মেয়ে মানেই লক্ষ্মীর রূপ! তাই কন্যা সন্তান হলে আর অবহেলা নয়! বাড়িতে কন্যা সন্তান থাকলেই প্রতিবছর পাবেন ১০০০ টাকা! আর এককালীন পাবেন ৫০ হাজার টাকা! কেন্দ্র সরকারের এই দুর্দান্ত স্কিমে মেয়ে থাকলেই ফুলে ফেঁপে উঠবে লক্ষ্মী ভান্ডার! জানেন করা পাবেন এই সুবিধা? এখনই জানুন আবেদন করার সহজ পদ্ধতি!
এখনও আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় অসহায়, নিপীড়িত হয়ে জীবন কাটায় মেয়ে সন্তানরা! অনেক জায়গায় তো পৃথিবীর আলো দেখার আগেই নীরবে হত্যা করা হয় কন্যা ভ্রূণ! তাই এবার মেয়েদের সুরক্ষা দিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। দেশজুড়ে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ কর্মসূচির মাধ্যমে আনা হয়েছে একাধিক প্রকল্প। তেমনই দেশজুড়ে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটাতেই আনা হয়েছে এমনই একটি প্রকল্প। যা আসলে বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা নামে পরিচিত। আসুন বিস্তারিত জানা যাক এই প্রকল্পের সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য।
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা কী?
মেয়েদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি প্রকল্প হলো বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা। কেন্দ্রীয় সরকারের নারী এবং শিশু উন্নয়ন পরিষদ ১৯৯৭ সালে প্রথম এই প্রকল্পের সূচনা করেছিল। এই সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে কন্যা সন্তানদের শিক্ষা থেকে শুরু করে বিয়ে সুনিশ্চিত করা হয়। প্রত্যেক শিশু কন্যার জন্মের পর থেকেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যায়।
কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে?
এই প্রকল্প অনুযায়ী গর্ভে কন্যা সন্তান থাকলে গর্ভবতী মহিলাদের ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হবে। পরবর্তীতে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলে ৫০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। পরে পড়াশোনা শুরু হলে তার শিক্ষার জন্য ধাপে ধাপে প্রতি বছর টাকা দেওয়া হবে। সেই হিসাব অনুযায়ী প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ৩০০ টাকা, চতুর্থ শ্রেণীতে ৫০০ টাকা, পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় ৫০০ টাকা, আর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় ৭০০ টাকা, এছাড়া অষ্টম শ্রেণীতে ৮০০ টাকা, আর নবম ও দশম শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য ১০০০ টাকা দেওয়া হবে। তবে এই টাকা কিন্তু মেয়ের ১৮ বছর বয়সের পরেই পাওয়া যাবে। তবে তার আগেই যদি মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় তাহলে সে শুধুমাত্র ৫০০ টাকার অনুদান পাবে।
কারা এই সুবিধা পাবেন?
টাকা পয়সা যাতে মেয়েদের শিক্ষায় বাঁধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে তাই বালিকা সমৃদ্ধি যোজনার মাধ্যমে মেয়েদের আর্থিক সাহায্য করা হয়।তাই দেশজুড়ে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানোই এই যোজনার মূল উদ্দেশ্য। তবে সব কন্যা সন্তানই কিন্তু এই সুবিধা পাবে না। শুধুমাত্র দারিদ্র্য সীমার নীচে থাকা পরিবারের মেয়েরাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। তবে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে অবশ্যই BPL অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। তবে পরিবারের সর্বোচ্চ দুই জন মেয়েই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনায় কীভাবে আবেদন করবেন?
অফলাইন এবং অনলাইন এই দু’ভাবেই এই প্রকল্পে আবেদন করা যায়। ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে বাড়ি বসেই আর না থাকলে যে কোনো সাইবার ক্যাফেতে গিয়েই অনলাইনে আবেদন করা যায়। এছাড়াও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র থেকে অফলাইনে আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ফর্ম তুলে সমস্ত তথ্য দিয়ে সেই ফর্ম ফিলাপ করে ওই দপ্তরেই জমা দিতে হবে।সেই সাথে দিতে হবে প্রয়োজনীয় নথি। তবে জেনে রাখা ভালো এক্ষেত্রে কিন্তু গ্রাম ও শহরের জন্য আলাদা আলাদা ফর্ম রয়েছে।
আবেদনের জন্য কোন কোন নথি প্রয়োজন?
মেয়ের জন্ম সার্টিফিকেট,পরিচয় পত্র হিসাবে আধার কার্ড,বাবা-মায়ের পরিচয় পত্র,ডোমেসিয়াল সার্টিফিকেট এবং প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার রশিদ।
এখানে বলে রাখি এই প্রকল্পে আবেদন করার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির পর থেকে মেয়ে সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত যে কোনো সময়েই প্রকল্পের জন্য আবেদন করা যায়।
Leave a Reply