বারে বারে MRI করাচ্ছেন? এতে কি ক্যান্সার হতে পারে? MRI কি আসলেই ক্ষতিকর?

বারে বারে MRI করাচ্ছেন? এতে কি ক্যান্সার হতে পারে? MRI কি আসলেই ক্ষতিকর?

বারে বারে MRI করাচ্ছেন?
এতে কি ক্যান্সার হতে পারে?

MRI কি আসলেই ক্ষতিকর?

একজন মানুষ মোট কতবার
MRI করাতে পারেন?

দেখুন কি বলছেন
চিকিৎসকেরা

এমআরআই বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা হিসেবে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। যা অগণিত মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে, আয়ু বাড়িয়েছে। আপনি দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগলে এবং কোনভাবেই আপনার রোগ নির্ণয় না হলে সাধারণত এম আর আই করা হয়ে থাকে। এমআরআই এর পূর্ণ অর্থ ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমাজিন। এম আর আই হল সবচেয়ে অত্যাধুনিক রোগ নির্ণয়কারী একটি পরীক্ষা। যার মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের খুব স্পষ্ট ছবি নেওয়া হয়।। এর সাহায্যে মানবদেহের নির্দিষ্ট রোগ খুঁজে বের করা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমআরআই রেডিওলজি বিভাগের অন্তর্গত। তবে রেডিওলজি বিভাগের অন্যান্য পরীক্ষা যেমন এক্সরে বা সিটি স্ক্যানের মতন, এমআরআই পরীক্ষাতে, মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকারক কোন বিকিরণ ব্যবহৃত হয় না। এক কথায় কোন ব্যক্তির রোগ নির্ণয়ে, সব থেকে যে আধুনিক প্রযুক্তি সেটাই হলো এমআরআই স্ক্যানার।

চলুন আজকের প্রতিবেদন থেকে জেনে নেওয়া যাক এমআরআই মেশিন কিভাবে কাজ করে? কি কারনে এমআরআই পরীক্ষা করা হয়? কিভাবে এমআরআই পরীক্ষা করা হয়? একজন মানুষ কতবার এমআরআই করতে পারেন?

এম আর আই স্ক্যানার আপনার শরীরের ছবি নেওয়ার জন্য একটি অত্যন্ত শক্তিশালী চুম্বক তরঙ্গ এবং একটি শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করে। আপনাদের আরো একবার মনে করিয়ে দিই যে এমআরআই মেশিনে, সিটি স্ক্যান বা এক্স এর মতন কোন ক্ষতিকারক বিকিরণ ব্যবহার করা হয় না। অনেকেই এমআরআই নাম শুনলেই ভয় পান। আতঙ্ক ও ভয়ে এমআরআই করাতে চান না। তাই আপনারা এই তথ্যগুলো ভালো করে মন দিয়ে শুনুন।

শরীরের অত্যন্ত সূক্ষ্ম রোগ নির্ণয়ের জন্য বর্তমানে এম আর আই একটি নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। সাধারণত এমআরআই ধারা এই রোগগুলি নির্ণয় করা হয় দেখুন –

মস্তিষ্কের রোগ যেমন টিউমার, স্ট্রোক ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়।

মেরুদন্ডের রোগ বা আঘাত নির্ণয়ে ব্যবহার করা হয়।

মহিলাদের বক্ষ যুগলের ক্যান্সার এবং তলপেটের বিভিন্ন সমস্যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য এমআরআই করা হয়।

প্রস্টেট ক্যান্সার, লিভারের সমস্যা, নাক কান গলার সমস্যা এই ধরনের সমস্যাগুলো যাচাইয়ের ক্ষেত্রেও এম আর আই করা হয়। সহজ ভাবে বললে যে সমস্ত রোগ সাধারণভাবে নির্ণয় করা বেশ কঠিন, সে সমস্ত জটিল ও কঠিন রোগগুলো খুব সহজেই এমআরআই স্ক্যানারের সাহায্যে নির্ণয় করা যায়।

