রতন টাটার মতো মানুষ হলেন আমাদের দেশের মূল্যবান সম্পদ। দেশের তথা গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি আদর্শ। তাঁর ছত্রছায়ায় বাঁচেন অসংখ্য মানুষ। ১৯৯০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত তিলে তিলে গড়া বিশাল সম্পত্তি মালিক তিনি। অথচ কোটিপতি হয়েও তাঁর মাসিক উপার্জন দেশের যে কোন ছোট ব্যবসায়িক থেকেও কম। জানলে অবাক হবেন দেশের ১০০ জন ধনীদের তালিকাতেও নেই বিশ্ব বিখ্যাত রতন টাটার নাম। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?
রতন টাটার বুদ্ধির প্রশংসা করেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি এলন মাস্কও। বিশ্ব বিখ্যাত এই শিল্পপতির বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ ৩৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু রতন টাটার ব্যক্তিগত উপার্জন সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন আপনিও! বেতনের বিচারে মুকেশ আম্বানি কিম্বা গৌতম আদানীরও ধারে কাছে তো নেই বর্ষিয়ানী এই শিল্পপতি। ২০২১ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী রতন টাটার আগে রয়েছেন দেশের ৪৩২ জন ধনকুবের। হ্যাঁ,সংখ্যাটা অবাক করার মতোই। এতদিনের পুরনো সংস্থার চেয়ারম্যান কিভাবে সম্পদের তালিকায় এতটা পিছিয়ে পড়তে পারেন। এই প্রশ্নটাই ভাবায় সবাইকে।
আসলে টাটা সন্সের ইকুইটির ৬৬ %-ই চলে যায় টাটার চেরিটেবল ট্রাস্ট এর কাছে। তাই রতন টাটার নিজের হাতে খুব অল্প সংখ্যক সংস্থার মালিকানা রয়েছে। এই টাকা থেকেই বেতন দেওয়া হয় সকল কর্মচারীদের। এছাড়া দাতা রতন টাটা নিজেও নানারকম সেবামূলক কাজের সাথে যুক্ত থাকেন। তাই তাঁর দান-ধ্যানের স্বভাবও অজানা নয় কারও কাছে। ভারতীয়দের কাছে ছাড়াও রতন টাটার আর্থিক অনুদান পাঠানো হয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায়। তাই মানুষের সেবায় উৎসর্গ করে নিজের সম্পত্তি খুব একটা বানিয়ে তুলতে পারেননি তিনি।
২০১৭ সালেই পুরোপুরি অবসর নিয়েছেন রতন টাটা। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী খবর টাটা গ্রুপের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন প্রতিদিন ১৮ হাজার ৭৩৯ টাকা আয় করেন। যা প্রতি ঘন্টার হিসাবে হয় ৭৮০ টাকা। অর্থাৎ রতন টাটার মাসিক বেতন হল ৫.৭ লক্ষ টাকা। যা ভারতের যেকোনো ছোট ব্যবসায়ী থেকে কম।
তাই মোটা টাকা উপার্জন করেও তা অধিকাংশ মানুষের সাহায্যে দান করায় ধ্বনিতম ব্যক্তিদের তালিকায় নাম খুঁজে পাওয়া যায় না রতন টাটার। তাই বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন রতন টাটা যদি গরিবদের জন্য টাটা ট্রাস্টে অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দেন তাহলে অর্থের দিক দিয়ে তিনি বিল গেটসকেও পিছনে ফেলে দেবেন। তবে টাকা-পয়সার দিক দিয়ে তিনি ধনীদের তালিকায় না থাকলেও মানুষ হিসাবে তার থেকে ধনী ব্যক্তি এই ভূ-ভারতে নেই।
Leave a Reply