প্রতিদিন কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন হাজার হাজার মানুষ। তাই শুধু স্বপ্ন দেখলেই তো আর ব্যাংকে টাকা চলে আসবে না। তাই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যও নির্ধারণ করতে হবে। তাই প্রতিদিন বাজে খরচ বন্ধ করে আজ থেকেই টাকা জমানো শুরু করুন এই ফর্মুলায়। প্রত্যেক দিন ১০০ টাকা করে জমালেও মাত্র কয়েক বছরেই হয়ে যাবেন কোটিপতি। না কোনো মশকরা নয় এমনটা সত্যিই সম্ভব। তবে তার জন্য প্রয়োজন শুধু সঠিক বিনিয়োগ কৌশল আর টার্গেট। মনে রাখতে হবে কোটিপতি হওয়ার কোনও শর্টকাট নেই। তাই ধৈর্য ধরে বিনিয়োগ করতে হবে।
তার জন্য প্রথমেই জানা প্রয়োজন পাওয়ার অফ কম্পাউন্ডিং বিষয়টি কি?
ফিক্সড ডিপোজিটে যেভাবে সুদ পাওয়া যায়, এক্ষেত্রেও ঠিক তেমন। মূল বিনিয়োগের ওপর যে সুদ যোগ হয়, পরবর্তী ক্ষেত্রে সেই যোগফলের উপর আবার সুদ পাওয়া যায়। তাই শুনতে অবাক লাগলেও প্রতিদিন ১০০ টাকা করে জমিয়েও কম্পাউন্ডিং এর মাধ্যমে কোটিপতি হওয়া সম্ভব। তাই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিশালী সূত্র হল এই – ‘পাওয়ার অফ কম্পাউন্ডিং’ অর্থাৎ – (বিনিয়োগ + সুদ) + সুদ + ।
অল্প বিনিয়োগ বেশি লাভ
এক্ষেত্রে সুবিধা হল প্রতিমাসে অল্প পরিমাণ বিনিয়োগ করেই মোটা টাকা জমানো যায়। কেউ যদি প্রতিমাসে জমানো টাকা মিউচুয়াল ফান্ডে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান বা SIP) করেন তাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি কোটিপতি হয়ে যাবেন আর। SIP -এর সবচেয়ে বড় ম্যাজিক হল, প্রতিদিন মাত্র ১০০ টাকা করে জমিয়েই কোটিপতি হওয়া যায়। আসুন এবার হিসাব টা বুঝে নেওয়া যাক।
প্রতিদিন যদি ১০০ টাকা করে জমা করা হয় তাহলে এক মাসে মোট ৩,০০০ টাকা জমা হবে। অর্থাৎ বছরে ৩৬,০০০ টাকা। কিন্তু মনে রাখতে হবে রিটার্নের পরিমাণ বয়স এবং বিনিয়োগের সময়কালের উপর নির্ভর করে।
তাই কেউ যদি ২৫ বছর বয়স থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে বিনিয়োগ করতে শুরু করেন সেক্ষেত্রে তাঁর মোট বিনিয়োগের সময়কাল হবে ৩৫ বছর। এক্ষেত্রে তিনি যদি মোট ৩৫ বছর ধরে প্রত্যেক বছর ৩৬ হাজার টাকা করে জমা করেন তাহলে তার মোট জমানো টাকার পরিমান হবে ১২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে যদি ১০ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যায় তাহলে খুব সহজেই ৩৫ বছরের মধ্যে ১ কোটি টাকার বেশি জমা হবে।SIP -প্ল্যানে বিনিয়োগ করা টাকার ওপর কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট দেওয়া হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা জমা করা টাকার উপর তো সুদ পাবেন-ই তার সঙ্গে সুদের উপরও সুদ পাবেন।
এরপরে বিনিয়োগকারীরা সুদের উপরেও সুদ পাবেন। অর্থাৎ প্রথম মাসে ৩ হাজার টাকায় ১০ শতাংশ সুদ হিসাবে ৩০০ টাকা পেলে পরের মাসে ৩০০০+৩০০০+৩০০০ অর্থাৎ মোট ৬,৩০০ টাকা সুদ পাবেন। এটা সম্ভব হয় পাওয়ার অফ কম্পাউন্ডিং-এর মাধ্যমে।
এই কারণেই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদী হওয়া উচিত। কারণ, চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ পাওয়ায় ছোট বিনিয়োগও দীর্ঘমেয়াদে একটি বড় ফান্ডে পরিণত হয়। সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানে প্রতি মাসে, ত্রৈমাসিকে এবং বছর হিসাবে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা রাখার সুযোগ রয়েছে। আবার কেউ যদি অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে মোটা অঙ্কের ফান্ড তৈরি করতে চান সেটাও সম্ভব। তবে কোটিপতি হওয়ার এই ফর্মুলা নিঃসন্দেহে দারুণ হলেও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা ঝুঁকিপূর্ণ। শেয়ারবাজারে উত্থান-পতনের কারণে বিনিয়োগও প্রভাবিত হয়।
Leave a Reply