মন্ত্রিসভার শিক্ষিত ১০ মন্ত্রী

জানেন মোদী মন্ত্রিসভার সবচেয়ে শিক্ষিত ১০ জন মন্ত্রী কারা? একনজরে দেখা যাক মোদী মন্ত্রিসভার সবচেয়ে স্বীকৃত মন্ত্রী কে? কার ঝুলিতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি ডিগ্রি? মোদি মন্ত্রিসভার কোন মন্ত্রীর শিক্ষার ভার কত বেশি? পীযূষ গয়াল নাকি নির্মলা-সীতারমন কার পাল্লা বেশি ভারি?

কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বড়সড় বিতর্কের মুখে পড়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। আর পরেই আম আদমি পার্টির প্রশ্ন তোলা হয় প্রধানমন্ত্রী মোদির স্নাতক ডিগ্রি নিয়েও। তবে বিজেপির তরফে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে  দাবি করা হয়  মোদি সরকারে উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন মন্ত্রীদের অভাব নেই। আসুন দেখে নেওয়া যাক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভার  সেরা ১০ জন শিক্ষিত মন্ত্রীর তালিকা।

সুরেশ-প্রভু :

সুরেশ-প্রভু হলেন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একজন  শিক্ষিত মন্ত্রী। মুম্বাইয়ের ভিলে পার্লের এমএল ডাহানুকার কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হন তিনি। পরবর্তীতে  মুম্বাইয়ের নিউ ল কলেজ থেকে এলএলবি পাশ করেছেন তিনি। এছাড়াও তিনি একজন পেশাদার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। CA পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে ১১ নম্বর স্থান অর্জন করেছেন তিনি।

 

জয়ন্ত সিনহা:

বর্তমানে তিনি অর্থ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন। আইআইটি দিল্লী থেকে বি.টেক পাশ করে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন মোদী মন্ত্রিসভার এই মন্ত্রী।  পরে তিনি হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর বেশ কিছুদিন তিনি ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানি, কারেজ ক্যাপিটাল এবং  বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সংস্থার সাথে একজন সফল ব্যাংকার হিসাবে কাজ করেছেন।

জেনারেল ভি কে সিং:

প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং বর্তমান সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বিজয় কুমার সিং। একসময় তিনি মর্যাদাপূর্ণ ন্যাশনাল ডিফেন্স অফ একাডেমি থেকে স্নাতক হন। এছাড়া তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিরক্ষা বিষয়ে এমএসসি করেন। পরে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়ার আর্মি ওয়ার কলেজ থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর করেন এবং ভোপালের বরকতুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন তিনি।

 

পীযূষ-গয়াল

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গয়ালের শিক্ষাগত যোগ্যতাও অবাক করার মতো। তিনি সর্বভারতীয় স্তরে  দ্বিতীয় স্থানাধিকারী  চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছিলেন। মুম্বাইয়ের ডন বস্কো হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে জয় হিন্দ কলেজ থেকে স্নাতক হন তিনি। পরে মুম্বাইয়ের সরকারি আইন কলেজ থেকেও এলএলবি পাশ করেছিলেন। পেশাগতভাবে, তিনি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট ছিলেন। এছাড়াও বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসাবেও পরিচিত তিনি।

 

হর্ষ বর্ধন:

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে তাঁর অনুরাগীরা ভালোবেসে “ডক্টর সাব” বলে সম্বোধন করেন। বিখ্যাত এই রাজনীতিবিদ কানপুরের গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থী মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেছেন। এই একই কলেজ থেকেই নাক -কান-গলা বিষয়ক  ওটাল্যারিঙ্গওলজির সার্জারিতে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন তিনি। অত্যন্ত সরল সাধাসিধে জীবনের জন্য বিখ্যাত তিনি। হর্ষ বর্ধন একজন নাক -কান-গলা বিশেষজ্ঞ।

 

জিতেন্দ্র-সিং

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র-সিং একজন বিখ্যাত ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ এবং প্রাক্তন অধ্যাপক। চেন্নাইয়ের স্ট্যানলি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং জম্মুর সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে এমডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। আটটি বই লেখার পাশাপাশি তিনি  একটি সংবাদপত্রের কলামিস্টও। রাজনীতিতে আসার জন্য মেডিসিনের অধ্যাপকের সরকারি চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। “উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ডায়াবেটিসের আন্তর্জাতিক জার্নাল”-এ প্রকাশিত “কাশ্মীরি অভিবাসীদের মধ্যে স্ট্রেস ডায়াবেটিস” এর উপর তার যুগান্তকারী কাজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে।

নির্মলা-সীতারমন

মোদী ক্যাবিনেটের অর্থমন্ত্রী তিনি। তিরুচিরাপল্লির সীতালক্ষ্মী রামস্বামী কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করার পর দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পিএইচডিও করেছেন তিনি। এছাড়াও, জেএনইউ থেকে এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয় লন্ডনে প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্স গবেষণা ইউনিটে এবং পরে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসেও কাজ করেছেন তিনি।

সুভাষ-ভামরে

এই প্রাক্তন প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রীও একজন বিখ্যাত  ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ। মুম্বাইয়ের গ্রান্ট মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন। এছাড়া মুম্বাইয়ের JJ  হাসপাতাল এবং টাটা ক্যান্সার হাসপাতাল থেকেন পড়াশোনা করেছেন তিনি। এছাড়া আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ক্যান্সার রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, বিনামূল্যে একাধিক মেডিকেল ক্যাম্প এবং অস্ত্রোপচারের মতো সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত তিনি।

মনোজ-সিনহা

বিজেপির এই প্রবীণ মন্ত্রী বারাণসীর বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক  এবং এমটেক  ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে, ১৯৯৯- ২০০০ সল্স পর্যন্ত সাধারণ পরিষদ, স্কুল অফ প্ল্যানিং-এর সদস্য ছিলেন। তিনি সবচেয়ে সৎ এমপি হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। নিজের সম্পূর্ণ এমপিএলএডি তহবিল নির্বাচনী এলাকার মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করে একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন তিনি।

অরুণ-জেটলি

মোদী মন্ত্রিসভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য ছিলেন প্রয়াত মন্ত্রী অরুণ-জেটলি। নয়াদিল্লির সেন্ট জেভিয়ার স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে স্বনামধন্য শ্রী রাম কলেজ অফ কমার্স থেকে বাণিজ্যে স্নাতক পাশ করেন তিনি। পরবর্তীতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ থেকে আইন নিয়ে পাশ করেন তিনি। ছাত্রজীবনে বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়ে ছিলেন তিনি। পেশাগত ভাবে তিনি সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রবীণ আইনজীবী ছিলেন।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *