জিওনা

বিয়ে-সম্পর্ক এখনকার দিনে বড়ই ঠুনকো। তাই দিনে দিনে বাড়ছে ডিভোর্সের সংখ্যা। তবে মানুষ এক বিয়ে ভেঙে আবার বিয়েও করছেন। কিন্তু আজ আপনাদের এমন একজনের কথা বলব যিনি বিয়ে করেই হ্যাটট্রিক করেছেন। তৈরি করেছেন ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। তাঁর  স্ত্রীদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও  মিজোরাম বাসি এই জিওনা চানার মোট স্ত্রীর সংখ্যা ৩৯ জন। মোট সন্তান ৯৪ জন , তার মধ্যে ১৪ জন পুত্রবধূ, ৩৩ জন নাতি ও ১ জন পুতি। সব মিলিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই যৌথ পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ১৮১ জন।

যার জন্য তিনি গর্বিত তবে সন্তুষ্ট নন। একবার এক সাক্ষাৎকারে জিওনা বলেছিলেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবারের প্রধান এবং ৩৯ স্ত্রীর স্বামী হতে পেরে আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি। নিজেকে ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান মনে হচ্ছে।। তবে আমি এই পরিবার আরো বাড়াতে চাই। আমার দেখভাল করার জন্য এখন অনেকেই রয়েছে এটাই পরম শান্তির।’  ২০২১ সালের জুন মাসে বার্ধক্যজনিত কারণে  ৭৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবারের এই কর্তা। তাঁর মৃত্যুর পর আজও একসাথেই বাস করেন বিশ্বের সবথেকে বড় এই পরিবার। মিজোরামের পাহাড়ের কোলে অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম বাকটাওয়াং-এ মস্ত একটি চার তলা বাড়িতে রয়েছে মোট ১০০টি ঘর।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে করেছিলেন জিওনা চানা। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। তবে তাঁর প্রথম স্ত্রী তার থেকে ৩ বছরের বড় ছিলেন। তবে জিওনা এক বিয়েতে সন্তুষ্ট থাকতে পারেননি। এইভাবেই একের পর এক বিয়ে করতে করতে তাঁর মোট স্ত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৯। পাল্লা দিয়ে বাড়ে সন্তান সংখ্যাও। এক বছরে দশটা বিয়ে করে রেকর্ড করেছিলেন তিনি।

জানা যায় গৃহকর্তা জিওনার একটি নিজস্ব শোয়ার ঘর ছিল। তার শোয়ার ঘরের পাশে  তাঁর স্ত্রীদের জন্য আছে  একটি ডরমিটরি। জনশ্রুতি অনুযায়ী তিনি সবসময় সাত-আট জন স্ত্রীকে নিজের আশপাশে রাখতেন। তবে যে স্ত্রীর বয়স কম তাঁকে সবচেয়ে কাছের কক্ষে আর যার বয়স বেশি তাকে দূরের কক্ষে রাখতেন জিওনা। তবে সব স্ত্রীরই তাঁর ঘরে প্রবেশের অধিকার ছিল। এই পরিবারের  মহিলাদের বেশিরভাগ সময়ই রান্নাঘরে কাটে।

তাঁদের  বেশিরভাগ টাকাই খাওয়া-দাওয়ার পেছনে খরচ হয়। জানলে অবাক হবেন এই পরিবারে প্রতিদিন প্রায় এক কুইন্টাল ডাল ও চাল রান্না করা হয়। এরা একদিনে প্রায় ৪০ কেজি মুরগির মাংস খায়। তবে এরা নিজেরাই বাড়ির বাগানে পালংশাক, বাঁধাকপি, সরিষা,লঙ্কা  এবং ব্রোকলির চাষ করতেন। তাদের বাড়ির সব সদস্যদেরই খাওয়ার জন্য বিশাল একটি ডাইনিং হল আছে। পরিবারের সবাই সেখানে বসেই একসাথে খাওয়া-দাওয়া করেন।  বর্তমানে পর্যটকদের কাছে এই বাড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *