কোটিপতি নাপিত

ভারতের সবচেয়ে বড়লোক নাপিত! নামি-দামি গাড়ির মালিক তিনি! তাঁর গাড়ির কালেকশন দশ গোল দেবে আম্বানি-আদানীকেও!  চিনে নিন দেশের এই কোটিপতি নাপিত কে? তাঁর জীবন যেন আস্ত সিনেমা! জানেন তিনি নাপিত থেকে কোটিপতি হলেন কীভাবে? তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ জানলে ঘুম উড়ে যাবে রাতের! জানেন এই ব্যক্তির আয়ের উৎস কি?

সেই রাজা মহারাজাদের সময় থেকেই ভারতবর্ষের কোটিপতিদের অভাব নেই!  তাই  একসময় এই ভারতবর্ষকেই ‘সোনে কি চিড়িয়া’ অর্থাৎ সোনার পাখি বলে সম্বোধন করা হত। যদিও কালের নিয়মে ভারতে এখন  রাজা মহারাজাদের যুগ অতীত। তাই এখনকার দিনে ভারতীয় নাগরিকদের কথা উঠলে প্রথমেই আসে মুকেশ আম্বানি কিংবা গৌতম আদানিদের নাম। কিন্তু জানলে অবাক হবেন আমাদের দেশেই রয়েছেন একজন কোটিপতি নাপিত।

তাঁর গাড়ির গ্যারেজের সামনে দাঁড়ালে মনে হবে কোনো বিরাট গাড়ির শো-রুমের সামনে চলে এসেছেন। পেশায় নাপিত হলেও বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা রমেশ বাবু দামি গাড়ির কালেকশনের দিক দিয়ে পিছনে ফেলে দিয়েছেন তাবড় শিল্পপতিদেরও। তাঁর গ্যারেজের  কয়েক কয়েকশো নামি দামি গাড়ি হামেশাই টেক্কা দিতে পারে মুকেশ আম্বানি, রতন টাটা, কিংবা গৌতম আদানীর মত ভারতীয় ধনকুবেরদের।

এই পর্যন্ত শুনে নিশ্চই ভাবছেন এও কি সম্ভব? তাই প্রশ্ন হল অসম্ভবকে সম্ভব করে রমেশ নাপিত থেকে কোটিপতি হলেন কীভাবে? তাঁর জীবনের গল্প হার মানাবে সিনেমাকেও। আসলে আজকের এই কোটিপতি রমেশের জীবনে, একসময় অভাব ছিল  নিত্যসঙ্গী। আর আজ তিনিই হয়েছেন কোটিপতি। তাঁর নিজস্ব একটি সেলুন রয়েছে। সেইসাথে সামলাচ্ছেন নিজের ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলসের ব্যবসাও। এখন   উভয় পেশাতেই দারুণভাবে সফল রমেশ। বর্তমানে তিনি একজন সফল উদ্যোগপতি।

তবে আজকের এই সাফল্য কিন্তু রাতারাতি আসেনি রমেশের জীবনে। নানান চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে অবশেষে সাফল্য ধরা দিয়েছে তাঁর জীবনে। আদতে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা রমেশের বাবা পি গোপালও একসময় পেশায় নাপিত ছিলেন। রমেশের বয়স যখন মাত্র সাত বছর তখন বাবাকে হারান তিনি। সেসময় ব্যাপক অর্থসংকটে পড়েছিলেন রমেশের গোটা পরিবার।

সংসার টানতে ওইটুকু  বয়সেই সংবাদপত্র বিক্রি করতেন তিনি। কিন্তু তাতে যথেষ্ট পরিমান অর্থ উপার্জন না হওয়ায় শুরু করেন নিজের ব্যবসা। তারপরেই ব্যবসায় ‘লক্ষ্মীলাভ’ হয় রমেশের। যা তাঁকে অত্যন্ত সাধারণ একজন নাপিত থেকে কোটিপতি বানিয়ে দেয়।

ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠতেই গাড়ি কেনার শখ হয় রমেশের। শুরুতে তিনি কিনেছিলেন একটি মারুতি ওমনি। পরে ব্যবসা বাড়তেই একের পর এক বিলাসবহুল গাড়ি কেনা শুরু করেন তিনি। জানলে অবাক হবেন বর্তমানে রমেশের গ্যারেজে রয়েছে ৪০০টিরও বেশি গাড়ি। যার মধ্যে অন্যতম মার্সিডিজ় ই ক্লাস সেডান, রোলস রয়েস, বিএমডব্লিউ, জাগুয়ার, বেন্টলের মতো নামী সংস্থার গাড়ি। সেদিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে মুকেশ অম্বানী। তাঁর  সংগ্রহে  রয়েছে মাত্র ১৬৮টি গাড়ি। আম্বানি ছাড়াও নামি-দামি গাড়ির কালেকশনের দিক দিয়ে রমেশ  টেক্কা দিচ্ছেন গৌতম আদানিকেও। কারণ তাঁর কাছে রয়েছে মাত্র ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি।

বর্তমানে রমেশের ‘কার রেন্টাল কোম্পানি’-তে কাজ করেন ৩০০ জনেরও বেশি কর্মী। তাঁর সংস্থার গ্রাহকদের তালিকায় রয়েছে অমিতাভ বচ্চন, সচিন তেণ্ডুলকর, ঐশ্বর্য রাই বচ্চন, কিংবা আমির খানের মতো সেলিব্রেটিদের নাম। এখানেই শেষ নয় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক রমেশবাবুর মোট সম্পত্তির পরিমাণও কিন্তু নেহাত কম নয়। জানা গিয়েছে,তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২০০ কোটি টাকা।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *