বেজে গিয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের বাদ্যি। এরইমধ্যে ফের একবার শিরোনামে দেশের মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিসংখ্যান। সম্প্রতি লোকসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী, স্মৃতি ইরানি লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন ২০২৩এ ভারতের আনুমানিক মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১৯.৭ কোটি। ২০১১-র আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যার ১৪.২ শতাংশ ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। তাই আগামীদিনে যদি মুসলিম জনসংখ্যা ১৯.৭ কোটি অতিক্রম করে তাহলে তা হবে ২০১১র তুলনায় ২.৫ কোটি বেশী। ২০১১ য় দেশের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১৭. ২ কোটি।
তবে এদিন জনসংখ্যা ছাড়াও স্বাক্ষরতার হার, শৌচাগার, শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ, আবাসন, এবং পানীয় জলের মতো প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কেও বিশদ বিবরণ তুলে ধরেন স্মৃতি ইরানি।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে ২০২৩ এর মাঝেই চিনকে ছাপিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ হবে ভারত। যদিও কিছু বিশ্লেষকের দাবি, বাস্তবে আগেই চিনের জনসংখ্য়াকে ছাড়িয়ে গিয়েছে ভারত।চিনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালের শেষে চিনের জনসংখ্য়া প্রায় আট লাখ কমে হয়েছিল ১৪১ কোটি ২০ লক্ষ। সেখানে ২০২৩ সালেই ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৩৯ কোটি।
তবে স্মৃতি ইরানির পেশ করা তথ্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ও তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের একের পর এক প্রশবাণে বিদ্ধ হয়েছেন মন্ত্রী। বিশেষ করে তৃণমূল সাংসদ মালা রায় লোকসভায় স্মৃতি ইরানির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, পসমন্দা মুসলিমদের জনসংখ্যা কত, তাঁদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কী তথ্য রয়েছে?
এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি স্মৃতি।তবে তিনি জানিয়েছেন, মুসলিমদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৭.৭ শতাংশ। কাজের বাজারে মুসলিমদের অংশগ্রহণের হার ৩৫.১ শতাংশ। কিন্তু এঁদের মধ্যে পসমন্দা মুসলিম কত শতাংশ সে সম্পর্কেও আলাদা কোনও তথ্য দেননি মন্ত্রী।
কারা পসমন্দা মুসলিম?
ভারতের মুসলিম সমাজ তিন ভাগে বিভক্ত। শীর্ষস্থানে আছেন সামাজিক-অর্থনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী আশরাফ। মাঝে রয়েছেন আজলাফ এবং একেবারে নীচুতলায় রয়েছেন আরজাল। এদের মধ্যে আজলাফ এবং আরজালকে একসঙ্গে পসমন্দা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যদিও আজ অবধি বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর কিছু সুযোগ-সুবিধা পসমন্দারা পেলেও, এরাই সমাজে নানা ভাবে পীড়িত এবং অত্যাচারিত। মুসলমান সমাজের উপরের দিকের ১০-১৫ শতাংশ আশরাফরা নিজেদের সুবিধামতো তাদের ব্যবহার করে। তবে বিজেপি নেতৃত্ব বলছে, যাঁরা অতীতে হিন্দু ছিলেন আর পরবর্তীকালে মুসলিম হয়েছেন তাঁরাই পসমন্দা মুসলিম।
Leave a Reply