আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধন! গোটা দেশজুড়ে রয়েছে উৎসবের আমেজ! ইতিমধ্যেই তৈরী হয়ে গিয়েছে রামমন্দিরে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকা। কিন্তু এঁরই মধ্যে বারবার উঠে আসছে একটাই প্রশ্ন! তা হল রামমন্দিরের উদ্বোধনে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় কি নাম রয়েছে শ্রী রামচন্দ্রের বংশধরদের? হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন আজও বেঁচে রয়েছেন ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের বংশধররা। কোথায় রয়েছেন তাঁরা? জায়গার নাম শুনলেই অবাক হয়ে যাবেন!
সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা থেকে জানা যাচ্ছে রাজস্থানের জয়পুরে থাকেন ভগবান শ্রী রামচন্দ্রেরর বংশধররা। সদ্য জয়পুরের মহারানী পদ্মিনী দেবী একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তার স্বামী জয়পুরের প্রাক্তন মহারাজ ভবানী সিং রামচন্দ্রের পুত্র কুশের ৩০৯ তম বংশধর। বিভিন্ন প্রমাণ সমেত তাঁদের দাবি তাঁরা নাকি রামচন্দ্রের বংশধর। তারা কুশ ওয়াহ বা কাছোয়া গোষ্ঠীর বংশধর।
পদ্মিনী দেবী এবং ভবানী সিং এর একমাত্র মেয়ে দিয়া কুমারী। পদ্মিনী দেবীর মতোই সুন্দরী তাঁর মেয়ে দিয়া। যদিও রাজরানী পদ্মিনী দেবী খুব অল্প বয়সেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। এই দিয়া কুমারী হলেন রাজস্থানের রাজসমন্ডের বিজেপি সাংসদ। দিয়ার দুই ছেলে পদ্মনাভ আর লক্ষ্য। পদ্মনাভ বর্তমানে জয়পুরের রাজা।
ভবানী সিং মারা যাওয়ার পর দিয়ার ছোট ছেলে লক্ষ্য রায় সিংহাসনে বসেন। জয়পুরে এই রাজ পরিবারকে সাবাই খুবই সমীহ করে চলেন। রামচন্দ্রের বংশধর পদ্মনাভ শখের মডেল এবং পোলো খেলোয়াড়ও। বড় বড় রাজা-বাদশাদের মতোই তাঁর রাজকীয় জীবন যাপন। পদ্মনাভ এক নন তাঁর পরিবারের সকলেই নিজেদের আলিশান জীবন-যাপনের জন্য বিখ্যাত।
প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে ভগবান রামচন্দ্র এবং মাতা সীতার বিয়ের পর তাদের সন্তান কুশের জন্ম হয়েছিল। এই কুশের থেকেই কুশ ওয়াহ বংশের জন্ম হয়েছিল। দেবী সীতার পাতাল প্রবেশের পরেই নাকি রামায়ণের সমাপ্তি হয়েছিল। কিন্তু এই তথ্য নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে।
রামচন্দ্র নাকি তাঁর ভাইয়ের সকল সন্তানদের মধ্যে রাজ্য ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দক্ষিণে কোশলপ্রদেশ ছত্তিশগড়ে কুশ এবং উত্তরে উত্তর কোশল প্রদেশে লবের অভিষেক করা হয়েছিল। ইতিহাস বলছে লব নাকি লবপুরের স্থাপন করেছিলেন। যা বর্তমানে পাকিস্তানের লাহোর নামে পরিচিত। এখানে একটি দুর্গে নাকি লবের মন্দিরও পাওয়া গিয়েছে।
রাজা লব থেকে রাঘব রাজপুত্রের সৃষ্টি হয়। আর এই রাজপুত্রের একটি শাখা ছিল সিসোদিয়া। যার মধ্যে বেশ,বেশালা এবং কোহিল রাজবংশ ছিল। দিয়াকুমারী দাবি করেন রামচন্দ্রের পুত্র কুশের বংশধর তরাই এবং এখনো জীবিত। দেশজুড়ে রামচন্দ্রের ভক্তরা রয়েছেন। তাঁদের কাছে থাকা ৯ টি নথি এবং ২টি নকশা দিয়েই তারা এই দাবি প্রমাণ করতে চেয়েছেন। তবে জয়পুরের এই রাজপরিবারই যে রামচন্দ্রের বংশধর, এই দাবি নিয়ে আগেও বহু মামলা হয়েছে।
রাজস্থানের রাজসমন্ডের সাংসদ দিয়াকুমারী জানিয়েছেন প্রয়োজনে তিনি প্রমাণ হিসেবে আদালতের সামনে নথিও জমা করতে পারেন। এছাড়া রাজবংশের আরও একাধিক নথি রয়েছে। যা প্রমাণ করে তারাই রামের বংশধর। তাঁদের দাবি তাঁরা বর্তমানে রামচন্দ্রের ৩০৮ তম বংশধর। এই বংশ নাকি শুরু হয়েছিল ভগবান বিষ্ণুর হাত ধরে। তারপরের প্রজন্ম ছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা। এর পরের দুই প্রজন্ম হলেন মরীচি ও কাশ্যপ৷ রাজা দশরথ ছিলেন ৬২ তম এবং রামচন্দ্র ছিলেন ৬৩ তম প্রজন্ম। তবে এই দাবি প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে গোটা দেশে। তবে বিষয়টি এখনও প্রমাণিত নয়। তবে আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধনে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় সত্যিই শ্রী রামচন্দ্রের বংশধরদের নাম রয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
Leave a Reply