এখন অনলাইন ব্যাংকিংয়ের যুগ। তাই এখন বাড়িতে বসেই নেট ব্যাঙ্কিং-এর সাহায্য খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এক অ্যাকাউন্ট
থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো যায়। ডিজিটাল ওয়ালেটের সাহায্যে, NEFT/RTGS, UPI, Google Pay, BHIM এবং এই ধরনের অন্য অ্যাপের মাধ্যমে যে কেউ সহজেই এই পরিষেবার সুবিধা নিতে পারেন। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, সব কিছুরই ভালো-খারাপ রয়েছে ।
তাই অনলাইন ব্যাংকিং-এর যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমনি রয়েছে অনিচ্ছাকৃত কিছু ভুলের সম্ভাবনা। তাড়াহুড়ো করে একটা নম্বর ভুল দিলেই ব্যাস, টাকা চলে যাবে অন্য অ্যাকাউন্টে। তাই অনেক সময় একজনকে টাকা পাঠাতে গিয়ে তা ভুল করেই চলে যায় অন্য কারও অ্যাকাউন্টে। তাই এই ধরনের অনিচ্ছাকৃত কিছু ভুলের সম্ভাবনা এড়াতে আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কারণ এক্ষেত্রে টাকা ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়া বেশ জটিল হতে পারে। পেমেন্ট রিভার্স তথা প্রদান করা অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যাঙ্ক অথবা পেমেন্ট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার পলিসির উপর।
অন্য কারও অ্যাকাউন্টে ভুল করে টাকা পাঠিয়ে ফেললে সেক্ষেত্রে কী করবেন?
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফোন বা ইমেল করে ব্যাঙ্ককে পুরো ঘটনা জানাতে হবে। কোন সময়ে, কোন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছেন, তা উল্লেখ করতে হবে। একই সঙ্গে লেনদেনের সময়, তারিখ ও লেনদেন নম্বরের নোট করে রাখতে হবে। সেইসাথে ট্রান্সাকশনের স্ক্রিনশট নিয়ে রাখুন।
পরে দ্রুত ব্যাঙ্কে গিয়ে বিশদ বিবরণসহ ভুল অ্যাকাউন্টে পাঠানো টাকা ফেরত চেয়ে একটি লিখিত আবেদন জমা করুন। প্রয়োজনে স্ক্রিনশট প্রিন্ট আউট করে জমা দিন।
প্রেরকের তথ্যের ভিত্তিতে, যাঁর অ্যাকাউন্টে ভুল করে টাকা ঢুকেছে, ব্যাঙ্ক সেই ব্যক্তির ব্যাঙ্ককে জানাবে। ব্যাঙ্ক সেই ব্যক্তির থেকে ভুল করে ট্রান্সফার হওয়া টাকা ফেরতের অনুমতি চাইবে।
আরবিআইয়ের(RBI) নির্দেশিকা অনুযায়ী, যদি ভুল করে অন্যের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়, তবে ব্যাঙ্ককে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে।
ব্যাঙ্ককে ভুল অ্যাকাউন্ট থেকে সঠিক অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি যাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, সেই ব্যক্তি রাজি থাকেন তবে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
তবে টাকা একবার অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গেলে তার অনুমতি ছাড়া, সেই টাকা কারোর পক্ষেই তোলা সম্ভব না। তাই এক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকেই অনুরোধ করতে হবে।
তবে ব্যাঙ্ক এক্ষেত্রে আপনাকে জানাতে পারে, কোন অ্যাকাউন্টে কোথায় সেই টাকা গিয়েছে, সেই ব্যাঙ্কই বা কোন জায়গায়। এরপর সেই ব্যাঙ্কে উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে গিয়ে কথা বলা যেতে পারে।
কখন ইউপিআই থেকে প্রদান করা অর্থ ফেরত পাওয়া যায়?
কেউ যদি দুর্ঘটনাবশত ভুল ইউপিআই আইডি অথবা মোবাইল নম্বরে টাকা পাঠায়, তাহলে সেই অর্থ ফেরত পাওয়া যায়।
ভুলবশত টাকা ট্রান্সফারের ঘটনা ঘটলে তা ফেরত পাওয়ার অনুরোধ করা যায়।
লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতারণা হলে সেই টাকা ফেরত পাওয়া যায়।
প্রাপকের অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢুকলে তা ফেরত পাওয়া যায়।
প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্য ট্রান্সাকশন ব্যর্থ হলে সেই টাকা পাওয়া যায়।
সতর্ক করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রতারণামূলক লেনদেনের ক্ষেত্রে BHIM/ NPCI গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে রিপোর্ট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই এই সমস্যা এড়াতে সবসময় তথ্য যাচাই করে সঠিক অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং অপরিচিত মার্চেন্টদের কাছ থেকে সতর্ক থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Leave a Reply