মাত্র ২ মিনিটে দেখুন মহুয়া মৈত্রের ৫টি বিতর্কিত কাণ্ড! কখনো মা কালিকে অপমান, কখনো সাংবাদিদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য,
মাত্র ২ মিনিটে দেখুন
মহুয়া মৈত্রের ৫টি বিতর্কিত কাণ্ড
কখনো মা কালীকে চরম অপমান,
কখনো সাংবাদিকদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য!
২০২০ থেকে ২০২৩,
মাত্র ৩ বছরে বেঁধেছে
মহুয়ার সেরা ৫টি বিতর্ক
দেখুন এক নজরে
১, “দু পয়সার প্রেস”
এই ঘটনাটির সূত্রপাত ২০২০ সালে। তখনও জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী ছিলেন মহুয়া মৈত্র। ওই বছরই নদীয়ার গয়েশপুর জেলার একটি কর্মী সভায়, তৃণমূলের সভানেত্রী মহুয়া মৈত্র গিয়েছিলেন। মহুয়া, সেখানে গাড়ি থেকে নামতেই, সেখানকার স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চরম- বচসা শুরু হয়েছিল। সেই সময় মহুয়া মৈত্রের গাড়ি ঘিরে চরম বিক্ষোভ হয়। কিন্তু, হাতাহাতিতে জড়িত দুই গোষ্ঠীকে বুঝিয়ে শুনিয়ে কোন রকমে, ভিতরে নিয়ে গিয়ে বৈঠক শুরু করেন মহুয়া মৈত্র। শোনা যায় মহুয়া মৈত্র যেখানে বৈঠক শুরু করেছিলেন, সেখানে সংবাদমাধ্যমের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধিও ঢুকে পড়েছিলেন। যা দেখে আচমকা মেজাজ হারান কৃষ্ণনগরের সাংসদ। দলীয় বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের কে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন, সেই নিয়েই দলের নেতা কর্মীদের কাছে প্রশ্ন করেন মহুয়া মৈত্র। এরপর রেগেমেগে উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে মহুয়া মৈত্রকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে,
‘ কে এই দু পয়সার প্রেসকে ভেতরে ডাকে? কর্মী বৈঠক হচ্ছে, আর সবাই টিভিতে মুখ দেখাতে ব্যস্ত! আমি নির্দেশ দিচ্ছি প্রেসকে সরান’
মহুয়ার সেই বক্তব্য ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়ে যায় নেটমাধ্যমে। তারপরই শুরু হয় মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে চরম বিতর্ক। মিডিয়াকে দু পয়সার প্রেস বলায় সোশ্যাল মিডিয়ায় মহুয়া মৈত্রকে এক হাত নেন বিরোধী থেকে শাসকদলের সদস্যরা। এমনকি বড় বড় একাধিক প্রেসক্লাব থেকে তৃণমূলের সাংসদ মহুয়াকে বয়কট পর্যন্ত করা হয়।
২, মা কালীকে চরম অপমান
ঘটনাটি ২০২২ সালের জুলাই মাসের। ওই বছর কানাডার এক তথ্য চিত্রের পোস্টার ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল সারা দেশে। আর সেই বিতর্কে নাম জড়িয়ে ফেলেন কৃষ্ণনগরের সংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি মূলত সেই বিতর্কের মধ্যে ঘি ঢেলে দিয়েছিলেন। বিতর্কটির জল এতটাই গড়িয়েছিল যে মহুয়া মৈত্রের নামে থানায় এফআইআর পর্যন্ত করা হয়েছিল। ঠিক কি ঘটেছিল সেদিন?
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেছিলেন যে, ভগবানকে একেক জন একেক রকম ভাবে ডাকেন। কোথাও ভগবানকে হুইস্কি দিয়ে পুজো করা হয়, আবার কোথাও ভগবানকে নিরামিষ দিয়ে পুজো করা হয়। বলতে বলতেই মহুয়া আরো বলেন, হিন্দুদের মা কালী মাংস খান, তিনি নেশা করেন। মা কালী, আমিষ ভোজন করেন। মহুয়া মৈত্রের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে চরম বিতর্ক দানা বেধেছিল। গোটা দেশ উত্তাল হয়ে গিয়েছিল তার মন্তব্যের জেরে। তার বিরুদ্ধে, হিন্দুদের ভাবাঘাতে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছিল। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে মহুয়ার মন্তব্যের জেরে শাসক দলের সদস্যরা তার থেকে দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছিল। এমনকি মহুয়ার মন্তব্যে যে তৃণমূলের সমর্থন নেই, তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
৩, মহুয়া মৈত্রের দু লাখ টাকার ব্যাগ লুকানো –
ঘটনাটি ২০২২ সালের। মহুয়া মৈত্রের অন্যান্য বিতর্কের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। ওই বছর লোকসভার বাদল অধিবেশনে মূল্য বৃদ্ধির বিতর্ক চলছিল। সেই বিতর্কের মাঝেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। সেই সময় তার পাশে বসে ছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কাকলির ভাষণের মধ্যেই মহুয়া মৈত্রকে নিজের পাশে রাখা একটি হ্যান্ড ব্যাগ টেবিলের নিচে রাখতে দেখা যায়। কাকলি ঘোষ যখন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করছিলেন, ঠিক সেই সময়ে কেন মহুয়া মৈত্র, ব্যাগ সরিয়ে নিয়েছেন, তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। এমনকি মহুয়া মৈত্রের ব্যাগ সরানোর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে হু হু করে ভাইরাল হয়ে যায়। মহুয়া মৈত্রের ব্যাগ সম্পর্কে একজন বলেন, ব্যাগটির দাম দু লক্ষ টাকা। ব্যাগটি বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ড লুই ভিটন কোম্পানির। অনেকেই বলেন মূল্যবৃদ্ধির বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল বলেই, মহুয়া মিত্র তার দামি ব্যাগটি বেঞ্চের নিচে লুকিয়ে দিয়েছেন।
৪, শশী থারুরের সঙ্গে মহুয়ার ধূমপানের ছবি –
ঘটনাটি ২০২৩ সালের অর্থাৎ চলতি বছরের। এই ঘটনাটিতে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল মহুয়া মৈত্রের। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের ডিনারের পার্টিতে গিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। সেখানে সবুজ শর্ট, ড্রেসে নীল সোফায় বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল মহুয়া মৈত্রকে। হাতে ছিল শ্যাম্পেনের গ্লাস
ঠোঁটে সিগারেট। আর তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। দুজনের মাখামাখি অন্তরঙ্গতা ভাইরাল হয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অবশ্য এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে যান মহুয়া মৈত্র। তিনি জোর গলায় বলেন বিজেপি আইটি সেল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এই ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
৫, এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ ও উপহার নিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র –
শশী থারুরের সঙ্গে মহুয়া মৈত্রের বিতর্কিত ছবি ভাইরালের পর পর , এই বিতর্কটিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এই মর্মে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে, দাবি করেন মহুয়া মৈত্র এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন করেছেন। তার এই অভিযোগে হইচই পড়ে যায় লোকসভা জুড়ে। অবশ্য পরবর্তীতে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদও খারিজ হয়েছে।
Leave a Reply