রাম মন্দির

১০০০ বছরেও কোনো ক্ষতি হবে না অযোধ্যার রামমন্দিরের! বড় ভূমিকম্পও নড়াতে পারবে না মন্দিরের ভিত! কী ভাবে সম্ভব  হবে জানেন? রাম জন্মভূমির এ কি মহিমা! কোন অলৌকিক শক্তি নাকি রয়েছে কোন বিশেষ প্রযুক্তি? জানেন রামমন্দির তৈরির এই অজানা রহস্য? কিসের আদলে তৈরী অযোধ্যার রামমন্দির?

ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের প্রথম দফার নির্মাণ কাজ। সব ঠিক থাকলে নতুন বছরের ২২ জানুয়ারি মন্দিরের গর্ভ গৃহে প্রতিষ্ঠিত হবে রামলালার বিরোজমান মূর্তি। সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার পর ২০২০ সালের ৫ই  আগস্ট অযোধ্যার রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে গিয়েছে, রাম মন্দির নির্মাণের কাজ। ভক্তদের অনুদানের টাকায় ইতিমধ্যেই উপচে পড়েছে শ্রীরাম জন্মভূমির তীর্থ ক্ষেত্রের ট্রাস্ট।

বিখ্যাত স্থপতি চন্দ্রকান্ত ভাই সোমপুরার নেতৃত্বাধীন একটি দল এই মন্দিরের নকশা প্রস্তুত করেছে। এই রামমন্দির তৈরি করা হয়েছে নাগারা বা উত্তর ভারতীয় মন্দির শৈলীর আদলে। মন্দির কতৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে গোলাপি বেলেপাথর এবং রাজস্থানের মির্জাপুর ও বংসী-পাহাড়পুর থেকে আনা মার্বেল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই সম্পূর্ণ রাম মন্দির। এ ছাড়াও কর্নাটক থেকে আনা ১৭ হাজার গ্রানাইট পাথর ব্যবহার করা হয়েছে এই মন্দির নির্মাণে। প্রতিটি পাথরের ওজন দু’টন।

তাছাড়া ১৯৯২ সালের ‘শিলা দান’ অনুষ্ঠানের সময় এবং পরে দান করা সমস্ত ইট রামমন্দির নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রত্যেকটি জিনিস পরীক্ষা করেছেন আইআইটির বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ররা। তবে সবথেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণের ওপর। ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে, রামমন্দির নির্মাণে কোনও সাধারণ ইস্পাত বা সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। রাম মন্দিরের ভিতে রয়েছে মোট ৪৭টি স্তর। ১২ মিটার গভীর গর্ত খুঁড়ে এই মন্দিরের ভিত তৈরি করা হয়েছে। ভিত খোঁড়ার পর যে মাটি দিয়ে সেই গর্ত ভরাট করা হয়েছে, তা ২৮ দিনে পাথরে রূপান্তরিত হতে পারে।

ট্রাস্ট সূত্রে খবর, মন্দিরটি এমন অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি করা হচ্ছে যে, আগামী ১০০০ বছরেও তার কোনো ক্ষতি হবে না। এমনকি, ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্পও মন্দিরের ভিত নাড়াতে পারবে না। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই মন্দিরের গর্ভগৃহ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। তারপরেই গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠা করা হবে ‘রামলালা’র মূর্তি। ওই দিনেই হবে পুজো। ‘রামলালা’র মূর্তিটি ৫১ ইঞ্চি লম্বা হবে। মূর্তির হাতে থাকবে তির-ধনুক। ২৭ জানুয়ারি সকাল থেকে জনসাধারণের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের গর্ভগৃহ।

সদ্য প্রকাশ্যে এসেছে  গর্ভগৃহের একটি ছবি। সেখানে দেখা গিয়েছে গর্ভগৃহে তিনটি ধাপের একটি বেদি তৈরি করা হয়েছে। ঠিক তার উপরে ছাদটিতেই করা আছে পদ্ম ফুলের কারুকার্য। মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, মন্দিরের প্রথম তলায় থাকবে ‘রাম দরবার’। রামচন্দ্রের রাজসভার যে বর্ণনা রামায়ণে পাওয়া যায়, তার আদলেই তৈরি হবে ‘রাম দরবার’। তবে সম্পূর্ণ মন্দির তৈরিতে সময় লাগবে আরও কিছুদিন। ট্রাস্ট সূত্রে খবর, আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মন্দিরের দ্বিতীয় দফার কাজও শেষ হয়ে যাবে। তৃতীয় পর্যায়ে ৭১ একর জমির উপর অডিটোরিয়াম এবং দেওয়াল গাঁথার কাজ করা হবে। সেই কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *