হার্ট অ্যাটাক

কথায় বলে মৃত্যু কখনো বলে আসেনা! এখনকারদিনে বেশিরভাগ মানুষের অকালমৃত্যুর অন্যতম কারণ হল হার্ট অ্যাটাক। এই নীরব ঘাতকের কবলে পড়লে  বাঁচার আশা অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে হার হার্ট অ্যাটাক হলে আগে থেকে বোঝা যায় না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন হঠাৎ করে নয় মানবদেহে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি একমাস আগে থেকেই বোঝা যায়। তাই আগে থেকে সাবধান হলেই রোখা যায় এই মারণ রোগ। এই কারণেই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে তা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

হার্ট অ্যাটাক কখন হয়?

হৃদপিন্ডের কোন শিরায় রক্ত জমাট বাঁধলে হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহে বাঁধার সৃষ্টি হয়। তখনই হার্ট অ্যাটাক হয়, আর তাতেই জীবন শেষ। বয়স, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, উচ্চ কোলেস্টোরলের সমস্যা, অতিরিক্ত মেদ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান, মানসিক চাপ—মূলত এই কারণেই অল্প বয়স থেকেই ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। তবে আগেই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ বুঝতে পারলে  অকাল মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। আসুন দেখে নেওয়া যাক হার্ট অ্যাটাকের এক মাস  আগে শরীরে কোন কোন লক্ষণ দেখা যায়-

শ্বাসকষ্ট: শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট কিংবা দমবন্ধ লাগলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে। তাই এই ধরণের সমস্যা হলে অবহেলা না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হৃদযন্ত্রে সমস্যা হলে ফুসফুসে রক্ত চলাচল কমে যায়। তখনই শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়।

ঘাম: কোনো কারণ ছাড়াই ঘাম হচ্ছে? একটুতেই হাঁপিয়ে উঠছেন? তা হলে দেরি না করে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যখন হার্ট ব্লক হয় তখন রক্ত সঞ্চালনে হৃদপিণ্ডের অতিরিক্ত পরিশ্রম হয়। যার ফলে ঘামের সৃষ্টি হয়।

বুক ব্যথা: হঠাৎ করেই বুক, বাহু, পিঠ এবং কাঁধে ব্যাথা অস্বাভাবিক ব্যাথা অনুভব করলেও তা হার্ট অ্যাটাকের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। এই সময় শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে। এখত্রেও দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অস্বাভাবিক শারীরিক দুর্বলতা: রক্তপ্রবাহ কমে গেলে শরীর খুব দুর্বল হয়ে যায়, সারাক্ষণ ক্লান্তিভাব গ্রাস করে। এই ক্লান্তি তথা দূর্বলতাই কিন্তু অ্যাটাকের অশনি সংকেত ৷ রক্তপ্রবাহ কমে গেলে আর্টারিগুলো সরু হয়ে যাওয়ার ফলে পেশি দূর্বল হয়ে পড়ে৷ তাই এক্ষেত্রেও অবিলম্বে ডাক্তার দেখান।

ঝিমুনি: ঝিমুনিকেও স্বাভাবিক ক্লান্তির কারণ ভাবা ঠিক হবে না। দেহে রক্তের প্রবাহ কমে গেলে ঝিমুনিও দেখা দেয়। হার্ট অ্যাটাকের বেশ কিছুদিন আগেই এই লক্ষণ দেখা দেয়।

ঠান্ডা বা ফ্লু: হার্ট অ্যাটাক হওয়ার এক মাস আগে অনেককেই জ্বর কিংবা ঠান্ডা লাগে ভুগতে দেখা যায়।

বমি, বদহজম, তলপেটে ব্যথা: বমিভাব, বদহজম, বুক জ্বালা কিংবা তলপেটে ব্যথাও অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। তাই অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

হার্ট অ্যাটাক হলে কি করা দরকার?

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে শরীরে রক্ত ​​​​প্রবাহ সচল রাখতে বা পুনরুদ্ধার করতে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) শুরু করুন। বিশেষজ্ঞদের দাবি  বলছেন, হার্ট অ্যাটাকের প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যে যদি সিপিআর করা যায়  তবে তা বাঁচার  সম্ভাবনা দ্বিগুণ করে দিতে পারে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *