান। কেউ কেউ তাকে বলেন, তার গায়ক হওয়ার কোনো প্রকার যোগ্যতাই নেই। তবে লোকের গালমন্দ শুনে হেরে যাননি প্রমিত। শেষমেষ তিনি এক স্টুডিওতে গিয়ে গানটি রেকর্ডিং করেন। এরপর গানটির অ্যালবাম রিলিজ হয়। প্রমিতের ইচ্ছে ছিল, অ্যালবামের নাম টুনির মা রাখা হোক। কিন্তু প্রমিতের ইচ্ছে পূরণ হয়নি। বউ আমার চেয়ারম্যান নামে অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়।
টুনির মা গানের অ্যালবামটি রিলিজ হওয়ার পর ঘটে সবচেয়ে অবাক করা কান্ড। গানটি রিলিজ হওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়ে যায়। সে সময় ফেসবুক কিংবা ইন্টারনেট তেমন সহজ লভ্য ছিল না। তখন সিডির দোকানে ক্যাসেট বাজিয়ে গানের প্রচার করা হতো। এভাবেই, টুনির মা গানটি বাজানো হলেই লোকেদের ঠিক থেকে ভিড় জমে যায় ক্যাসেটের দোকানে। সকলের মুখে মুখে, ঘরে ঘরে, ফোনে ফোনে ছড়িয়ে পড়ে টুনির মা গানটি। ক্যাসেটের দোকানে গিয়ে ৮ থেকে ৮০, কচি থেকে বুড়ো, সকলেই ফোনের মধ্যে টুনির মা গানটি ডাউনলোড করতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে মুড়ি মুড়কির মতন বিক্রি হতে থাকে টুনির মা গানের ক্যাসেট। এই গানের জনপ্রিয়তা বাংলাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভারতেও ঢুকে পড়ে। বিয়েবাড়ি থেকে শুরু করে পুজোর প্যান্ডেল সর্বত্র এই গানের আধিপত্য টের পাওয়া যায়। এখনও,, পাড়ার পিকনিক থেকে শুরু করে দশমীর ভাসান ড্যান্স, সবেতেই টুনির মা শোনা যাবেই যাবে। এই টুনির মায়ের হাত ধরে প্রমিতকুমারের ঘরেও বেশ ভালোই আয় উন্নতি ঘটে। কিন্তু টুনির মার গায়ক প্রমিত কুমার এক সময় নিজেই গান বাজনা থেকে সরে আসেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান ভালো পারিশ্রমিক না পেলে এবার থেকে তিনি আর গান করবেন না। মনের মতন পারিশ্রমিক না জোটাই তিনি গান থেকে দূরত্ব তৈরি করেছেন। বর্তমানে গান ছাড়াও আরো অন্যান্য পেশার সঙ্গে তিনি জড়িত রয়েছেন। সেখান থেকেই উপার্জন করছেন। তবে,, আবার কবে,,, টুনির মায়ের মতন হিট গান উপহার দেবেন সেই নিয়ে এখনো পর্যন্ত কিছু জানাননি এক কালের এই জনপ্রিয় গায়ক।
Leave a Reply