দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজোর পর এবার বাঙালি মেতে উঠেছে কালীপুজো নিয়ে। মা কালীর পুজো মানেই নারী শক্তির আরাধনা। কিন্তু জানলে অবাক হবেন খোদ কলকাতার বুকেই রয়েছে এমন এক কালী মন্দির, যার গর্ভ গৃহে প্রবেশ করার অনুমতি নেই মেয়েদেরই। আর এই নিয়ম হঠাৎ করে তৈরি হয়নি, প্রচলিত রয়েছে দীর্ঘ প্রায় ৪ দশক ধরে। তাই চেতলা হাট রোডের কালীপুজোয় মেয়েদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শহরবাসীর ক্ষোভ কিংবা অসন্তোষ নতুন বিষয় নয়।
কথিত আছে আদ্যশক্তি মা কালীর এই মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত। এই মন্দিরে তান্ত্রিক মতে পুজো হয়, এই কারণেই নাকি এখানে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল শিক্ষা সংস্কৃতির পীঠস্থান বলে পরিচিত কলকাতার মতো শহরে কিনা শেষমেশ কেরলের শবরীমালার ছায়া?
জানলে অবাক হবেন আজকের যুগে দাঁড়িয়েও এই মন্দিরের পুজোর কাজ করা তো দূরের কথা মায়ের বিগ্রহ দর্শন পর্যন্ত করার অনুমতি নেই মেয়েদের। কারণ, মেয়েরা নাকি ‘অশুচি’।
যদিও শাস্ত্রে কোথাও উল্লেখ নেই কালীপুজোর মণ্ডপে মেয়েদের নিষিদ্ধ। এক পন্ডিতের দাবি ‘মহিলাদের বীজমন্ত্র উচ্চারণ করার অধিকার নেই। তবে মন্দিরে বা মণ্ডপে তাদের ওপর কোনও বিধি-নিষেধ নেই। তবে প্রশ্ন উঠছে আজকের যুগে দাঁড়িয়ে মা কালীর মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে এমন নারী-পুরুষ ভেদাভেদের যুক্তি এল কোথা থেকে? অনেকেই অবাক হয়েছেন তান্ত্রিক মতে পুজোর এই অদ্ভুত নিয়ম শুনে।
তবে চেতলার এই রীতি এল কী ভাবে?
প্রায় ৪ দশক আগে তারাপীঠের তান্ত্রিকেরা এসে এই পুজো শুরু করেছিলেন। পূর্বপুরুষদের চালু করা নিয়ম মেনে আজও পুজো করে যান তারাপীঠের তান্ত্রিকরা। এখনও এখানে মূলত মা কালীর পাঁচটি রূপের পুজো হয়। পুরোনো রীতি মেনে হয় পাঁঠা বলি। কথিত আছে পুজো শুরুর সময়েই তান্ত্রিকরা নির্দেশ দিয়েছিলেন এই পুজোয় মেয়েরা ঢুকবেন না। তাই অকল্যাণের ভয় আজও কাটিয়ে উঠতে পারেননি স্থানীয় মহিলারা। তাই নিয়ম ভাঙলে ক্ষতি হওয়ার সবচেয়ে বেশী ভয় পান মেয়েরাই।
Leave a Reply