আমাদের দেশে বেকারত্বের হার গত দু বছরের মধ্যে অক্টোবরেই পৌঁছে গিয়েছে সর্বোচ্চ স্তরে। এমনটাই দাবি করছে সিএমআইআই-(CMIE) এর রিপোর্ট। ২০২১ সালের মে মাসের পর গত দু বছরে এক লাফে ১০ শতাংশের গণ্ডি ছাড়িয়েছে আমাদের দেশের বেকারত্বের হার। রিপোর্ট বলছে এর জন্য দায়ী মূলত গ্রামাঞ্চলের ঊর্ধ্বমুখী বেকারত্ব। সংস্থার দাবি গ্রামাঞ্চলের বেকারত্ব প্রায় ১১ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছে। সংখ্যাটা শহরে একটু কমলেও, তা ৮ শতাংশের বেশি।
অথচ চলতি বছরের গোড়ার দিকেও দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৭.১৪ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি থেকেই তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারিতে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৭.৪৫ শতাংশ। মার্চে তা বেড়ে হয় ৭.৮ শতাংশ। এপ্রিলে সেই হার হয় ৮.১১ শতাংশ। সংখ্যাটা মে মাসে কিছুটা কমে ৭.৭ শতাংশ হয়। তবে জুনে তা বেড়ে হয় ৮.১৬ শতাংশ। এইভাবেই বাড়তে বাড়তে সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমলেও অক্টোবারে একলাফে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০.০৫ শতাংশ।
তবে গ্রামাঞ্চলের বর্ধিত বেকারত্ব প্রসঙ্গে পটনা আইআইটি-র অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের দাবি, বিগত পাঁচবছরের মধ্যে সবথেকে কম বৃষ্টির কারণে গ্রামাঞ্চলে ধাক্কা খেয়েছে কৃষিকাজ। যা কাজ কেড়েছে বহু মানুষের। অন্যান্য জায়গাতেও চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট কর্মসংস্থান হচ্ছে না। তবে কল-কারখানায় উৎপাদন বাড়ায় শহরে কাজ কিছুটা বেড়েছে। যদিও খরচের রাশ টানতে বহু সংস্থা কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছে। তাই শহরেও বেকারত্বের হারও অনেকটা ওপরের দিকে।
এসবের মধ্যেই ভাবাচ্ছে কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা। রিপোর্ট বলছে উৎসবের মরশুম শেষ হলেই অনেক সংস্থা কর্মী ছাঁটাই করতে পারে। দেশের আর্থিক কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকায় সরকার অর্থনীতির উন্নতি তুলে ধরে সাফল্য দাবি করছে। ভারতের মাথায় উঠছে বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি হওয়ার শিরোপা। কিন্তু এসবের ছাপ পড়ছে না কাজের বাজারে। উল্টে অনিশ্চয়তা আর মূল্যবৃদ্ধির বাজারে খরচ কমাতে বহু সংস্থা এখন নিয়োগ বন্ধ রেখেছে।
আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে দেশের বর্ধিত এই বেকারত্বের জন্য বিরোধীরা এবার কাঠগড়ায় তুলছে কেন্দ্র সরকারকে। বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির মসনদে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ন’বছর বাদে আরও একটি লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের বেকারত্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০%।
Leave a Reply