পিরিয়ডস

হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী মেয়েদের ঋতুস্রাবের সময় পুজো করা কিংবা মন্দিরে যাওয়া নিষেধ। কিন্তু এর পিছনে ঠিক কি কারণ রয়েছে তা জানতে চায় সকলেরই। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল কেউ যদি নিষ্ঠার সাথে ভক্তি ভরে পুজো করেন, তাহলে কি সত্যিই পিরিয়ড কোন বাধা হয়? তবে জানলে অবাক হবেন ঋতুস্রাবের সময় মেয়েদের মন্দিরে প্রবেশ না করার বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে কুসংস্কার বলে মনে হলেও আদতে এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ।

কি বলছে বিজ্ঞান ?

আগেকার দিনে পুজো পাঠ করতে অনেক সময় লাগলেও তার জন্য প্রচুর সময় এবং দৈহিক শক্তির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এই অবস্থায় কোন ঋতুমতি মেয়ের পক্ষেই এত কষ্ট করা সম্ভব নয়। তাই মেয়েদের সুবিধার্থে সেই সময় বলা হয়েছিল মেয়েদের ঠাকুর ঘরের ঢোকা নিষেধ। হরমোন পরিবর্তনের কারণে প্রচুর ব্যথা এবং ক্লান্তির জন্য মেয়েদের পক্ষে বেশিক্ষণ মন্ত্র পাঠ করা কষ্টকর। তাই এই সময় তাদের পুজোয় বসতেই নিষেধ নিষেধ করা হতো।

অতীতে মেয়েরা নিজেদের  পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার সুযোগ পেতেন না। তাই তাদের মন্দিরে ঢোকা নিষেধ ছিল। তখনকার দিনের মেয়েদের মাসিকের সময়  থাকার জন্য শুধু একটা আলাদা কক্ষ দেওয়া হতো। কিন্তু কোনো  ধর্মগ্রন্থে বলা নেই পিরিয়ডসের সময় মেয়েদের পুজো করা নিষেধ। তাছাড়া স্বয়ং মা কালী নিজেই ঋতুমতী।  প্রত্যেক বছর অম্বুবাচীর সময় কামাখ্যার মা কালীর দর্শন করতে ভীড় জমান লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী।

কী বলছে পৌরাণিক কাহিনী? 

অসুররা দেবতাদের ওপর আক্রমণ করায় অসুরদের পরাস্ত করার জন্য ব্রহ্মদেবের স্মরণাপন্ন হয়েছিলেন ইন্দ্রদেব। সেসময় ব্রহ্মদেব এক ব্রহ্মজ্ঞানীর সেবা করার পরামর্শ দেন। সেসময় ইন্দ্রদেব এক ব্রহ্মজ্ঞানীর সেবা করে তাকে বহু মূল্যবান উপহার দেন। এই ব্রহ্মজ্ঞানীর মা ছিলেন এক অসুরপত্নী। পরে সত্যি জানতে পেরে ক্রুব্ধ হয়ে ওই ব্রহ্মজ্ঞানীকে হত্যা করেন তিনি।

গুরু হত্যার মহাপাপ থেকে বাঁচতে বিষ্ণু তাকে নিদান দেন যে ইন্দ্র যদি এই পাপ গাছ,জল ও মাটি ও নারীর মধ্যে ভাগ করে দেন তাহলে তিনি মুক্ত হবেন। সেই থেকেই নাকি মেয়েদের প্রতি মাসে ঋতুস্রাব হয়৷

পিরিয়ডসের সময় মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যার মধ্যে- পিরিয়ডের ব্যথা, মেজাজ খিটখিটে থাকা, রাগ, উত্তেজনা, খাবারে অনীহা ইত্যাদি। আসুন জানা যাক ঋতুস্রাবের সময়ে কোন কাজগুলি  করা উচিত নয়।

পিরিয়ডসের সময় বেশি করে জল পান করতে হবে।

মাসিকের সময় বেশী পরিমাণে বেশী তরল খাবার খেতে হবে

পিরিয়ডসের সময় উপুর হয়ে শোয়া উচিত নয়।

মাসিকের সময় ভুলেও ভারী কাজ করবেন না।

এই সময় ভারী ব্যায়াম করা উচিত নয়।

এই সময় প্যাড পাল্টানোর ভয়ে অনেকেই প্রস্রাব চেপে রাখেন। এটি খুবই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস।

মাসিকের সময় পজিটিভ কাজ করতে হবে।

মাসিকের সময় ডিম বা চিংড়ি রক্ত অনেকটা গন্ধযুক্ত হয়।

আবার শসা শসার বীজের জন্য পিরিয়ডের ফ্লো কমে যেতে পারে।

এই সময় তেল মশলার খাবার খাওয়া উচিত নয়।

পিরিয়ডের সময় রাত জাগা ঠিক নয়।

পিরিয়ডের সময়উপোস করা উচিত নয়।

মাসিকের সময় ভুলেও গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করা কিংবা সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করা উচিত নয়।

এ সময় যৌনমিলন করা উচিত নয়।

মাসিকের সময় ওয়াক্সিং করা উচিত নয়।

মাসিকের সময় দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়াই ভালো।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *