দীপাবলি

কিছুদিন আগেই  মা দুর্গা কৈলাসে পাড়ি দেওয়ায় বেশ মন খারাপ ছিল মর্ত্য বাসীর। কিন্তু সেই রেশ কাটিয়ে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর পর সকলেই এখন মেতে উঠেছেন কালীপুজো আর দীপাবলি অর্থাৎ আলোর উৎসব নিয়ে। প্রত্যেক বছর দীপাবলীর অমাবস্যাকে আলোয় ঢেকে দেয় প্রদীপের মৃদু আলো।  ধনতেরাসের দিন থেকে দীপাবলি পর্যন্ত প্রত্যেকদিন সন্ধ্যায়  বাড়ির ভিতরে এবং বাইরে প্রদীপ জালানোর প্রথা প্রচলিত রয়েছে বহু যুগ ধরে। এবছর দীপাবলি পড়েছে ১২ ই অক্টোবর অর্থাৎ রবিবার। কিন্তু দীপাবলি নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে কৌতুহল। বিশেষ করে দীপাবলীর সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর সঠিক কারণ কি তা  জানেন না অনেকেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক দীপাবলীর সাথে যুক্ত হিন্দু ধর্মের পৌরাণিক কাহিনীগুলি সম্পর্কে।

রামায়ণের কাহিনী অনুসারে : উত্তর ভারতের প্রচলিত আখ্যান অনুযায়ী ১৪ বছরের বনবাস শেষে রামচন্দ্র স্ত্রী সীতা আর ভাই লক্ষণকে নিয়ে দীপাবলির রাতে অযোধ্যায় ফিরে এসেছিলেন। সেই রাতে সমস্ত অযোধ্যা নগরী প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁদের স্বাগত জানিয়ে ছিলেন। সেই থেকেই দীপাবলিতে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা প্রচলিত রয়েছে ।

মহাভারতের কাহিনী অনুসারে: ভূদেবী ও বরাহর পুত্র নরকাসুর স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করে ১৬,০০০ নারীকে বন্দী বানিয়ে রেখেছিলেন। তাঁদের উদ্ধার করতে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরকে বধ করেছিলেন। আর বন্দি নারীদের বিয়ে করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই দিনটিও ছিল দীপাবলি। অত্যাচারী  নরকাসুর  মৃত্যুর আগে কৃষ্ণের কাছে বর চেয়েছিলেন তার মৃত্যুদিনটি যাতে ধুমধাম করে পালন করা হয়। তাই সেই থেকেই এই ভাবে দীপাবলি পালন করা হয়।

এছাড়াও প্রচলিত রয়েছে মহাভারতের আরও একটি কাহিনী। এই কাহিনী অনুযায়ী পঞ্চ পাণ্ডপ আর তাঁদের মা কুন্তী ১২ বছর বনবাস আর ১ বছরের অজ্ঞাতবাস শেষ করে যেদিন হস্তিনাপুরে ফিরে এসেছিলেন সেই দিনটিও ছিল দীপাবলি। যার সেদিন তাঁদেরও প্রদীপের আলো জ্বালিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছিল। তাই দীপাবলীতেই সারা দেশে ধুমধাম করে আলো উৎসব পালন করা হয়।

অন্যদিকে, জৈন ধর্ম মতে এই দীপাবলীর দিনেই নির্বাণ লাভ করেছিলেন মহাবীর।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *