বিপজ্জনক পেশা

জানেন সবচেয়ে বিপজ্জনক পেশা কোনটি? জানেন কোন পেশায় পদে পদে অপেক্ষা করছে বিপদ? কোন পেশায় রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি? জানেন পৃথিবীতে এমন ১০ টি বিপজ্জনক পেশা আছে যার জন্য প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটে বহু মানুষের।

বিশ্বব্যাপী বিপদ সর্বত্র! কিন্তু বিপদের ভয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকেন না কেউই। তাই পেটের দায়ে সব মানুষকেই কাজ করতে হয়! তার জন্য জীবন বাজি রেখেও ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না কেউই। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক কিংবা কোনো হিংসামূলক পরিস্থিতি সব পরিস্থিতিতেই মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকেন বিশ্বের এই সমস্ত বিপজ্জনক পেশার মানুষরা। সারা পৃথিবীতে এমন কিছু বিপজ্জনক পেশা আছে যার ফলে বছর বছর প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটে বহু মানুষের।

পাইলট এবং ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার

বিমান পরিচালনা করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি পেশা। এই পেশায় সামান্য মনো সংযোগের অভাব ঘটলে কিংবা ছোটখাটো কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি ঘটলে বড় সড় বিপদ ঘটতে পারে।  রেকর্ড বলছে প্রত্যেক ১ লক্ষ পাইলটদের  মধ্যে মৃত্যুর হার  থাকে প্রায় ৫৫ শতাংশ।

গাছ কাটার শ্রমিক

গাছ কাটার শ্রমিকদের কাজটাও সহজ নয় একেবারেই।  প্রতিনিয়ত ভারী যন্ত্রপাতি আর বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের সাথে  মোকাবিলা করে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভারী ভারী সব গাছ কাটার কাজ করে থাকেন এই শ্রমিকরা। পৃথিবীর বিপজ্জনক পেশা গুলির মধ্যে এটি অন্যতম। পরিসংখ্যানের বিচারে এই মারাত্মক কাজের জন্য প্রত্যেক ১ লক্ষ শ্রমিকের মধ্যে ৮২ জনই  মারাত্মকভাবে আঘাত পান।

জেলে :

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জলের মধ্যে ভারি ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করা জেলেদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। নিজের  জীবন বাজি রেখেই ঝাঁপিয়ে পড়েন অসংখ্য মানুষ। ILO’র পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য শাখার রিপোর্ট অনুযায়ী অনুমান করা হয়  মাছ চাষের জন্য সারা বিশ্বে প্রতিবছর ২৪ হাজার জেলেদের প্রাণহানি ঘটে।

 

নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত শ্রমিক:

বিশাল উচ্চতা, ভারী ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে বিপজ্জজনক পদার্থের সংস্পর্শে কাজ করতে হামেশাই একাধিক বিপদের সম্মুখীন হতে হয় শ্রমিকদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই পেশার সাথে যুক্ত ৪৫% মানুষের পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়।

ছাদ ঠিকাদার :

এঁরা মূলত ছাদ নির্মাণে বিশেষজ্ঞ হন। বিটুমিন, ধাতু সহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে এঁরা ভবনের ছাদ প্রতিস্থাপন এবং মেরামতের কাজ করে থাকেন। বিশাল উচ্চতায় প্রতিকূল পরিবেশে এই কাজ করার কারণে  উচ্চতা থেকে পড়ে যাওয়ার ব্যাপক ঝুঁকি থাকে।

 

ট্র্যাক ড্রাইভার :

ঘন্টার পর ঘন্টা হাইওয়েতে ট্র্যাক চালানোও যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। একটানা ট্র্যাক চালাতে গিয়ে ক্লন্তি ভাব আসলে কিংবা আচমকা কোনো দুর্ঘটনার সুম্মুখীন হলে প্রাণহানির ঘটনা পর্যন্ত ঘটতে পারে। পরিসংখ্যানের বিচারে প্রত্যেক বছর  সড়ক দুর্ঘনায় মৃতদের মধ্যে ১০%-ই ট্র্যাক চালক।

লোহা এবং ইস্পাত শ্রমিক :

লোহার মতো ধাতু গোলানো, বিশাল উচ্চতায় কাজ কিংবা ভারী যন্ত্রপাতি পরিচালনা করা শ্রমিকদের এই কাজকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। সব মিলিয়ে বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করার জন্য প্রতি বছর এই পেশার সাথে যুক্ত বহু শ্রমিকের প্রাণ হানি ঘটে।

কৃষক :

ভারত মানেই কৃষি প্রধান দেশ। তাই আমাদের দেশে কৃষকরাই হলেন আমাদের অন্নদাতা। দেশবাসীর মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য প্রতিকূল পরিবেশে হাড় ভাঙা পরিশ্রম করেন আমাদের দেশের কৃষকরা। তার জন্য ভারী ভারী যন্ত্রপাতি পরিচালনা করা,বিভিন্ন রাসায়নিক সারের  সংস্পর্শে আসা ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষতিকারক প্রাণীও ভয়ানক বিপদ ডেকে আনতে পারে।

বৈদ্যুতিক লাইনের শ্রমিকরা:

হাই ভোল্টেজ  বিদ্যুৎ নিয়ে বিরাট উঁচুতে যেসব শ্রমিকরা কাজ করেন তাঁদের জীবনেও বিপদ সারাক্ষণ ওঁৎ পেতে থাকে। মার্কিন জাতীয় লাইনম্যান সার্ভে এবং ইউটিলিটি কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী  ১ লক্ষ বিদ্যুৎ শ্রমিকের মধ্যে প্রত্যেক বছর ৪২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা এবং আইন রক্ষক: 

দেশকে শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখতে এবং ন্যায়বিচার করার জন্য পুলিশ কর্তাদের অবদান অপরিহার্য। তাঁরাই আমাদের দেশের আইনের রক্ষক। তাই কোথাও কোন অন্যায়-অত্যাচার কিংবা জুলুম তা কড়া হাতে দমন করাই একজন দায়িত্বশীল পুলিশ অফিসারের কাজ। তবে নিজের কর্তব্যের প্রতি সৎ থাকার জন্য এই কাজে প্রতি পদে ঝুঁকি থাকে একজন পুলিশ অফিসারের। আর এই পেশায় মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক বেশি হয়।

 


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *