ভারতেই থাকেন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ভিক্ষুক! ভারতীয় ভিখারিদের আয় শুনলে লজ্জা পাবেন কোটিপতিরাও! দেখতে ভিখারি হলেও আয় করেন লাখে! ভারতীয় এই ভিখারিদের আয় শুনলেই ঘুরবে মাথা! ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে কোন কোন অনৈতিক কাজ চলে জানেন? ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে কত টাকার লেনদেন হয়, জানলে পিলে চমকে উঠবে আপনারও!
রাস্তাঘাটে,মন্দিরে কিম্বা ট্রেনে-বাসে ভারতের যে কোনো প্রান্তে গেলেই দেখা মেলে ভিক্ষুকদের। ভিক্ষা করেই পেটের ভাত জোটে দেশের বহু ভিক্ষুকদের। কিন্তু জানলে অবাক হবেন এই ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালেই চলে এক বিরাট চক্র। যার উপর নির্ভর করেই মাস গেলে মোটা টাকা আয় হয় তাদের। তাই রাস্তাঘাটে হঠাৎ নজরে পড়ে গেলে কিংবা গাড়ির কাঁচে টোকা দিয়ে হাত পেতে যখনই ওরা বলে, ‘কিছু দাও না’, তখনই টাকার পরিবর্তে ওদের কোথাও বসিয়ে খাওয়াতে গেলে খেতে চায় না ওরা। কারণ ওদের টাকাই চাই।
আসলে দোষটা ওদের নয়। এভাবেই ট্রেনিং দেওয়া হয় ওদের। দলের মাথার নির্দেশে এমনটা করতেই বাধ্য ওরা। তাই পরনে ময়লা জামা কাপড় কিংবা হাতে থালা বাটি থাকা মানে যে সত্যিই ভিখারি তার কিন্তু কোন মানে নেই। জানলে অবাক হবেন আমাদের দেশেই বাস করে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ভিক্ষুক।
আমাদের দেশে এমন অনেক ভিক্ষুক রয়েছেন যাঁদের মাসিক আয় শুনলে লজ্জা পাবেন সরকারি কর্মচারী থেকে বড় বড় কর্পোরেট জয়েন্টরাও।শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এই সমস্ত ভিক্ষুকদের মাসিক আয় ৫ লক্ষ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা। দেশের এই সমস্ত ভিক্ষুকদের সংখ্যাটাও ইতিমধ্যেই ছুঁয়ে গিয়েছে কয়েক লাখের গণ্ডি। কিন্তু এই ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে যে সমস্ত অনৈতিক কাজকর্ম চলছে তা সম্পর্কে অবগত নন অনেকেই।
তাই সম্প্রতি এই ভিক্ষাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করার আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কিছু উঁচু শ্রেণির ‘এলিটিস্ট মনোবৃত্তি’র মানুষ ভিক্ষাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। তাঁদের যেন জীবনে এটা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। সুপ্রিম কোর্টের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালেও এই একই ধরনের একটি আবেদন জানানো হয়েছিল। ওই মামলাতেও ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এম আর শাহের ডিভিশন বেঞ্চ।
তাই এবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছে ২০২১ সালে এই সংক্রান্ত মামলায় রায়ের পরেও কেন শীর্ষ আদালতে আবার কেন একই ধরনের আবেদন করা হল, তার জবাব দিতে হবে মামলাকারীকে। এক্ষেত্রে অকাট্য যুক্তিসহ এক মামলাকারী সমস্ত তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন ভারতে মোট ২৫ জন এমন ধনী ভিখারি রয়েছেন। যাঁদের মাসিক আয় নাকি ৫ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা। আসলে এই ভিক্ষাবৃত্তিকে ঘিরেই এক বিরাট অর্থনীতিও গড়ে উঠেছে। সেই অর্থনীতির বহর নাকি ১ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।
ওই মামলাকারীর আবেদন থেকেই উঠে এসেছে আরও কিছু চমকপ্রদ তথ্য। জানা যাচ্ছে ট্র্যাফিক সিগন্যাল গুলিতেই ভিক্ষার বরাত নিয়ে টেন্ডারের ধাঁচে দর ঠিক হয়। এক্ষত্রে ভিক্ষার বরাত পাওয়ার জন্য দর হাঁকানো হয় ৫০ লাখ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত। যিনি বরাত পান, তিনিই হাতে বাটি ধরিয়ে নিজের লোককেই ভিক্ষা করতে পাঠিয়ে দেন। ভারতে এমন ধরনের মোট ১২টি এলাকা রয়েছে। যার মধ্যে মুম্বইয়ে তিনটি, দিল্লিতে তিনটি, আহমেদাবাদে দুটি ও কলকাতায় একটিজায়গা রয়েছে।
মামলাকারীর দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে ওই টাকার বেশ কিছু অংশ নাকি মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাতেও লাগানো হচ্ছে। আর এই সবটাই নিয়ন্ত্রণ করেন এই ভিক্ষাবৃত্তি পেশার মাথারা। আসলে এই ভিক্ষার আড়ালে চলে দেহব্যবসা, যৌন নিগ্রহ, শিশু নির্যাতন ও শিশু পাচার চক্র । সুপ্রিম কোর্টের আবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত ৫ বছরে ভিক্ষাবৃত্তির নামে দেশ জুড়ে কয়েক হাজারেরও বেশি কন্যাসন্তান উধাও হয়ে গিয়েছে। এমনকি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ছোট ছোট ছেলেরাও ।
Leave a Reply