চোখের ওপরে ভ্রু না থাকলে কেমন হতো? ভ্রু ছাড়া নিজের চেহারাটা একবার কল্পনা করে দেখুন তো? মানুষের চোখের ওপরে ভ্রু না থাকলে কী হতো ভেবে দেখেছেন কখনও? চোখের প্রতিরক্ষায় ভ্রু-র কি ভূমিকা রয়েছে জানেন? ভ্রু কিভাবে মনের ভাব প্রকাশ করে জানেন? কি বলছেন বিজ্ঞানীরা ?
মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে চোখই হল সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয়। এই চোখের দিকে তাকিয়েই না জানি প্রেমে পড়েছেন কত প্রেমিক প্রেমিকা। মানুষের মনের না বলা অনেক কথাও প্রকাশ পায় চোখের ভাষাতেই। তবে চোখের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে ভ্রু-র অবদানও কিন্তু কম নয়। একেক জনের চোখের ভ্রু বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। ভ্রু আমাদের চোখের ‘সুইস আর্মি নাইফ’ অর্থাৎ, এটা একাধিক কাজ করে।
তাই ভ্রু যে শুধুই আমাদের চোখের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে তা কিন্তু নয়! চোখকে সুরক্ষিত রাখতেও বহুমুখী ভূমিকা রয়েছে ভ্রু-র। চোখের ওপর থেকে নিচে ভ্রু এমনভাবে বসানো থাকে, যার ফলে বৃষ্টি, ও ঘাম থেকে রাখা পায় আমাদের চোখ। তাই চোখের ওপর ভ্রু না থাকলে চোখের মধ্যে ধুলো,বালি,জল ঢুকে গিয়ে আমাদের চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যেত। অনেকসময় সূর্যের প্রখর আলো থেকেও চোখকে সুরক্ষা দেয় ভ্রু। বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ দেহের বেশির ভাগ লোম হারালেও থেকে গিয়েছে চোখের পালক আর ভ্রু। অনেক সময় বয়স জনিত কারণে কিংবা ক্যানসার বা অন্য কোনো রোগের জন্য ভ্রু ঝরে যেতে পারে।
এছাড়াও চোখের ইশারায় ভ্রু নাড়িয়েই অনেকেই ভাব প্রকাশ করে থাকেন। বিশেষ করে নাচ, গান এবং অভিনয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন এক্সপ্রেশন বোঝাতে ভ্রুর বিশেষ ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। মুখের অভিব্যক্তির সাথেই মানুষের আনন্দ, দুঃখ ও বিস্ময়ের মতো মনের সূক্ষ অনুভূতিগুলোকে আরও বেশি জীবন্ত করে তোলে এই ভ্রুর নড়াচড়া।
অনেক সময় একটাও শব্দ খরচ না করেই শুধু ভ্রু নাচিয়েই অনেক কিছু বলে দেওয়া যায়। কার্টুন ক্যারেক্টর গুলোতেও চোখের ওপরে বিভিন্ন ধরনের ভ্রু এঁকে রাগ, ক্ষোভের মতো অভিব্যক্তি প্রকাশ করা হয়। এমনকি বিজ্ঞানীরাও বলেন, বিস্ময়, আনন্দ, কষ্ট, কিংবা ক্ষোভের মতো মৌখিক অভিব্যক্তি প্রকাশের ক্ষেত্রেও ভ্রু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে চোখের চেয়ে ভ্রু দেখে মানুষ পরিচিত ব্যক্তিকে সহজে চিনতে পারে। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) এক জরিপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের ২টি ফটোশপ করা ছবি দেখানো হয়। একটিতে নিক্সনের চোখ আরেকটিকে ভ্রু মুছে ফেলা হয়। এরপর দেখা যায় অংশগ্রহণকারীরা ভ্রু ছাড়া নিক্সনকে সহজে চিনতে পারেননি। অন্যান্য সেলিব্রেটিদেরও অংশগ্রহণকারীরা ভ্রু দেখেই সহজে চিনতে পেরেছেন।
Leave a Reply