পৃথিবীর এই ১০ শীতলতম দেশের নাম

পৃথিবীর এই ১০ শীতলতম দেশের নাম শুনলেই ঠান্ডায় কাঁপাবেন শীত কাতুরেরা! জানেন বিশ্বের শীতলতম স্থান কোনটি?  জানেন পৃথিবীর শীতলতম শহরের নাম?

মুড সুইং শেষ! অবশেষে শীত প্রেমীদের মনের মতো কনকনে ঠান্ডা পড়েছে বাংলায়। কিন্তু শীত কাতুরে মানুষরা এতে বেশ সমস্যাতেই পড়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুরু হয়েছে সামার লাভার ভার্সেস উইন্টার লাভারদের তরজা। কলকাতায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ১৪ সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে। কিন্তু জানলে অবাক হবেন আমাদের পৃথিবীতে এমনও জায়গা আছে যেখানকার গড় তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এর চেয়েও অনেক কম তাপমাত্রা আছে পৃথিবীর অনেক দেশেই। আসুন দেখে নেওয়া যাক পৃথিবীর এমন কিছু দেশের তালিকা যেখানকার শীতকালীন তাপমাত্রা কলকাতায়  বসে আন্দাজ করা  কল্পনারও অতীত।

১০. ইস্তোনিয়া

পৃথিবীর শীতলতম দেশগুলির এই তালিকায় দশম স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড এবং বাল্টিক সি-এর মাঝখানে অবস্থিত এই দেশটি। এখানকার মানুষরা কনকনে ঠান্ডায় নিজেদের রোজকার জীবনের কাজটুকুও করতে পারেন না। শীতের মরশুমে এখানকার তাপমাত্রা -৩ ডিগ্রি থেকে -৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে যায়। তবে গরমকালে ইস্তোনিয়ার তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাত এই দেশে প্রায় হয় না বললেই চলে।

৯. ফিনল্যান্ড

পৃথিবীর শীতলতম দেশের তালিকায় নবম স্থানেই রয়েছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ফিনল্যান্ড। শীতকালে এই দেশের তাপমাত্রা নেমে যায় ০ ডিগ্রি থেকে -৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।

৮. মঙ্গোলিয়া
মধ্য এশিয়ার দেশ মঙ্গোলিয়ার নাম রয়েছে অষ্টম স্থানে। গরমকালেই এই দেশের তাপমাত্রা থাকে ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা শীতকালে নেমে দাঁড়ায়-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

৭. আইল্যান্ড
আইল্যান্ড হল পৃথিবীর এমন এক বৈচিত্র্যময় দেশ যেখানকার দুই মেরুতে দু ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করে। তাই দেশের দক্ষিণ দিকের তুলনায় উত্তর দিকে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। যা কখনও কমে গিয়ে -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও চলে যায়।

৬. গ্রিনল্যান্ড

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রীনল্যান্ডে সূর্যের আলো পড়ে না বললেই চলে। সারা বছরই বরফে মোড়া  থাকে এই দ্বীপ। গরমকালেই এখানকার সর্বোচ্চ  তাপমাত্রা থাকে -৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তর গোলার্ধে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এই  গ্রিনল্যান্ডের ক্লিঙ্ক ওয়েদার স্টেশনে।

৫. আমেরিকা

পৃথিবীর শীতলতম দেশ গুলির তালিকায় পঞ্চম স্থানেই রয়েছে উত্তর আমেরিকা। এই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই দেশের আলাস্কাতেই সবচেয়ে কম তাপমাত্রা থাকে।

৪. কাজাকস্তান

রাশিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করা কাজাখস্তানের আয়তন ২.৭ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। তবে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ৫.৯৪! এই দেশে সর্বক্ষণের সঙ্গী শীত। এখানে প্রায় সারাবছরই অত্যাধিক তুষারপাতের সাথেই বৃষ্টি দোসর হয়। পাহাড় পর্বতে ঘেরা এই দেশে  গরমকালেও এই তাপমাত্রার খুব একটা হের ফের হয় না এই দেশে। এই দেশে প্রচন্ড শীতের প্রকোপে প্রায়ই মৃত্যু হয়  অনেক বাসিন্দার।

৩. কানাডা

কানাডায় বছরের ৫মাস থাকে  শীতকাল। এই দেশের  সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই দেশেও  গরমকালে তাপমাত্রার তেমন কোনো পার্থক্য হয় না বললেই চলে

২. রাশিয়া

এই দেশের মানুষরা মাত্র ২ মাসের জন্য সূর্যের উপস্থিতি টের পান। এই দেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই বছরের ৮ মাস বরফাচ্ছন্ন এবং ১০ মাস শৈত্য প্রবাহ থাকে। এখানে  গরমকালে তাপমাত্রা থাকে -৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতকালের তাপমাত্রার -১০ ডিগ্রিতে ওঠানামা করে। গা গরম রাখতে এখানকার বাসিন্দাদের সোয়েটার নয় প্রয়োজন হয় ভদকা (নেশার পানীয়)। রাশিয়ার পূর্ব সাইবেরিয়ার ওয়মিয়াকন গ্রামটি পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম স্থান, যেখানে মানুষ স্থায়ীভাবে বাস করেন। এখানে যারা বাস করে, তারা মূলত পেশায় হরিণ পালক। এছাড়াও বিশ্বের শীতলতম শহর হল রাশিয়ার ইয়াকাটস্ক শহর।

১. আন্টার্টিকা

দক্ষিণ মেরুতে অবস্থিত বিশ্বের শীতলতম মহাদেশ হল আন্টার্টিকা। বছরভর সূর্যের দেখা মেলে না এখানে। এখানকার  সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হল -৮৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন শীতল আবহাওয়ার কারণে আন্টার্টিকাকে শীতল মরুভূমিও বলা হয়। এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ মিলি মিটার! এই মহাদেশের চরম তাপমাত্রায়ও পেঙ্গুইন, সিল, বিভিন্ন শৈবাল এবং তুন্দ্রা উদ্ভিদ বেঁচে থাকতে পারে। জানলে অবাক হবেন এই মহাদেশের কোনো নিজস্ব বাসিন্দা নেই।  গবেষণা করার জন্যই এখানে  ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন দেশের মানুষ। এটাই একমাত্র মহাদেশ, যেখানে কোনো দেশ বা দেশের কোনো রাজধানী নেই! বর্তমানে পৃথিবীর শীতলতম স্থান পূর্ব অ্যান্টার্কটিকার মালভূমি।একানকার  তাপমাত্রা নাকি মাইনাস ৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত-ও নেমে যেতে পারে। কিন্তু অতীতে ২০১০ সাল পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকার ভস্টক রিসার্চ স্টেশন ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম স্থান।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *