সীতার অভিশাপে, পৃথিবীতে আজও কষ্ট পাচ্ছেন এই ৪ জন!

সীতার অভিশাপে, পৃথিবীতে আজও কষ্ট পাচ্ছেন এই ৪ জন!

সীতার অভিশাপে,
পৃথিবীতে আজও কষ্ট পাচ্ছেন এই ৪ জন!
জানেন এই ৪ জন কারা?

কি কারণে, এদের উপর
মা সীতা রুষ্ট হয়েছিলেন?

কি কি অভিশাপ পেয়েছিলেন
তারা?

শুনলে শিউরে উঠবেন

আচ্ছা, আপনি কি কখনো ভেবেছেন, রামায়ণের মা সীতা কাউকে অভিশাপ দিতে পারেন? হিন্দু শাস্ত্রে মা সীতাকে তাকে লক্ষ্মীর অবতার মানা হয়। হিন্দু পুরাণে দেবী সীতাকে ত্যাগের প্রতীক বলা হয়। দেবী সীতা, তার স্বামী দশরথ পুত্র শ্রী রামচন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। হাসিমুখে রাজ্যসুখ ত্যাগ করেছিলেন এবং ১৪ বছরের জন্য বনবাসে গিয়েছিলেন। এই একজন নারী সমস্ত কষ্ট হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলেন। সেই পরম মমতাময়ী নারী কি কখনও কাউকে অভিশাপ দিতে পারেন?

বিশ্বাস না হলেও রামায়ণে এমনটাই হয়েছিল। শান্তশিষ্ট মা সীতা, ৪ জনের উপর এতটাই রাগান্বিত হয়েছিলেন যে, তাদেরকে অভিশাপ দিয়ে ছারখার করে দিয়েছিলেন। ত্রেতা যুগে দেওয়া মা সীতার সেই অভিশাপের বোঝা আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন এই চারজন অভিশপ্ত। সচিত্র কৃত্তিবাসী রামায়ণে এই অভিশাপের ঘটনা বিস্তারিত বলা হয়েছে। আসুন আজ আমরা জেনে নেব, মা সীতা কোন চারজনকে অভিশাপ দিয়েছিলেন এবং সেই অভিশাপে আজও তারা কিভাবে দিন যাপন করছেন সেই সম্পর্কে।

সীতা যে চারজনকে অভিশাপ দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে একজন ব্রাহ্মণ, একটি নদী, একটি কাক ও একটি গরু। এই চারজন সীতার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলেন। আরে ঠিক এই কারণেই মা সীতা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে তাদেরকে, জন্ম জন্মান্তরের জন্য অভিশাপ দেন। এদেরকে এমন অভিশাপ দিয়েছেন, এরা যতবারই জন্ম নেবে ততবারই সেই অভিশাপের ফল ভোগ করতে হবে। অর্থাৎ এই চারজন মা সীতার অভিশাপ থেকে কোনদিনও রেহাই পাবেন না। এই চারজন ঠিক কি মিথ্যা কথা বলেছিল?

তাহলে শুনুন, রাজা দশরথের মৃত্যুর পর তার দুই পুত্র রাম ও লক্ষণ পিণ্ড দানের জন্য সমস্ত সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের ফিরতে অনেকটাই দেরি হচ্ছিল দেখে মা সীতা শশুরমশাই দশরথের পিণ্ড নিজেই সেরে ফেলেন। সে সময় তিনি চারজনকে সাক্ষী রাখেন। সমস্ত বিধি-বিধান মেনে তার স্বর্গীয় শ্বশুর রাজা দশরথের পিন্ডদান করেছিলেন। যার সাক্ষী ছিল এক ব্রাহ্মণ, একটি নদী, একটি গরু ও একটি কাক। এরপর রাম ও লক্ষণ ফিরে এসে দেখেন সীতা পিন্ডদানের সমস্ত কাজ সমাপ্ত করে ফেলেছেন। তারা বিস্মিত হয়ে এইসব ঘটনা জানতে চাইলে সীতা বলেন, সমস্ত, বিধিবান বিধি-বিধান মেনে তিনি এই কাজ সম্পন্ন করেছেন। সীতার উত্তর শুনে রাম বিশ্বাস করতে না চাইলে সীতা ওই চারজনের কথা বলেন যারা পিন্ডদানের সময় সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু রামের সামনে তখন ওই চারজনই অস্বীকার করেছিলেন সীতার পিণ্ড দানের কথা। তাদের এই কাণ্ড দেখে মা সীতা অত্যন্ত রেগে গিয়ে বলেন, তাদেরকে চিরকাল অভিশাপ বয়ে বেড়াতে হবে। ব্রাহ্মণকে অভিশাপ দিয়ে মা সীতা বলেন, ব্রাহ্মণরা আজীবন গরীবই থাকবে। পূজা অর্চনার পরে যা কিছু অনুদান পাবে তা দিয়েও কখনো ব্রাহ্মণের দারিদ্র ঘুচবে না। এমনকি কোন আশাও পূরণ হবে না।

এরপর মা সীতা ফল্গু নদিকে অভিশাপ দিয়ে বলেন, এই নদীর মধ্য দিয়ে কখনো জল প্রভাবিত হবে না। এভাবেই সারা জীবন ফলগু নদিকে কাঁদতে হবে। শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবে ফলগু নদী। বর্ষাকালেও খরায় ছটফট করবে এই নদীটি।

মা সীতা কাককে অভিশাপ দিয়ে বলেন, কাকেরা কখনোই পেট পুরে খেতে পারবে না। যা কিছুই খাবে তা মারামারি করেই খেতে হবে। এরা মানুষের কাছ থেকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য পাবে।

আর সবার শেষে গরুকে অভিশাপ দিয়ে বলেন, সবার বাড়িতে গরুর পূজা হলেও, সকল বাড়িতেই মানুষের এঁটো খেতে হবে তাকে।

মা সীতার অভিশাপ মেনে আজও এই চারজনকে এই কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। আজও এদের কোন সম্মান নেই কদর নেই। মানুষের উচ্ছিষ্ট ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য খেয়েই জীবন যাপন করছেন এই চারজন।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *