জানেন ট্রেনের এক একটি ইঞ্জিন কত CC-র হয়? চমকে যাবেন একটি রেল ইঞ্জিনের ধারণক্ষমতা শুনলে! চার চাকা হোক কিংবা দু-চাকা গাড়ির মাইলেজের তো খোঁজ রাখেন, কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন ট্রেনের মাইলেজ কত? ১ কিলোমিটার যেতে কত লিটার ডিজেল খরচ হয় ট্রেনের?
ভারতীয় রেল আমাদের দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গণ পরিবহন ব্যবস্থা। যাত্রীদের সর্বশ্রেষ্ঠ পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে ভারতীয় রেল। কাছের হোক কিংবা দূরে যে কোনো সফরেই সকলে চোখ বুজে ভরসা করেন এই বৃহত্তম গণপরিবহন ব্যবস্থার উপর। নিরাপদ সফরের পাশাপাশি ভারতীয় রেল নানান অজানা তথ্যের ভান্ডার। যার খুঁটিনাটি অনেক তথ্যই জানা নেই সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে ট্রেনের যে ইঞ্জিন ট্রেনকে দূরদূরান্তে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তার ধারণক্ষমতা কত? ট্রেনের ইঞ্জিন কত সিসির হয়? তা সম্পর্কে ধারণা নেই অনেকেরই। তাছাড়া কখনও কি ভেবে দেখেছেন ট্রেনের মাইলেজ কত?
ট্রেনের ইঞ্জিনটিকে বলা হয় লোকোমোটিভ। আর ট্রেনের চালককে বলা হয় লোকোপাইলট। তিনিই পুরো ট্রেনটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার দায়িত্বে থাকেন। রেলের ইঞ্জিনে মোট ১৬ টি সিলিন্ডার থাকে। এক একটি সিলিন্ডারের ধারণ ক্ষমতা ১৫০ লিটার ।এখানে বলে রাখি গাড়িতে মাত্র ৪টি সিলিন্ডার থাকে। ট্রেনে প্রায় ৫০ লিটারের ফুয়েল ট্যাঙ্ক থাকলেও গাড়ির ইঞ্জিনে থাকে মাত্র ১-২ লিটারের ক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিন।
অন্যদিকে ট্রেনের সিসি ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয় একটি ট্রেনের একটি সিলিন্ডারের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১০ হাজার ৯৪১ সিসি। এই সংখ্যাটা ১৬ দিয়ে গুণ করলে দেখা যাবে একটি ট্রেনের মোট ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১.৭৫ লক্ষ সিসিতে পৌঁছবে। তাই বোঝাই যাচ্ছে ট্রেনের সিসি এবং বাইকের সিসির মধ্যেও রয়েছে বিরাট পার্থক্য।
ট্রেনের ইঞ্জিন লোডিংয়ের পাশাপাশি ট্রেনের সমস্ত কোচও টেনে নেয়। তাই এমন শক্তিশালী ইঞ্জিন তৈরি করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভারতীয় রেল। ডিজেল এবং বৈদ্যুতিক ভারতে প্রধানত এই দুই ধরনের রেল ইঞ্জিন রয়েছে। রিপোর্ট বলছে বর্তমানে ভারতে প্রায় ৫২ শতাংশ ট্রেনই ডিজেল চালিত ইঞ্জিনের ওপর নির্ভরশীল।
বৈদ্যুতিক ট্র্যাকগুলিতে ডিজেল ইঞ্জিনের অপারেশনাল সমস্যা কাটিয়ে উঠতেই এগুলি ডুয়েল মোডে চালানো হচ্ছে। তাই এই লোকোমোটিভ ইঞ্জিনগুলি প্রয়োজনে ডিজেল এবং বৈদ্যুতিক উভয় ক্ষেত্রেই চলতে পারে।
প্রত্যেক যানবাহনের মতোই নির্দিষ্ট মাইলেজ রয়েছে ট্রেনেরও। তবে ট্রেনের মাইলেজ সরাসরি বলা খুবই কঠিন, কারণ ট্রেনের মাইলেজ নির্ভর করে রুট, প্যাসেঞ্জার ট্রেন, এক্সপ্রেস বা ট্রেনের বগির সংখ্যার উপরে।
কম বগি থাকলে, ইঞ্জিনে বেশি লোড পড়ে না। সেক্ষেত্রে, ইঞ্জিনের শক্তি বৃদ্ধি পায়। একটি ডিজেল ইঞ্জিন ট্রেনের মাইলেজ প্রতি ঘণ্টার ভিত্তিতে গণনা করা হয়। ২৪-২৫টি বগির ট্রেনে ১ কিলোমিটারের জন্য ৬ লিটার ডিজেল লাগে। তবে সুপারফাস্ট ট্রেনের তুলনায় যাত্রিবাহী লোকাল ট্রেনে বেশি ডিজেলের খরচ হয়।
অনেক গুলো স্টেশনে স্টপেজ দেওয়ার জন্য একটি লোকাল ট্রেনের ১ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে ৫-৬ লিটার ডিজেল লাগে। অন্যদিকে, ১২ কোচ বিশিষ্ট একটি এক্সপ্রেস ট্রেন ইঞ্জিনের ১ কিলোমিটার যেতে খরচ হয় ৪.৫ লিটার ডিজেল। এছাড়া ইঞ্জিনের শক্তির উপরে নির্ভর করে ট্রেনের মাইলেজ।
Leave a Reply