টাইটানিক কেন ডুবে গিয়েছিল জানেন? টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পিছনে রয়েছে কোন রহস্য? জানেন কেন অভিশপ্ত বলা হয় টাইটানিককে? কোন অভিশাপে ডুবেছিল টাইটানিক? আজও এই জাহাজ ঘিরে রয়েছে অজানা রহস্য! টাইটানিকের সলিল সমাধির পিছনে রয়েছে কোন মমির অভিশাপ? আজও রহস্যে মোড়া এই ‘অভিশপ্ত মমি! অজানা এই ‘অভিশপ্ত মমি’র কাহিনি জানলে ভয়ে হাড় হিম আসবে আপনারও!
তারিখটা ছিল ১৯১২ সালের ১৫’ই এপ্রিল। এই দিনটিতেই উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে হিমবাহের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে তলিয়ে গিয়েছিল টাইটানিক। মোট ২২০০ যাত্রী নিয়ে সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিল টাইটানিক। টাইটানিকের সলিল সমাধির পর প্রাণে বেঁচেছিলেন মাত্র ৭০০ জন, প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ১৫০০ জন যাত্রী। যদিও অনেকে মনে করেন টাইটানিক ডুবে যাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে এক মমির অভিশাপ।
লোকমুখে শোনা যায়, টাইটানিকে উইলিয়াম টি স্টিড নামে এক যাত্রী অন্যান্য যাত্রীর সঙ্গে ভাব জমাতে তাঁদের একটি গল্প শুনিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন টাইটানিকে একটি মমি রয়েছে। আর সেটি জাহাজের এক যাত্রীই কিনে নিয়েছিলেন। তাই টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পর অনেকে মনে করেছিলেন জাহাজের ভিতরে থাকা ওই মমির অভিশাপেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
কেউ কেউ আবার দাবি করেন, জাহাজের এক যাত্রীর সংগ্রহে ছিল একটি মমি। সেই মমিটিকে আমেরিকার একটি যাদুঘরে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কানাঘুষো শোনা যায় টাইটানিকে থাকা ওই মমিটি নাকি ইজিপ্টের প্রাচীন দেবতা আমুনের মন্দিরের এক ভক্তের। সেই মমির অভিশাপেই নাকি টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল।
জানলে অবাক হবেন টাইটানিকের দুর্ঘটনার পিছনে যে মমির অভিশাপ রয়েছে সেই মমিটিও মিশরের প্রাচীন দেবতা আমুনের এক ভক্তেরই। যা সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। ১৮৮৯ সালে লন্ডনের হল্যান্ড পার্কের বাসিন্দা ওয়ারউইক হান্ট ওই মমির বাক্সটি দান করেছিলেন ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। উচ্চমানের কাঠ এবং প্লাস্টার দিয়ে তৈরি ওই মমির বাক্সটি ১৬২ সেন্টিমিটার লম্বা।
মমির মুখটি ছিল এক মহিলার। তবে তার নাম উল্লেখ করা না থাকলেও করা না থাকলেও মমির কাঠামোটি যে ধাঁচে তৈরি করা হয়েছিল, তা দেখে অনুমান করা হয়, ওই মহিলা ছিলেন উচ্চবংশীয়। এই মমির দেহটি সুরক্ষিত রাখতেই বাক্সের উপর হাতের আঙুলগুলি বেশ কায়দা করেই খোদাই করা হয়েছিল।
মিশরের প্রাচীন দেবতা আমুনের মন্দিরের সঙ্গীত অনুষ্ঠানে যেসব মহিলারা অংশগ্রহণ করতেন তাঁদের মৃত্যু হলে যে ভাবে মমির বাক্স তৈরি করা হত, ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রাখা ওই মমির বাক্সের গঠনও ছিল একইরকম। ওই মমিটি ৯৫০ থেকে ৯০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে তৈরি করা হয়েছিল। পর্যটকদের জন্য ১৯৯০ সাল থেকে মমিটিকে মিউজিয়ামের ‘ফার্স্ট ইজিপশিয়ান রুম’-এ রাখা হয়েছিল।
অনেকেই দাবি করেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে এই মমি ব্রিটিশ মিউজিয়াম থেকে অন্যত্র সরানো হয়েছিল। তার পর আবার ব্রিটিশ মিউজিয়ামে তা ফিরিয়ে আনা হয়। বর্তমানে এই মমিটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামের ৬২ নম্বর ঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। একসময় বার্টরাম ফ্লেচার রবিনসন নামে এক সাংবাদিক মমির ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তিনি নাকি বুঝতে পেরেছিলেন এই মমি অভিশপ্ত। আশ্চর্যজনক ভাবে গবেষণার কাজ প্রকাশ পাওয়ার আগেই মারা যান বার্টরাম। তবে এই মমি সত্যিই অভিশপ্ত কিনা তা আজও রহস্য।
Leave a Reply