ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি

অক্টোবরের ৫ তারিখ থেকে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়েই শুরু হয়েছিল ২০২৩-এর ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এবছর ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যন্ত মোট ১০টি স্টেডিয়ামে প্রায় ৪৮টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। গোটা মরশুম ঝোড়ো ব্যাটিং করেও ফাইনাল ম্যাচেই ঘরের মাঠেই টিম ইন্ডিয়াকে দুরমুষ করে সোনালী শিরোপা ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই নিয়ে ৬ বার সেরার শিরোপা জিতলো অস্ট্রেলিয়া।

আর এখন প্রত্যেকেরই নজর ওই বহু মূল্যবান সোনালী ট্রফিটার দিকে। সকলেই জানতে চান ওই ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি কি দিয়ে তৈরি? এর ওজন কত? এতে কতটা পরিমাণে সোনা- রুপো রয়েছে? আবার কেউ কেউ জানতে চান বিজয়ী দলের পুরস্কার মূল্য কত? এখানে বলে রাখি ১৯৭৫ সাল থেকে ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হলেও তখন কিন্তু বিজয়ী দলের হাতে এই ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি তুলে দেওয়া হতো না। ১৯৯৯ সালেই প্রথমে আসে এখনকার এই ট্রফিটি। তার আগে প্রত্যেক বিজয়ী দেশের জন্য থাকতো অন্য ডিজাইনের ট্রফি।

এই ট্রফিটির ডিজাইন করেছেন শিল্পী জো ক্লার্ক। ট্রফিটির তিনটি স্ট্যাম্প বেল এর উপর বসানো আছে একটি বল। ক্রিকেট বল আর পৃথিবীকে একসাথে তুলে ধরতেই ট্রফির ওপরের অংশে বসানো হয় একটি সোনালী রঙের গোলাকার গ্লোব। এই পুরো ট্রফিটাই বসানো হয়েছে গোলাকার চাকতিতে। পরবর্তীতে সিনিয়র জিজাইনার ডেভিড গ্লোবটির ওপর পৃথিবীর মানচিত্র খোদাই করেন। সোনা এবং রুপোর তৈরী এই ট্রফিটির মোট ওজন ১১ কেজি। উচ্চতা ৬০ সেন্টিমিটার। ট্রফিতে থাকা বলটির ওজন প্রায় ৪ কেজি।

অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপ ট্রফিটি সম্পূর্ণ সোনা-রপো দিয়ে তৈরি। কিন্তু আসলে তা নয়, ট্রফির ঔজ্জ্বল্য আর স্থায়িত্ব বাড়াতেই কয়েকবার সোনা-রুপোর জলে ভেজানো হয়েছে। এখনকার এই বিশ্বকাপ ট্রফিটি তৈরি করতে সেইসময় আইসিসির খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা।

তবে ট্রফি ছাড়াও প্রত্যেক বিশ্বকাপে থাকে বিশাল অঙ্কের পুরস্কার মূল্য।এবছর বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১০টি দলই আর্থিক পুরস্কার পেয়েছে। বিশ্বকাপের রাউন্ড রবিন পর্বে প্রতিটি ম্যাচের জন্যই ৩৩ লক্ষ টাকা পেয়েছে প্রত্যেকটি দল। ধাপে ধাপে বেড়েছে টাকার অঙ্ক। যে ছ’টি দল বিশ্বকাপের নক আউটে উঠতে পারেনি তারা ৮৩ লক্ষ টাকা করে পেয়েছে। সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়া নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকারও বেশ ভালোই রোজগার হয়েছে এবছর। তারা আলাদা করে ৬ কোটি টাকা পেয়েছে। আর বিশ্বকাপের ফাইনাল জেতায় ৩৩ কোটি টাকা পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আর ঘরের মাঠে রানার্স হয়ে ভারতের ঝুলিতে উঠেছে ১৬ কোটি টাকা।

তবে বিশ্বকাপ থেকে এবছর সব থেকে বেশি রোজগার করেছে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বে ৭টি ম্যাচ জেতায় ২ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা পেয়েছে এই দল। তাদের মোট রোজগার ৩৫ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারত গ্রুপ পর্বের সব ক’টি ম্যাচ জিতে মোট ২ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা পেয়েছে। সব মিলিয়ে টিম ইন্ডিয়ার ঘরে উঠেছে ১৮ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা। দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রুপ পর্বে ৭টি ম্যাচ জিতে পেয়েছে ২ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। তাদের মোট রোজগার ৮ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। গ্রুপ পর্বে ৫টি ম্যাচ জিতে নিউজিল্যান্ড পেয়েছে ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। তাদের মোট রোজগার ৭ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা।

পঞ্চম স্থানে থাকা পাকিস্তান গ্রুপ পর্বের ৪টি ম্যাচ জিতে ১ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা পেয়েছে। তাদের মোট আয় হয়েছে ২ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। ষষ্ঠ স্থানে থাকা আফগানিস্তান ও একই টাকা পেয়েছে। সপ্তম স্থানে থাকা ইংল্যান্ড ৩টি ম্যাচ জিতে পেয়েছে ৯৯ লক্ষ টাকা। তাদের মোট রোজগার হয়েছে ১ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা।

বিশ্বকাপের শেষ তিনটি দল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডস ২টি করে ম্যাচ জিতে ৬৬ লক্ষ টাকা পেয়েছে। তাদের মোট রোজগার ১ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *