শাহরুখ খান নামটাই যথেষ্ট! বলিউডের এই বেতাজ বাদশাকে এক ডাকে চেনে গোটা দুনিয়া। সদ্য ৫৮-তে পা দিয়েছেন কিং খান। এই বয়সেও বক্স অফিসে কাঁপিয়ে ব্যবসা করছেন শাহরুখ করছেন বলিউডের জওয়ান। তাঁকে এক ঝলক দেখার জন্য মান্নাতের বাইরে ভীড় করে থাকেন অসংখ্য অনুরাগী। শাহরুখও চুটিয়ে উপভোগ করেন নিজের এই স্টার ডাম। শাহরুখের সাথে বরাবরই লাইম লাইটে থাকেন তার স্ত্রী গৌরী খান, ছেলে আরিয়ান খান এবং মেয়ে সুহানা খান। চর্চায় থাকে ছোট ছেলে আব্রামও।
কিন্তু শাহরুখ খানের পরিবারে রয়েছেন আরও একজন সদস্য। তাঁর সম্পর্কে খুব একটা খোঁজখবর রাখেন না কেউই। তিনি হলেন শাহরুখ খানের দিদি শেহনাজ লালারুখ খান। এতবড় একজন সুপারস্টারের দিদি হয়েও কেন নিজেকে সারাক্ষণ ক্যামেরার আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন শেহনাজ?
শাহরুখ বরাবরই ফ্যামিলি ম্যান। তাই তিনি অনুরাগীদের কাছেও বরাবরই নিজের পরিবার সম্পর্কে কথা বলতে ভালোবাসেন। তবে তাঁর দিদি, লালারুখ খান সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। শাহরুখ খানের সঙ্গেই মান্নাতে থাকেন তাঁর দিদি। তাঁর তারকাসুলভ কোন ইমেজও নেই। তবে ছোট থেকেই পড়াশোনায় তুখোড় ছিলেন শাহরুখের দিদি। মাস্টার্স এবং এলএলবি ডিগ্রীও রয়েছে তাঁর।
খুব অল্প বয়সেই শাহরুখ এবং তাঁর দিদি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিলেন। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল শাহরুখের বাবা। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। তার আগে মা-বাবা এবং দিদিকে নিয়ে তাদের চারজনের সুখী পরিবার ছিল। একবার এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ জানিয়েছিলেন বাবার মৃত্যু শোকে অসুস্থ পড়েছিলেন তাঁর দিদি।আচমকা বাবার মৃত্যু তাঁদের দুই ভাই বোনের কাছেই ছিল অনেক বড় আঘাত।
নিজেকে সারাক্ষণ কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রেখে শাহরুখ সেই আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারলেও তাঁর দিদি বাবার মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। দিদির এই মানসিক অবস্থার কথা জানিয়ে একবার এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেছিলেন ‘যে যার মত করে শোক সামলান। আমার বাবা যখন মারা গেল তখন আমার দিদি কাঁদেনি। একটাও কথা বলেনি। বাবার নিথর শরীরটা দেখে আমার দিদি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে গিয়েছিল। তখনই মেঝেতে পড়ে গিয়ে ওর মাথায় বিরাট আঘাত লেগেছিল।’
এই ভাবেই টানা দু’বছর তিনি শুধু শূন্যের দিকে চেয়ে থাকতেন। কথা বলা বা কোন কিছুর প্রতিক্রিয়া দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বাবার মৃত্যুর ১০ বছর পর মারা গিয়েছিলেন শাহরুখের মা’ও। অভিনেতার কথায় ‘পুরোপুরি অনাথ হলাম আমরা। এতে আরও ভেঙে গিয়েছিল দিদি’। এরপর ধীরে ধীরে অবস্থা আরো খারাপ হতে শুরু করেছিল তাঁর। একসময় চিকিৎসরাও হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন।
তখন ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’র শুটিং করছিলেন শাহরুখ। তখন তিনি দিদিকে চিকিৎসা করানোর জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন সুইজারল্যান্ডে। সেই সময় চিকিৎসকরা আশা ছেড়ে দিলেও হার মানেননি শেহনাজ। বর্তমানে তাঁর বয়স ৬৩ বছর। তার মধ্যে এখনও কিছু সমস্যা থাকলেও এখন তিনি আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ। শাহরুখ খানের কথায় ‘ও ভীষণ ভালো মানুষ। সকলের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করে।’ কম বয়সে নিজের হাসি খুশি পরিবারকে হারিয়ে শোকের মধ্যে চলে গিয়েছিলেন শাহরুখ খানও। কিন্তু তিনি নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রাখেন। কারণ তিনি মনে করেন কাজ না করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন, বাড়বে ডিপ্রেশন।
Leave a Reply