কাশির সিরাপেই লুকিয়ে আছে বিপদ! ভারতে নিষিদ্ধ শিশুদের এই কাফ সিরাপ! ভারতের শিশুদের জন্য এই নির্দিষ্ট কাশির সিরাপ ব্যানড করল কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা DCGI! ৪ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ কোন কাশির ওষুধ জানেন?
শীতকাল মানে সবারই সর্দি, কাশি লেগেই থাকে। তাই অধিকাংশ মানুষ নিজে থেকেই দোকানে গিয়ে যেকোনও কাশির সিরাপ নিয়ে আসেন । তবে এরই মধ্যে জনপ্রিয় বেশ কিছু সংস্থার কাশির ওষুধ নিষিদ্ধ হল। শিশুদের জন্য মোটেই নিরাপদ নয় ভারতে তৈরি বেশ কিছু কাশির সিরাপ। তাই অতীতের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই ৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য একটি নির্দিষ্ট কাফ সিরাপ ব্যান্ড করল কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া। ১৮ ডিসেম্বর এই সংস্থার তরফে সমস্ত রাজ্যকে একটি চিঠি লেখা হয়েছে। সেখানে সতর্ক করা হয়েছে ক্লোরফেনিরামাইন ম্যালিয়েট এবং ফেনাইলেফ্রিনের ককটেল ব্যবহার করে তৈরি সিরাপের লেবেল নিয়ে।
সাধারণত সর্দি-কাশির চিকিৎসার জন্যই এই দুটি ওষুধের মিশ্রণ থেকে তৈরি সিরাপ বা ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই ভারতীয় সংস্থার তৈরি কাশির সিরাপের জন্য ক্যামেরুন, গাম্বিয়া ও উজবেকিস্তানের মতো তিনটি দেশ মিলিয়ে প্রায় ১৫০ জন শিশুমৃত্যুর খবর মিলেছিল। এই কাশির সিরাপের মোট পাঁচটি নমুনা পরীক্ষা করে দুই আধিকারিক দাবি করেছেন একটিতে কিছু অজ্ঞাত মিশ্রন পাওয়া গিয়েছে।
প্রত্যেক রাজ্যকে সতর্ক করে লেখা হয়েছে, শিশুদের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সিরাপ নিয়ে উদ্বেগ তৈরী হয়েছে। তাই নির্দিষ্ট বয়সের শিশুদের জন্য এই সংমিশ্রণ ব্যবহার না করাই উচিত। ওষুধের কোম্পানিগুলোকে প্যাকেজিংয়ের সতর্কীকরণের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, কমিটি সুপারিশ করেছে যে এই কাফ সিরাপ ৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের খাওয়ানো উচিত নয় এবং সেই অনুযায়ী কোম্পানিগুলির লেবেল এবং প্যাকেজে সতর্কতা উল্লেখ করা উচিত। তাই ইতিমধ্যেই এই দুটি ওষুধ ব্যবহার করে তৈরি সিরাপের লেবেল সম্পর্কে আপডেট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত ওষুধ কোম্পানিকে।
দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের সিনিয়র শিশু বিশেষজ্ঞ ধীরেন গুপ্তা এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ক্লোরফেনিরামাইন ম্যালিয়েট এবং ফেনাইলেফ্রিনের ককটেল ব্যবহার করে তৈরি সিরাপ ১ বছরের কম বয়সী শিশুদের দেওয়া হয় না। ২ থেকে ৪ বছর বয়সি শিশুদের ব্যবহারের জন্যও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। তবে এই ওষুধটি খুব অল্প সময়ের জন্য, খুব কম মাত্রায় ব্যবহার করা উচিত। এই ওষুধ ব্যবহারে অজ্ঞান হওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকতে পারে।
অন্যদিকে ভারতীয় সংস্থার তৈরির এই কাশির সিরাপ পরীক্ষা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা বা WHO দাবি করেছে ওই সিরাপগুলির কোন কোনটিতে ডায়েথাইলিন গ্লাইকোলের মতো বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। সিরাপে যা ২৮.৬ শতাংশ হারে মিশ্রিত ছিল। WHO-র তরফে এই রিপোর্ট আসতেই ওই সিরাপের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার। এছাড়া, এই নিয়ে একটি পৃথক তদন্তও শুরু করেছে কেন্দ্র।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের টি-মিনিক ওরাল ড্রপস, গ্লেনমার্কের অ্যাসকরিল ফ্লু সিরাপ, এবং আইপিসিএ ল্যাবরেটরিজ এর সলভিন কোল্ড সিরাপ প্রস্তুত করা কারখানাগুলিকে এই ওষুধগুলির ওপর বাধ্যতামূলক ভাবে সতর্ক বর্তা লাগাতে বলেছে সরকার। ক্লোরফেনিরামাইন ম্যালেট এবং ফেনাইলেফ্রাইন থাকা ওষুধগুলির ক্ষেত্রেই এই সতর্ক বার্তা ছাপতে হবে। কারণ শিশুদের জন্য এগুলি বিপজ্জনক।
Leave a Reply