শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথেই আসছে একের পর এক উৎসবের মরশুম। দুর্গাপুজো মিটতেই এবার সবাই দিন গুণছেন কালীপুজোর। আর কালীপুজো মানেই আলো আর বাজির উৎসব। যার ফলে অস্বাভাবিক মাত্রায় বাড়তে থাকে শব্দ দূষণ কিংবা বায়ু দূষণের সূচক। অত্যাধিক হারে এই পরিবেশ দূষণের ফলে রোগ বাড়ছে মানুষের রোগের হার। কিন্তু দিওয়ালির আগেই পরিবেশ দূষণের এক ভয়ানক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনলো সুইস এয়ার মনিটর IQAir.
অক্টোবরের শেষেই অর্থাৎ ৩০ তারিখে মুম্বাইয়ের বাতাস ছিল অত্যন্ত বিষাক্ত। আগামী কয়েকদিনে অবস্থা আরো সংকটজনক হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। তারপর অবস্থা কিছুটা উন্নত হলেও দূষক সূচক মাত্রা উদ্বেগ জনক থাকবে বলেই জানা যাচ্ছে। তাই এই অবস্থায় মুম্বাইয়ের বাসিন্দাদের প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনোরই পরামর্শ দিয়েছে সুইস এয়ার মনিটর সংস্থা। তবে যাদের নিতান্তই কাজের জন্য প্রতিনিয়ত বাইরে বেরোতে হয়, তাদের জন্য মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাড়িতে এয়ার পিউরিফাই ব্যবহার করার কথাও জানানো হয়েছে।
IQAir-এর তথ্য বলছে, মুম্বই শহরে মাইক্রোগ্রাম ইউনিটে বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা বেড়েছে অতিরিক্ত। সোমবার বিকেল ৪টে ১৫ নাগাদ সেই পরিমাণ ছিল ২১১.৪ ug/m3। যা গোটা দেশের হিসেবে ছিল ১০০।এই ধূলিকণার মধ্যে বেশিরভাগই হল সলিড পার্টিকেল, আর লিকুইড ড্রপলেট। এই ধরণের ধূলিকণা বাতাসে দূষণের মাত্রা দ্রুতহারে বাড়িয়ে তোলে।
গোটা শহরে মোট দেড় কোটি টাকা দামের সাতটি মোবাইল মনিটরিং ভ্যান মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মুম্বাইয়ের প্ল্যান্টগুলির জন্য অ্যান্টি পলিউশন গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। যা না মানলে প্ল্যান্টগুলি অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হবে। শীতের শুরুতেই মুম্বাইয়ের চেম্বুর, অন্ধেরি, নবি মুম্বই, BKC, মালাড, মাঝগাঁও এলাকায় দূষণ সূচক মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে। তবে রিপোর্ট বলছে মুম্বাইয়ের খেরাওয়াদি, BKC, চেম্বুর এবং ওর্লিতে সবচেয়ে বেশী দূষিত বাতাসের অস্তিত্ব মিলেছে।
কলকাতাতেও বায়ুদূষণের মাত্রাতিরিক্ত হরে বেড়ে গিয়েছে। দুর্গাপুজোর মরশুমে বাতাস পরিষ্কার থাকলেও শীতের শুরুতেই দূষণ সূচক মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। দীপাবলিতে যা আরও ভয়ানক হতে পারে।
দূষণের এই রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বের প্রথম পাঁচটি দূষিত শহরের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর এবং চিনের বেজিং। এ ছাড়াও বাংলাদেশের ঢাকা, চিনের উহান, জাপানের জাকার্তা, পাকিস্তানের করাচিও দূষিততম শহরের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইরাক, বাহারিন, কুয়েত, ইজিপ্ট এবং তাজাকিস্তান। তবে বিশ্বের প্রথম ১০টি দূষিততম দেশের তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে ভারত।
ময়লা পোড়ানো, যান্ত্রিক পদ্ধতি জল দিয়ে রাস্তা ধোয়া, কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া এই দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে। এছাড়াও ট্রাফিক জ্যামও এই দূষণের অন্যতম বড় কারণ।
Leave a Reply