বলিউড ৭২ টা গান

সিনেমা মানেই গান থাকা মাস্ট। গান ছাড়া এক কথায় অসম্পূর্ণ যে কোন সিনেমা। যদিও আগের তুলনায় এখনকার সিনেমায় গানের সংখ্যা অনেকটাই কম। কিন্তু জানলে অবাক হবেন বলিউডে এমনও একটা সিনেমা রয়েছে যা গানের সংখ্যার বিচারে এক অভাবনীয় রেকর্ড তৈরী করেছে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে। আর এখনকার বেশিরভাগ সিনেমায় থাকে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা গান। আর এই সব গান তৈরী করতেই খরচ হয়ে যায় লাখ লাখ টাকা। যার মধ্যে অধিকাংশ গানই আবার সুপার ফ্লপ।

সালটা ছিল ১৯৩২, সেবছর প্রেক্ষাগৃহে ‘ইন্দ্রসভা’ নামে একটি হিন্দি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। যার মধ্যে ছিল মোট ৭২টি গান। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই সত্যি। তাই গানের সংখ্যার বিচারে এখনও পর্যন্ত এই ছবিকে টেক্কা দিতে পারেনি অন্য কোনও ভারতীয় ছবি। সাড়ে তিন ঘণ্টার পৌরাণিক কাহিনী নির্ভর এই সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল ‘ইন্দ্রসভা’ নামেরই একটি নাটকের উপর ভিত্তি করে। আসলে এই ছবির বিষয় বস্তুর প্রয়োজনেই ৭২টি গান রাখা সম্ভব হয়েছিল।

দেবরাজ ইন্দ্রের সভাগৃহকে কেন্দ্র করেই নির্মাণ করা হয়েছিল  এই সিনেমা।এ ছবিতে অভিনয় করেছেন নিসার, জেহরানা কাজ্জান, আব্দুল রেহমান কাবুলি প্রমুখ। সিনে  বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ছবিতে মুখ্যচরিত্র এবং পার্শ্বচরিত্র তো বটেই তাছাড়াও বাকি ছোটোখাটো চরিত্রদের জন্যও ছিল আলাদা আলাদা ‘এন্ট্রি সং’ বা বিশেষ ধরনের গান। ‘ইন্দ্রসভা’ ছবিতে ৭২ টি গানের মধ্যে, ৩১টি গজল, ৯টি ঠুমরী, ৪টি হোলি, ১৫টি গান, ২টি চৌবোলা এবং ১১টি ছান্দ! সে সময়  এই ছবিতে গান গেয়েছিলেন একাধিক সংগীত শিল্পীরা।

তাই সর্বাধিক গান বিশিষ্ট ছবি তো বটেই সেইসাথে এটি ভারতের দ্বিতীয় ‘সাউন্ড ফিল্ম’। তার আগে ১৯৩১ সালে প্রথম মুক্তি পায়  ভারতের প্রথম ‘সাউন্ড ফিল্ম’ ‘আলম আরা’। এই সিনেমা মুক্তির পরের বছরেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ইন্দ্রসভা’। তবে তার আগেও ১৯২৫ সালে এই ছবিটি প্রথম বার বড়পর্দায় দেখানো হয়েছিল। কিন্তু তখন সম্পূর্ণ ছবিটিই ছিল নির্বাক অর্থাৎ ‘সাইলেন্ট ফিল্ম’।

তাই সবদিক দিয়েই ইন্দ্রসভা ভারতীয় সিনেমার এক অমূল্য রত্ন। ভবিষ্যতেও এই সিনেমার গানের রেকর্ড কেউ ছুঁতে পারবে না। এই  ছবিটি যে নাটকের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছিল, তা আসলে আঘা হাসান আমানত রচিত উর্দু ভাষার নাটক। ১৮৮০ সালে এই নাটকটিই জার্মান ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *