ঘর-সংসার সামলানো নিতান্ত গৃহবধূ থেকে কোটিপতি! দেশের ধনীতম এই মহিলার জীবন হার মানাবে রুপকথার কাহিনীকেও! মুকেশ আম্বানি কিংবা গৌতম আদানিকে তো সবাই চেনেন! কিন্তু আপনি কি জানেন ভারতের ধনীতম এই মহিলা কে? জানেন দেশের ধনীতম মহিলা সাবিত্রী জিন্দালের সম্পত্তির পরিমাণ কত? কোটিপতি এই মহিলার সম্পত্তি ছাপিয়ে গিয়েছে উইপ্রোর মালিক আজিম প্রেমজিকেও।
আমাদের দেশের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় প্রথমেই নাম আসে মুকেশ আম্বানি কিংবা গৌতম আদানির মত ধনকুবেরদের। তাই ভারতীয় ধনী ব্যক্তিদের কথা কথা সকলেই জানলেও অধিকাংশ মানুষই জানেন না দেশের ধনীতম এই মহিলার কথা। বর্তমানে আমাদের দেশের ধনীতম মহিলাদের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছেন যিনি তার নাম সাবিত্রী জিন্দল। কয়েক মাসে লাফিয়ে বেড়েছে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণও।
ঘর সংসার সামলানো নিতান্ত একজন গৃহবধূ থেকে তার কোটিপতি হয়ে ওঠার কাহিনী হার মানাবে রূপকথার কাহিনীকেও। ৭৩ বছরের সাবিত্রী দেবী হলেন ইস্পাত সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি জিন্দাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ওম প্রকাশ জিন্দালের স্ত্রী। ১৯৭০ সালে চার হাত এক হয়েছিল তাঁদের। নয় সন্তান নিয়ে একসময় সংসারের ঘেরাটোপেই দিন কাটতো তাঁর।
তাই সেসময় ব্যবসা সামলানোর কথা তিনি কল্পনাও করতে পারতেন না। তাই একসময় সংসার সামলানোর পাশাপাশি সন্তানদের নিয়েই ছিল তাঁর গোটা জগত। কিন্তু জীবনটা যে সব কল্পনার বাইরে! তাই আচমকাই বদলে যায় সাবিত্রী দেবীরও জীবনের গল্প। সালটা ছিল ২০০৫। সে বছর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সাবিত্রী দেবীর স্বামী ওম প্রকাশের। সাহারানপুর এর কাছে এসে ভেঙে পড়েছিল তাঁর হেলিকপ্টার। সেসময় ওম প্রকাশ ছিলেন হরিয়ানার হিসার বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। মৃত্যুকালে তিনি ছিলেন হরিয়ানার বিদ্যুৎমন্ত্রী।
স্বামীর অকাল প্রয়াণে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় সাবিত্রী দেবীর। সে সময় সাবিত্রী জিন্দালের বয়স ছিল ৫৫ বছর। ওই বয়সেই শত কষ্টের মধ্যেও একটু একটু করে তিনি নিজেই শিখে নিয়েছিলেন স্বামীর ব্যবসার সমস্ত খুঁটিনাটি। এরপর স্বামীর তৈরী বিশাল সাম্রাজ্যের দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধেই। আর আজ সেই ব্যবসাকেই নিজের দায়িত্বে পৌঁছে দিয়েছেন সাফল্যের শিখরে।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের রিপোর্ট বলছে , বর্তমানে দেশের ধনীতম শিল্পপতিদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন সাবিত্রী জিন্দাল। তাঁর সামনেই আছেন মুকেশ আম্বানি, গৌতম আদানি ও শিব নাদারে। সম্প্রতি একদিনে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১৭৫ মিলিয়ান মার্কিন ডলার বেড়ে গিয়েছে। তাই ফোর্বসের দাবি, মোট ২৮.৯ বিলিয়ান ডলারের সম্পত্তির মালকিন তিনি। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা।
অন্যদিকে সম্প্রতি ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স একটি পরিসংখ্যান পেশ করেছে। সেই রিপোর্ট বলছে, দুই বছর আগে প্রেমজি ভারতের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি ছিলেন। আর তার থেকে এগিয়ে ছিলেন মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানি। কিন্তু গত দুই বছরে উইপ্রোর প্রেমজির সম্পদ কমেছে। কিন্তু এগিয়ে গেছেন দেশের ধনীতম মহিলা সাবিত্রী জিন্দাল।
Leave a Reply