অনেকেই এমআরআই মেশিনে ঢোকার আগে প্রচন্ড পরিমাণে আতঙ্কে থাকেন। কেউ কেউ ভাবেন এমআরআই মেশিনে ঢুকলে হয়তো তিনি মারাও যেতে পারে। কিন্তু আপনাদের জানিয়ে রাখি এই ধারণাগুলো সম্পূর্ণ ভুল। এমআরআই মেশিনে ঢোকার আগে বিশেষ কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না। কেননা এটি অত্যন্ত সহজ এবং ব্যথামুক্ত একটি পদ্ধতি। তবে এমআরআই মেশিনে ঢোকার আগে, রোগীকে শরীর থেকে সমস্ত ধাতব বস্তু অপসারণ করতে হয়। কারণ এমআরআই মেশিনের সমস্ত প্রসেস চুম্বক শক্তির সাহায্যে করা হয়। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এমআরআই স্ক্যানারটি ১.৫ মিটার দীর্ঘ একটি সুরঙ্গের মতন। যা একটি বড় গোলাকার চুম্বক দ্বারা বেষ্টিত। রোগীকে একটি খাটের উপর শুইয়ে এমআরআইএস স্ক্যানারের প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। ঢোকানোর সময় শরীরের যে অংশের এমআরআই করা হচ্ছে তাতে একটি রিসিভিং ডিভাইস লাগানো হয়। যা পরীক্ষিত অংশটির চতুর্দিকে বা পেছনে লাগানো হয়। এই রিসিভিং ডিভাইসটি একটি এরিয়াল এর মতন কাজ করে। এবং এটি আপনার শরীর থেকে নির্গত ক্ষুদ্র রেডিও সংকেতকে সনাক্ত করে। এই সংকেতগুলি দ্রুত স্থানীয় চৌম্বকীয় ক্ষেত্র পরিবর্তন করে, ও বিশেষ কম্পিউটার প্রক্রিয়ার দ্বারা শরীরের যে অংশের পরীক্ষা হয় সেই অংশের ছবি উৎপাদন করে। আপনাদের অবগত করে রাখি এম আর আই পরীক্ষাটি একেবারেই যন্ত্রণাহীন। এমআরআই করতে গেলে আপনাকে এক ফোঁটাও ব্যথা পেতে হবে না। তবে এমআরআই মেশিনে স্ক্যানার স্ক্যানার কাজ করে তখন ধুমধাম শব্দ তৈরি করতে পারে। আর এই সময় যাতে আপনি ভয় না পেয়ে যান তার জন্য আপনার কানে একটি হেডফোন লাগিয়ে দেওয়া হতে পারে। যার সাহায্যে আপনি গান শুনতে পারেন। জানিয়ে রাখি এই শব্দ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং আপনার চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই। একটি এমআরআই পরীক্ষা সম্পন্ন করতে ১০ থেকে ৪০ মিনিট সময় ব্যয় হয়। তবে পরীক্ষা ভেদে ৬০ মিনিট বা তার বেশি সময়ও লাগতে পারে। এমআরআই মেশিনে পরীক্ষা চলাকালীন রোগের উচিত সম্পূর্ণ শিথিল থাকা। কোনরকম নড়াচড়া করলে ছবি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। যে সকল রোগী এমআরআই করার সময় শান্তভাবে শুয়ে থাকতে পারেন না, তাদেরকে এই পরীক্ষা কালীন সময়ের জন্য হালকা ঘুম পাড়িয়ে দেওয়ার জন্য শিরাতে একটি ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হয়। একজন এমআরআই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা এর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়।

এমআরআই করাতে কত খরচ হয়?

ভারতবর্ষে এমআরআই করাতে আপনার মোটামুটি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার খরচা হতে পারে। যারা দীর্ঘদিন ধরে নানা রকম সমস্যায় ভুগছেন, তারা চাইলে স্বেচ্ছায় গোটা শরীরের এমআরআই করাতে পারেন। এতে করে শরীরের যাবতীয় রোগ ধরা পড়ে যাবে। তবে অনেকেই বিয়ে মনে করেন এমআরআই করালে ক্যান্সার হতে পারে। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। এমআরআই করালে শরীরে কোন প্রকার ক্যান্সার কিংবা হার্ট অ্যাটাকের কোন সম্ভাবনা থাকে না। এই ধারণাগুলো মানুষের সৃষ্টি। অতএব এগুলো ভেবে ভয় পাবার কোনও কারণ নেই। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন একজন মানুষ বেঁচে থাকাকালীন মোট কতবার এমআরআই করাতে পারেন। এক্ষেত্রে তাদের জানিয়ে রাখি এমআরআই করার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই। কোন মানুষের চিকিৎসার খাতিরে যতবার প্রয়োজন পড়বে ততবারই এমআরআই করাতে পারবেন।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *