কন্যাশ্রী প্রকল্প

পশ্চিমবঙ্গের মহিলা অগ্রগতি এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি প্রকল্প হল কন্যাশ্রী প্রকল্প। অর্থের অভাবে পচিমবঙ্গের যে সমস্ত মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে না তাদের জন্য এই কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এছাড়াও এই জনকল্যাণকর প্রকল্পের একাধিক লক্ষ্য রয়েছে।

  • স্কুলছুট মেয়েদের পড়াশোনায় উৎসাহ দেওয়া এবং ১৮ বছরের কম বয়সী নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধ করা।
  • বাল্যবিবাহ রোধ করতে নাবালিকা মেয়েদের খেলাধুলা এবং অন্যান্য সৃজনশীল কাজে যুক্ত করে মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনায় উৎসাহ দেওয়া।
  • টাকার অভাবে যেসব মেয়েরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াবে কন্যাশ্রী প্রকল্প।
  • যেসব মেয়েরা উচ্চশিক্ষার খরচ চালাতে পারে না, তাদের পড়াশুনোয় সাহায্য করবে কন্যাশ্রী প্রকল্প।

কারা কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার যোগ্যতা?

পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মেয়েরা এই এককালীন স্কলারশিপ পাবেন।

এই ভাতা পাওয়ার জন্য ১৮ বছরের পর উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াশোনা করতে হবে।

যারা পড়াশোনায় আগ্রহী আর রোজ স্কুলে যায়, তাদের নজরে রাখবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

বার্ষিক স্কলারশিপ

এই বিশেষ বার্ষিক স্কলারশিপ পড়াশুনায় আগ্রহী সেই সমস্ত মেয়েরাই পাবেন যারা টাকার জন্য পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়েছেন। আর তাদের বয়স হতে হবে ১৩ থেকে ১৭ বছর ১১ মাসের মধ্যে। ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে রুখতেই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। এরফলে মেয়েদের স্কুলের শিক্ষা সম্পূর্ণ করার ওপর জোর দেওয়া হবে।

এককালীন ভাতা

এই K2 স্কীমের আওতায়, কেবলমাত্র ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েরাই উচ্চশিক্ষার জন্য এককালীন ভাতা পাবেন।

আবেদনের যোগ্যতা

কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় মেয়েদের জন্য বিভিন্ন বয়সভিত্তিক স্কলারশিপ রয়েছে।

বার্ষিক স্কলারশিপ

এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবিবাহিত হতে হবে।

পড়ুয়ার বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছর ১১ মাসের  মধ্যে হতে হবে।

১৮ বছর বয়সী মেয়েরা বার্ষিক স্কলারশিপের পরিবর্তে K2 প্রকল্পের এককালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

নাবালিকাকে অবশ্যই ক্লাস ৮ থেকে ক্লাস ১২ -এর মধ্যে যেকোনো স্তরে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।

সেটা অবশ্যই কোনো  সরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সমতুল্য রেজিস্ট্রিকৃত কেন্দ্র হতে হবে।

পারিবারিক আয়ের সীমাবদ্ধতা খতিয়ে দেখা হবে।

যেসব ছাত্রী ইতিমধ্যেই এই ভাতা পাচ্ছেন এবং পুনরায় রিন্যুয়াল করেছেন  তাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এককালীন ভাতা

এক্ষেত্রেও পড়ুয়ার পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া বাধ্যতামূলক।

১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ছাত্রীকে অবিবাহিত হতে হবে।

যারা পড়াশুনায় আগ্রহী আর রোজ স্কুলে যান আর যাঁদের পড়াশুনো এবং খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ আহে তাদের নজরে রাখা হবে

কত টাকা দেওয়া হবে?

বার্ষিক স্কলারশিপে ৭৫০ টাকা বার্ষিক (প্রতি বছর প্রযোজ্য ১৭ বছর ১১ মাস পর্যন্ত)।

এককালীন ভাতা -২৫০০০ টাকা।

আবেদন পদ্ধতি 

ছাত্রীর নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা চাই চাই। বাবা মায়ের হস্তক্ষেপেও এই আবেদন করা যায়।

বার্ষিক এবং এককালীন স্কলারশিপের আবেদন পদ্ধতি

নিজের শিক্ষাকেন্দ্র থেকে স্কলারশিপ ফর্ম তুলতে হবে।

সমস্ত তথ্য দিয়ে ফর্ম ফিল আপ করতে হবে–

১) ব্যক্তিগত তথ্য, ২) ঠিকানা, ৩) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা।

ফর্ম ফিল আপ করার পর, পড়ুয়া নিজে এবং তাঁর অভিভাবক সই করবেন। নিজের শিক্ষাগত  যোগ্যতার সমস্ত তথ্যাপ্রমাণ দিয়ে  সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি সহ আবেদন করতে হবে।

এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের  অনুমতি নিতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানের স্ট্যাম্প থাকা বাধ্যতামূলক।

এরপর অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ এবং অ্যাপ্লিকেশন নম্বর যত্ন করে নিজের কাছে রাখতে হবে।

সম্পুর্ণ অ্যাপ্লিকেশন পদ্ধতিটি সম্পন্ন হওয়ার পর, ছাত্রীর কন্যাশ্রীর স্কলারশিপের সমস্ত তথ্য সরকারের অফিসিয়াল কন্যাশ্রী ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে।

কন্যাশ্রী পোর্টাল অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: https://www.wbkanyashree.gov.in/

বার্ষিক ভাতার জন্য কি কি নথি লাগবে

ব্যাঙ্ক পাসবুকের  জেরক্স কপি,অবিবাহিত সার্টিফিকেট, স্কুলে ভর্তি হওয়ার প্রমাণ,পারিবারিক বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র,বিশেষভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের নির্দিষ্ট  সার্টিফিকেট থাকা আবশ্যক।

কীভাবে ট্র্যাক করবেন?

কন্যাশ্রীর  অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে মেইন পেজ থেকে ট্র্যাক অ্যাপ্লিকেশন অপশনে ক্লিক করতে হবে।

এরপর ড্রপ ডাউন  মেনু থেকে বছর এবং স্কিমের টাইপ সিলেক্ট করতে হবে। পরপর ডেথ অফ বার্থ,অ্যাপ্লিকেশন আইডি,এবং ক্যাপচা ইমেজ দিতে হবে। তারপর সাবমিট করলেই পড়ুয়ারা নিজের অ্যাপ্লিকেশন প্রসেস ট্রাক করতে পারবেন।

কন্যাশ্রী প্রকল্প রিন্যুয়াল পদ্ধতি

যারা কন্যাশ্রী প্রকল্প রিন্যুয়াল করতে চায়, তাদের নতুন আবেদনকারীর মতোই একই পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে। তবে এর জন্য ইনকাম সার্টিফিকেট লাগবে না।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *