মহাভারত যোদ্ধাদের বয়স

একজন মানুষ সর্বোচ্চ ১০০ বছর বাঁচতে পারেন। পুরান মতে ধরাধাম থেকে পাপ দূর করার উদ্দেশ্যে ভগবান বিষ্ণু  বিভিন্ন অবতারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল শ্রীকৃষ্ণ। ভাগবত গীতা অনুযায়ী কংস মামার অত্যাচার থেকে মথুরাবাসীকে বাঁচাতে ধরাধামে আবির্ভূত হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই বিশেষ তিথিতে গোটা দেশে পালিত হয় জন্মাষ্টমী।

সকলেই জানতে চান কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের এই নেপথ্য নায়কের জীবনপঞ্জী কী,আয়ুষ্কালই বা কত?  তা সামনে আসলেও রয়েছে বহু বিতর্ক। জ্যোতিষ গণনা বলছে, ১২৫ বছর বেঁচেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। তাঁর জন্ম ৩২২৭ খ্রীস্টপূর্বাব্দে, মৃত্যু ৩১০২ খ্রীস্টপূর্বাব্দে।

হিন্দু ধর্মের প্রাচীন মহাকাব্য মহাভারত। যা আজও প্রাসঙ্গিক। মহাভারতের ধর্ম এবং অধর্মের লড়াইয়ে একে অপরের প্রতিপক্ষ ছিল জ্ঞাতি-ভাই আর আত্মীয়-স্বজনরা। কৌরব পান্ডবদের এই যুদ্ধে পান্ডবদের পক্ষে ছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। ১৮ দিন ব্যাপী চলতে থাকা এই মহাভারতের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন অনেক রথি মহারথীরাও।  তাঁদের বয়স জানতে কৌতূহলী অনেকেই। তবে মহাভারতের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মহাযোদ্ধাদের বয়স সম্পর্কে রয়েছে একাধিক মত পার্থক্য।

আসলে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মহাযোদ্ধাদের বয়স সম্পর্কে মতপার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। জানা যায় ভগবান বিষ্ণু ধরাধাম থেকে পাপ দূর করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অবতার রূপ গ্রহণ করেছিলেন। তার মধ্যে একটি অবতার ছিল শ্রীকৃষ্ণ। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে ব্রহ্মা শ্রীকৃষ্ণকে অনুরোধ করেছিলেন ১০৪ বছর ২মাসে এই অবতার শেষ করার জন্য। কিন্তু জানা যায় কৃষ্ণের অবতার রূপ আরো দু’বছর চার মাস টিকে ছিল। তাই কৃষ্ণ অবতারের মোট সময়কাল ১০৬ বছর ৬ মাস। গান্ধারীর অভিশাপ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শ্রীকৃষ্ণের বয়স ছিল (১০৬-৩৬)= ৭০ বছর।

মৎস্যপুরাণ মতে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় শ্রীকৃষ্ণের বয়স ছিল ৮৯ বছর। অন্যদিকে বিষ্ণুপুরাণ মতে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পরেও ৩৬ বছর দ্বারকায় ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। মহাভারতে পাণ্ডবদের বয়সের তথ্য অনুযায়ী জানা যায় জ্যেষ্ঠ পান্ডব যুধিষ্ঠির এর জন্মের ১ বছর ১৯ দিন পর জন্ম হয়  ভীমের। আর ভীমের জন্মের ১ বছর ৪ মাস জন্মগ্রহণ করেন অর্জুন। আর অর্জুনের জন্মের ১ বছর পর জমজ নকুল ও সহদেবের জন্ম হয়।

মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুযায়ী জানা যায় শ্রীকৃষ্ণের থেকে ছয় মাসের ছোট ছিলেন অর্জুন। অর্থাৎ যুদ্ধের সময় পঞ্চপাণ্ডব এর বয়স কত ছিল তা পুরাণ অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা যায়। জানা যায় যুদ্ধের সময় যুধিষ্ঠির ৭২ বছর, ভীম ৭১ বছর, অর্জুন ৭০ বছর ও নকুল সহদেব ৬৯ বছরের ছিলেন। যুদ্ধ শেষে কিছুদিন সুখে রাজত্ব করার পর পঞ্চ পাণ্ডব সংসার জীবন ত্যাগ করে হিমালয়ের পথে যাত্রা করেছিলেন।

বিভিন্ন হিন্দু গ্রন্থ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী যুধিষ্ঠিরের বয়স ছিল ১০৮ বছর, ভীম ১০৭ বছর, অর্জুন ১০৬ বছর এবং জমজ ভাতৃদ্বয় বয়স ছিল ১০৫ বছর বয়স।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *