জানেন? অভিনেতা তাপস পাল জীবনের শেষ সময়টুকু কিভাবে কাটিয়েছিলেন? অভিমানী নায়কের করুণ পরিণতি শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে আপনারও

জানেন? অভিনেতা তাপস পাল জীবনের শেষ সময়টুকু কিভাবে কাটিয়েছিলেন? অভিমানী নায়কের করুণ পরিণতি শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে আপনারও

জানেন?

অভিনেতা তাপস পাল
জীবনের শেষ সময়টুকু কিভাবে কাটিয়েছিলেন?

কতটা অবহেলিত হয়েছিলেন
দাদার কীর্তির নায়ক?

রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে চরম বিতর্ক!
রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানো!

কিভাবে অন্ধকারে
জড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি?

অভিমানী তাপসের করুণ পরিণতি শুনলে
গায়ে কাঁটা দেবে আপনারও

বাংলা সিনেমার অন্যতম রোমান্টিক হিরো ছিলেন তাপস পাল। একসময় তিনি ছিলেন বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বড় নক্ষত্র। বাংলা সিনেমার দর্শকদের কাছে তিনি ছিলেন এক অন্য রকম আবেগ। মাত্র ৬১ বছর বয়সেই সবাইকে কাঁদিয়ে, তিনি পরলোকে চলে যান। মঞ্চ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। এরপর সিনেমার পর্দাতেও তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। দাদার কীর্তি ছবি দিয়ে অভিনয় জীবনে পা রেখেছিলেন। এরপর তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। গুরুদক্ষিণা, বলিদান, কড়ি দিয়ে কিনলাম, এর মতন একে একে ব্লকবাস্টার সিনেমা উপহার দিয়েছেন বাঙালিদের। তিনি শুধু সিনেমাতেই আবদ্ধ থাকেননি, ২০০৯ সালে রাজনীতিতে এসে নিজেকে আরও উঁচু তলায় নিয়ে যান। সেই বছর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে কৃষ্ণনগর থেকে নির্বাচিত হন।

তবে রাজনীতিতে পা দিতে না দিতেই আচমকা বদলে যায় তাপস পালের জীবন। অভিনেতার উজ্জ্বল জীবনে নেমে আসে কালো দুঃখের ছায়া। তাপস পালের জীবনের দুর্দশা এবং অন্ধকারটা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। ওই বছরটি থেকেই তাপস পালের ক্ষতি হওয়া শুরু হয়। সে সময় অভিনেতা তাপস পাল, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে এক নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি বেশ কিছু বিতর্কিত বক্তব্য দেন। একটি সভায়, তিনি নিজেকে “চন্দননগরের মাল” বলে পরিচয় দেন । সে সঙ্গে জানান, তিনি পকেটে মাল নিয়ে ঘুরে বেড়ান। এছাড়াও আরো একটি সভা থেকে তাপস পাল বক্তৃতা দিতে গিয়ে, বলেন বিরোধীদের বাড়িতে ছেলে পাঠিয়ে মেয়েদের সঙ্গে উল্টাপাল্টা কাজ করিয়ে দেবেন। তার পোষা চামচারা বিরোধীদের মা, বোনেদের লাজ, লজ্জায় হাত দেবেন। তাপস পালের মুখ থেকে এই বাক্য হজম করতে পারেনি কেউ। এমন কুরুচিপূর্ন বক্তব্য তার অন্ধ ভক্তরাও মেনে নিতে পারেননি। সকলেই তার বিরুদ্ধে ছি ছি করে উঠেছিলেন। তাপস পালের এই আচরণ দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন, অত্যাধিক জনপ্রিয়তার গর্ব ও ক্ষমতার নেশা অভিনেতাকে গ্রাস করেছিল। নইলে তাপসের মতন অত বড় মাপের শিল্পী কেন বক্তৃতা দিতে গিয়ে নিজেকে বিতর্কিত করে ফেলবেন! পরবর্তীতে তাপস পাল নিজে এই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমাও চান। কিন্তু ক্ষমা চাইলেই বা কি হবে? যা হওয়ার তা তো হয়ে গিয়েছিল! ততক্ষণে জনগণের মনে তাপস পাল নোংরা ব্যক্তি হিসেবে খোদাই হয়ে গিয়েছিল।। মূলত সেই থেকেই তাপস পালের একলা হয়ে যাওয়ার শুরু। একটি একটি করে সমস্ত মানুষ তার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে শুরু করে দেয়।

২০১৬ সালের শেষের দিকে তাপস পালের জীবনে সবচেয়ে শেষ এবং বড় ঘূর্ণিঝড়টি উঠেছিল। রোজভ্যালি নামে একটি চিট ফান্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে তাপস পালের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের জেরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তিনি দীর্ঘদিন ভুবেনশ্বরের জেলে বন্দি ছিলেন। জেল জীবন শেষে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন ঠিকই , কিন্তু ততদিনে জীবনের সকল জৌলুসই হারিয়ে ফেলেছিলেন। সেই থেকে আর স্বাভাবিক হতে পারলেন না। ভাবমূর্তি নষ্ট করার কারণে তৃণমূল কংগ্রেসও তাকে আর নির্বাচনের টিকিট দেয়নি। দল থেকে তাপস পালকে রীতিমতো বিতাড়িত করা হয়। আর ঠিক একই কারণেই রূপালী পর্দা থেকেও অঘোষিতভাবে, অলিখিতভাবে ব্রাত্য হয়ে যান তাপস পাল। তারপর থেকে আর কোন সিনেমায় তাকে ডাকা হয়নি। সে সময় তার হাতে কোন কাজও ছিল না। বেকার সময়ই কাটাতে ও জীবনের প্রয়োজনে একসময় বাধ্য হয়ে যাত্রার কাজে ঢুকে পড়েন। তবে আগের মতন মান সম্মান বা কদর কোনটাই তার আর ছিল না।

তাপসের শেষ জীবনটা প্রচন্ড কষ্টে কেটেছে। জেল অপমান লাঞ্ছনা একসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্যারিয়ারের শুরুতে যিনি ছিলেন টলিউডের নক্ষত্র, সেই মানুষটাই শেষ জীবনে হয়ে গেলেন একেবারে ব্রাত্য। তাপস পালের ভক্ত এবং অনুরাগীদের জন্যও বিষয়টি খুবই কষ্টকর ছিল। আর কোনদিনও ফিরে আসবেন না তিনি। তর্ক, বিতর্ক, খ্যাতি এই তিন ক্ষেত্রেই আজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবেন তাপস পাল।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *