রামসেতু

রামায়ণের কাহিনী অনুসারে সীতা উদ্ধারের জন্য বানর সেনাদের নিয়ে সুবিশাল রামসেতু নির্মাণ করেছিলেন ভগবান শ্রীরামচন্দ্র। যা এখন আদম সেতু নামেও পরিচিত। এই রাম সেতুর সাথেই জড়িত রয়েছে একাধিক পৌরাণিক কাহিনী। কিন্তু অনেকেই জানেন না রামায়ণের এই রাম সেতুর সাথে ক্ষুদ্র প্রাণী কাঠবেড়ালি কি যোগসূত্র? কাঠবিড়ালির পিঠের তিনটি খাড়া দাগের সৃষ্টির পিছনেই বা লুকিয়ে রয়েছে কোন রহস্য ?

রামায়ণে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে জনক কন্যা সীতার সাথে বিয়ে হয়েছিল ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের। কিন্তু পরবর্তীতে পিতার আদেশ পালন করতে ১৪ বছর বনবাসে গিয়েছিলেন শ্রীরাম। এই বনবাসে তাঁর  সঙ্গী হয়েছিলেন স্ত্রী সীতা এবং ভাই লক্ষণ। বনবাসের সময় রামচন্দ্রের দৃষ্টি এড়িয়ে ছল করে মাতা সীতাকে হরণ করেছিল লঙ্কার রাজা রাবণ। পরবর্তীতে স্ত্রী সীতাকে উদ্ধারের জন্যই রামচন্দ্র এই রাম সেতু নির্মাণ করেছিলেন।

পৌরাণিক কাহিনী:

ভগবান রামচন্দ্রের পরম ভক্ত হলেন হনুমান। নিজের বুক চীড়ে তার প্রমাণ  দিয়েছিলেন তিনি। রামসেতু নির্মাণের পিছনেও এক বিরাট অবদান রয়েছে হনুমানজির। তাঁর নেতৃত্বেই এই রামসেতু নির্মাণে  সাহায্য করেছিল বিরাট বানর সেনা। তারাই জলের মধ্যে বড় বড় পাথর ফেলে নির্মাণ করেছিলেন এই সেতু।  তবে অনেকেই জানেন না এই রামসেতু নির্মাণের এক অজানা রহস্য। যার সাথে যুক্ত রয়েছে ক্ষুদ্র প্রাণী কাঠবিড়ালি।

রাম সেতু আর কাঠবেড়ালির কাহিনী: 

রাম সেতু নির্মাণের সময় বানর সেনাদের দেখে রামচন্দ্রকে সাহায্য করার জন্য এক ক্ষুদ্র কাঠবেড়ালি ছোট ছোট পাথর জলে ফেলেছিলেন। কিন্তু তা দেখে হনুমান হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন তার মতো ক্ষুদ্র প্রাণীর সমুদ্রে বড় বড় পাথর ফেলার এই কাজ থেকে দূরে থাকাই ভালো। কিন্তু হনুমানের কথা শুনে মনে আঘাত পেয়েছিল কাঠবেড়ালি।

পরে এই কাঠবেড়ালি ভগবান রামচন্দ্রের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিল। তখন সেই কষ্টের কাহিনী শুনে কাঠ বেড়ালিকে রামচন্দ্র বুঝিয়েছিলেন ছোট ছোট পাথর গুলো ফেলেছিল বলেই বড় বড় পাথর গুলির পাশাপাশি বসে তা সেতু নির্মাণে সাহায্য করেছিল। যা আদম সেতু বা রাম সেতু নামে বর্ণিত।

কাঠবেড়ালীর পিঠের তিনটি দাগের রহস্য: 

কিন্তু  অনেকেই জানেন না কাঠবেড়ালির পিঠের  ওই তিনটি দাগের পিছনে কোন রহস্য রয়েছে? পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে রাম সেতু নির্মাণে হনুমানের বানর সেনার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল কাঠবেড়ালিরও। তাই এই কাঠবিড়ালিকে আশীর্বাদ করার জন্য তাকে নিজের হাতে তুলে তার পিঠে তিনটি আঙ্গুল স্পর্শ করে আশীর্বাদ করেছিলেন রামচন্দ্র। কথিত আছে ভগবান রামচন্দ্রের সেই স্পর্শেই  কাঠবেড়ালীর পিঠে তিনটি দাগের সৃষ্টি হয়েছে। যা ভগবান রামচন্দ্রের আশীর্বাদ স্বরূপ থেকে গিয়েছে আজীবন।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *